এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : ১৭ তলার একটি হোটেলে বানিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছে চীন! বৃহস্পতিবার ওই হোটেলের উদ্বোধন হয়। স্থপতি বলছেন, হোটেলটি ‘একবারেই ব্যতিক্রম’। কিন্তু কেন?

সংবাদ সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, হোটেলটি স্বাভাবিক কোনো স্থানে তৈরি হয়নি। এটি তৈরি করা হয়েছে জলপ্রপাতের পরিত্যক্ত একটি কূপে। দীর্ঘদিন ধরে এই কূপ পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এই হোটেলের উচ্চতা ২৯০ ফুট। এতে ৩৩৬টি কক্ষ রয়েছে। এ ছাড়া এতে একটি থিম পার্ক আছে। হোটেলটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২৯ কোটি ডলার। ২০১৩ সালে এটির নির্মাণ শুরু হয়। সাংহাই থেকে ঘণ্টা খানিকের মধ্যে সড়কপথে এই হোটেলে পৌঁছা যাবে। এতে থাকতে রাত প্রতি গুনতে হবে ৪৯০ ডলার তথা ৪০ হাজার টাকার বেশি।

হোটেলটি নির্মাণে মুনশিয়ানা দেখিয়েছে সংশ্লিষ্ট স্থপতিরা। হোটেলটির একপাশ গাঁথা আছে খাদের দেয়ালে। আর অপর দিকটি জলপ্রপাতের দিকে উন্মুক্ত। পানির নিচেও এর একটি তলা রয়েছে। তবে এই তলা থেকে খাদের গভীরতা সরাসরি দেখা যাবে না। কারণ জানালাগুলি বিশালাকারের ফিশ ট্যাংক দিয়ে ঢাকা।

এই হোটেলের নির্মাণের দায়িত্বে ছিল চীনের অন্যতম বৃহৎ রিয়েল এস্টেট কোম্পানি শিমাও প্রোপার্টি। শিমাওর প্রধান প্রকৌশলী চেন জিয়াওজিয়াং এএফপিকে বলেন, ‘এটি এমন এক প্রকল্প যা আমাদের জন্য একেবারেই নতুন ছিল। এ ধরনের কাজ আমরা আগে করিনি। ফলে নির্মাণের ক্ষেত্রে যেসব বাধা এসেছে তা মোকাবিলায় আমাদের কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। কারও কাছ থেকেও কিছু শিখতে পারিনি।’

চেনের ভাষ্য, ২০১৩ সালে যখন তাঁরা এই ইমারতের কাজ শুরু করেছিল তখনই বড় বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। ভারী বর্ষণের ফলে পাশের নদীর পানি খাদের ভেতরে ঢুকে পড়ে। এতে অর্ধেক খাদ টইটুম্বুর হয়ে যায়। চেন বলেন, যদি নির্মাণ শেষে এমন কিছু ঘটত তাহলে ভয়ংকর ব্যাপার হতো। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধ করার জন্য খাদের চারদিকে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। পানির বৃদ্ধি ঠেকাতে সেচ ব্যবস্থাও নির্মাণ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযাত্রিকদের জন্য এই হোটেলে রয়েছে রোমাঞ্চের ব্যবস্থা। তারা এখানে পাথরের পর্বত আরোহণের সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি সকল পর্যটকের জন্য রয়েছে জলপ্রপাতের মুগ্ধতা।

এই হোটেল নির্মাণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন ব্রিটিশ স্থপতি মার্টিন জসম্যান। তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্প শুরু হয় এক যুগ আগে। শুরু থেকেই আমি এর সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। এটি নির্মাণের ধারণা ছিল সম্পূর্ণ নতুন। আমি কখনো বিশ্বাস হারাইনি। বিশ্বাস ছিল একদিন এর শুভ সমাপ্তি ঘটবেই। এখন আমি উত্তেজিত ও বিস্মিত।’

তবে চীনের জন্য ব্যতিক্রম নির্মাণকাজ করা নতুন কোনো ঘটনা নয়। প্রায়ই তারা এ ধরনের কাজ করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয়। এইতো চলতি বছর দক্ষিণ চীনের নির্মিত হয়েছে গগণচুম্বী এক ইমারত। যার একপাশে প্রবহমান আছে ১০৮ মিটারের জলপ্রপাত।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version