এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : মিয়ানমারের রাখাইনে বড় অংকের অর্থ বিনিয়োগ করেছে প্রতিদ্বন্দ্বী চীন ও ভারত। মিয়ানমারকে চীন দান করেছে ১০০০ গৃহনির্মাণ সামগ্রি, যার অর্থমূল্য এক কোটি ডলারের বেশি। এসব গৃহনির্মাণ সামগ্রি এমন যে, তা শুধু জোড়া দিলেই বাড়ি তৈরি হয়ে যাবে। এসব দিয়ে যে বাড়িগুলো বানানো হয়েছে সেখানে রাখা হবে ফেরত যাওয়া রোহিঙ্গাদের। অন্যদিকে রাখাইনে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে গত ডিসেম্বরে আগামী ৫ বছরে আড়াই কোটি ডলার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভারত। বর্তমানে তারা সেখানে ১৫০০ গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু রাখাইনে এই যে অবকাঠামো প্রকল্প তা ভারত ও চীনের নিজেদের আভ্যন্তরীণ স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এমনই এক অবস্থার মধ্যে বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে রোহিঙ্গাদের বিতর্কিত প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া।

অনলাইন সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। মেগান তোবিনের লেখা ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, রাখাইনের রাজধানী সিতওয়ে বন্দর পরিচালনার একটি চুক্তিতে গত মাসে স্বাক্ষর করেছে ভারত। এর মধ্য দিয়ে উত্তর দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্যগুলোর গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে। এই বন্দর প্রকল্পের মাত্র ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণে একটি তেল ও গ্যাস পাইপলাইনের কাজ করছে। এটি বঙ্গোপসাগর থেকে কুনমিং পর্যন্ত বিস্তৃত। বিশ্লেষকরা একে চীন ও ভারতের মধ্যে এক আঞ্চলিক লড়াই হিসেবে দেখছেন।
গত শুক্রবার চীন ও মিয়ানমার কাউকপু বন্দর প্রকল্প নিয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এ প্রকল্পটি হলো রাখাইনের গভীর সমুদ্র বন্দর সম্পর্কিত। এর সঙ্গে যুক্ত হবে বিদ্যমান ৭৭০ কিলোমিটার তেল ও গ্যাস পাইপলাইন। এ প্রকল্প নিয়ে আছে বিতর্ক। প্রশ্ন তোলা হচ্ছে কিভাবে এ প্রকল্পের মাধ্যমে মিয়ানমারকে চীনের কাছে ঋণী করে তোলা হচ্ছে তা নিয়ে। এই প্রকল্পটি প্রস্তাবিত চায়না-মিয়ানমার ইকোনমিক করিডোর এবং চীনের আরো বিস্তৃত বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অংশ। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট লিখেছে, আগে থেকেই বানিয়ে রাখা গৃহসামগ্রী পৌঁছে মিয়ানমারে। মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় অঞ্চলের সঙ্গে একটি রেল সংযোগ নিয়ে চুক্তি করে দেশ দুটি। এটা হলো চীনের ইউনান প্রদেশের কুনমিংয়ের সঙ্গে রাখাইনের কাউকপু বন্দরের সংযোগ স্থাপনের একটি নেটওয়ার্কের অংশ। এ ছাড়া চীনের কম ভাড়ার বিমান সংস্থা ‘৯ এ’ এরই মধ্যে গুয়াংঝু-মান্দালয় রুট চালু করেছে।
অন্যদিকে সিতওয়ে বন্দর ছাড়াও ভারত গত মাসে কালাদান মাল্টি-মডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট সই করেছে। এই প্রকল্প ভারতকে তার ‘চিকেন নেক’ বলে পরিচিত অঞ্চলে চেকপোস্ট বসাতে সহায়তা করবে। এই চিকেন নেক হলো ভুটান ও বাংলাদেশের মধ্যবর্তী অংশ। এর পরিবর্তে বঙ্গোপসাগর হয়ে রাখাইনের ওপর দিয়ে উত্তর পূর্বাঞ্চলে যাওয়ার সুযোগ পাবে ভারত।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version