এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : ক্ষমতায় না থাকলেও পালিয়ে যাবেন না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আমাদের ভুলত্রুটি থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের রাজনীতি বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের রাজনীতি। আমরা মানুষের মাঝে আছি। তাই ক্ষমতায় না থাকলেও পালিয়ে যাবো না। এ দেশেই আমাদের জন্ম, এ দেশেই আমরা মরব, যে শপথ নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। গতকাল আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফ্রিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে কুর্মিটোলা ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
কেউ জানত না তাকে কোথায় নেয়া হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু জেলখানা থেকে বাইরে পা দিয়ে কুয়াশা ভেজা সকালে এক খণ্ড মাটি কপালে ছুঁয়ে বলেছিলেন, এই দেশেতেই জন্ম আমার, যেন এই দেশেতেই মরি। তিনি আরও বলেন, আমরাও এই মাটির সঙ্গেই আছি। বঙ্গবন্ধুও ছিলেন, তার কন্যা শেখ হাসিনাও আছেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ক্ষমতা আল্লাহ্র হাতে, জনগণের হাতে। ক্ষমতার দাপট আমরা কোনোদিন দেখাইনি। আমাদের ভুল-ক্রটি হতে পারে, এত বড় দল। কিন্তু আমরা অপকর্মকারীকে আনপানিশড যেতে দেইনি। এ সময় তিনি নিজ দলের সংসদ সদস্যের কারাগারে থাকার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, আমরা ভুল হলে সংশোধন করে নেই।
ভুল হলে সংশোধনের সৎ সাহস শেখ হাসিনার আছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার মনোনয়ন পর্ব শেষে দেয়া হবে বলে জানান দলের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, বঙ্গবঙ্গবন্ধু আন্তজার্তিক সম্মেলন কেন্দ্র কিংবা কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ইশতেহার প্রকাশ হতে পারে। নির্বাচনী ইশতেহারে দিন বদলের অভিযান, অদম্য বাংলাদেশ, গ্রামীণ উন্নয়নের মতো বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। দলীয় মনোনয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এবার দলের মনোনয়নে রাজনীতিকদেরই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। গতবারের চেয়ে এ বছর রাজনীতিবিদদের মধ্যে মনোনয়ন পাওয়া ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে। সাবেক ছাত্র নেতাদের যারা তৃণমূল থেকে এসেছে, তাদের আমরা মনোনয়ন দিয়েছি। এবার সব মিলিয়ে ১৬ থেকে ১৭ জন ব্যবসায়ী মনোনয়ন পেয়েছেন। এ ছাড়া ৪০ জনের কাছাকাছি রয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা। আর নতুন মুখ ৫০ জনের মতো হবে বলে মনে হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনের আগে নিশ্চিত করে বলা যাবে না, কে বিদ্রোহী প্রার্থী। তবে কেউ দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী হলে তাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে। আসন ভাগাভাগি নিয়ে মহাজোটে ক্ষোভ রয়েছে কি না এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কিছু ক্ষোভ তো থাকতেই পারে।
এত বড় মহাজোট, এখানে তো ক্ষোভ-বিক্ষোভ কিছু হবেই। সেই ক্ষোভ প্রশমিতও আমরা করবো। কিন্তু মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার পর্যন্ত যাদের ধৈর্য থাকবে না, তাদের জন্য ব্যবস্থা আছে। মুজিব কোট পরা ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা তো আওয়ামী লীগেই ছিলেন। তাদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণ থাকবে। তারা তো জেনে শুনে বিষ পান করেছেন। সামপ্রদায়িক অপশক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। এটা তাদের দীর্ঘদিন তাড়িত করবে। এ সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এসএম কামাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।