এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানই সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র মূল্যায়নে তা বেরিয়ে এসেছে। আসল হত্যাকারীকে ‘ধরে ফেলা’র পরও তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সিআইএ’র মূল্যায়ন সামনে আসার ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই তাকে ‘অপরিপক্ব’ অ্যাখ্যা দিলেন সৌদির মিত্র দেশের এ রাষ্ট্রপ্রধান। খাসোগি হত্যা ইস্যুতে মঙ্গলবার পূর্ণাঙ্গ একটি প্রতিবেদন তার কাছে যাবে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। দাবানলে ক্ষয়ক্ষতি দেখতে শনিবার ক্যালিফোর্নিয়ার যাওয়ার আগে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘খাসোগি হত্যার ঘটনাটি কখনোই হওয়া উচিত ছিল না।’

রয়টার্স জানায়, খাসোগি হত্যায় কারা দায়ী এবং এ ঘটনার সামগ্রিক প্রভাব কী- চূড়ান্ত প্রতিবেদনেই মার্কিন সরকার তা জানতে পারবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। কারা ওই প্রতিবেদন জমা দিচ্ছে, তা জনানো হয়নি। শুক্রবার সিআইএ’র এক মূল্যায়নে জানা যায়, রাজপরিবারের বেশকিছু নীতির সমালোচক খাসোগিকে হত্যার নির্দেশ সৌদি ক্রাউন প্রিন্সই দিয়েছিলেন। সিআইএ’র এ অনুমানকে ‘সম্ভব’ বলেও অভিহিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ট্রাম্পের বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা আগে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সরকার এখনও ওয়াশিংটন পোস্টের নিবন্ধ সম্পাদক খাসোগি হত্যায় জড়িতদের চিহ্নিত করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিদার নয়ার্ট বলেন, ‘সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে সরকার চূড়ান্ত উপসংহারে পৌঁছেছে বলে যে ইঙ্গিত দেয়া হচ্ছে তা সঠিক নয়। খাসোগি হত্যাকাণ্ডে এখনও অসংখ্য অমীমাংসিত প্রশ্ন রয়ে গেছে।’

সিআইএ’র এ পদক্ষেপ সৌদি আরবের মতো গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন মিত্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ রাখতে ট্রাম্পের চেষ্টাকে বিপত্তিতে ফেলবে বলেই ধারণা পর্যবেক্ষকদের।

মার্কিন সংসদ সদস্যরাও খাসোগি হত্যার ঘটনায় রিয়াদকে শাস্তি দেয়ার জন্য চাপ বাড়াচ্ছেন। শনিবার টুইটারে সিনেটর বব কোর্কার বলেন, ‘সব পয়েন্টই ক্রাউন প্রিন্সকে ইঙ্গিত করছে। এমবিএস (মোহাম্মদ বিন সালমান) হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার আদেশ যারা কার্যকর করেছেন, তাদের ফাঁসিতে ঝোলানোর আগেই ট্রাম্প প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ নেয়া।’

এরই মধ্যে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১৭ সৌদির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ওয়াশিংটন। ট্রাম্প প্রশাসন মার্কিন প্রতিরক্ষা খাতের অন্যতম বড় বাজার সৌদির সঙ্গে সম্পর্ক নষ্টে নারাজ। ট্রাম্প বলেন, ‘চাকরি ও মার্কিন অর্থনৈতিক অগ্রগতির বিষয়ে তারা খুবই অসাধারণ মিত্র। প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমাকে অনেক কিছুই বিবেচনায় নিতে হয়।’

শনিবার টুইটারে ডেমোক্রেট সিনেটর রিচার্ড ব্লুমেনথাল বলেন, ‘ক্রাউন প্রিন্সই যে খাসোগি হত্যার জন্য দায়ী- গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞদের এ অকাট্য উপসংহার মেনে নেয়া উচিত ট্রাম্পের। বর্বর এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় নিষেধাজ্ঞা, বিচার, এমবিএস ও অন্যদের সরিয়ে দেয়ার মতো পদক্ষেপ থাকা উচিত। ধারাবাহিকভাবে দোষারোপ ঢেকে রাখা উচিত নয়, যা এখন ট্রাম্প করছেন।’

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version