এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : রাজনৈতিক মামলা ও এসব মামলায় গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের তালিকা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে পাঠিয়েছিল বিএনপি। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে প্রতিকার না পেয়ে একই তালিকা নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দিয়েছে বিএনপি। ইসির কাছে অভিযোগ করে বিএনপি বলেছে, প্রধানমন্ত্রী তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি। তফসিল ঘোষণার পর থেকে এখন পর্যন্ত তাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, মামলা ও হয়রানি অব্যাহত আছে। সেই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ উপেক্ষা করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার অব্যাহত রেখেছে বলেও অভিযোগ করে দলটি। রোববার ইসিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) দপ্তরে এই তালিকা জমা দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মামলা ও তথ্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. সালাহ উদ্দিন খান।

তালিকা অনুযায়ী, তফসিল ঘোষণার পর থেকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৭৭৩ জন নেতাকর্মীকে। মৃত, অসুস্থ, হজ পালনরত, বিদেশে অবস্থান করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, ১লা নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা এবং গ্রেপ্তারের তালিকা দেয়ার জন্য জানান সরকার প্রধান। সেই আলোকে বিএনপির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বরাবর ৭ই নভেম্বর প্রথম দফায় ১ হাজার ৪৬টি মামলার তালিকা দেয় বিএনপি।

পরবর্তীতে দ্বিতীয় দফায় ১ হাজার ২টি মামলার নম্বর, ধারাসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ১৩ই নভেম্বর আরেকটি তালিকা পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, দুই দফায় মামলার তালিকা জমা দেয়ার মামলাগুলো প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তার হওয়া নেতাকর্মীদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে কিনা, তা এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি বলেও চিঠিতে উল্লেখ করে বিএনপি। চিঠিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, মামলাগুলো প্রত্যাহার এবং গ্রেপ্তার হওয়া নেতাকর্মীদের অব্যাহতি না দেয়া নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক।

গত ৮ই নভেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে আজ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ৭৭৩ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ তালিকা গত ১৫ই নভেম্বর নির্বাচন কমিশন বরাবর দেয়া হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীনে হলেও কমিশনের নির্দেশ উপেক্ষা করে ধারাবাহিকভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও বাড়িতে পুলিশি তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে। এ কারণে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে দেয়া তালিকা আপনার (প্রধান নির্বাচন কমিশনার) বরাবর দেয়া হলো। তফসিল ঘোষণার পরও নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ উপেক্ষা করে উল্লিখিত গায়েবি মামলার আসামিদের বাড়িতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হুমকি ও গ্রেপ্তার অব্যাহত আছে।

অবিলম্বে নেতাকর্মীদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতিসহ গ্রেপ্তার বন্ধের জন্য আপনার (সিইসি) কাছে আবারো অনুরোধ করা হলো। এর আগে ১৬ই নভেম্বর সিইসির কাছের ৪৭২ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের তালিকা জমা দেয় বিএনপি। ৮ই নভেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। পুনঃতফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৮শে নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ২রা ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ই ডিসেম্বর ও ভোটগ্রহণ ৩০শে ডিসেম্বর।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version