এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার না করে বিদ্রোহী প্রার্থী হলে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, মনোনয়ন নিয়ে এবার অন্যান্য বারের মতো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া অনেক কমে যাবে। তবে শেষ পর্যন্ত যারা প্রত্যাহার করবে না, তাদের ক্ষেত্রে আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে বহিষ্কার। যে-ই জোর করবে তাদের বিরুদ্ধেই এমন ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রোববার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

মনোনয়ন না পাওয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যানরা দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সক্রিয়ভাবে কাজ করবে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানরা কাজ করবে না কিংবা এই সমস্যা প্রকট তা বলা যাবে না। যশোরের উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন চাকলাদার দুই আসনে মনোনয়ন জমা দিয়ে প্রত্যাহার করেছেন এবং দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন। এছাড়া সাভারেও অনেক প্রার্থী ছিল, সংগঠনে বিভক্তি আছে। কিন্তু বর্তমান এমপি মনোনয়ন পেয়েছেন এ খবরে সবাই একসঙ্গে মনোনয়ন দাখিল করেছেন।

নির্বাচনের মধ্যে বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচির হুমকি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা বারবার একই কথা বলছি- যারা নির্বাচনে এক মাস আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পরিবর্তন চায়, তারা নির্বাচন থেকে সরে যেতে চায়। তারা মাথা ছাড়া নির্বাচন করছে। একজনকে ঘিরেই যে কোনো দেশে নির্বাচন আবর্তিত হয়। সেটা হল যিনি দলের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবেন। এখানেই তো তাদের ফলাফল হয়ে গেছে। তাদের কোনো নেতৃত্ব নেই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিও ইঙ্গিত দিয়েছিল ড. কামাল হোসেন সাহেব ঐক্যফ্রন্টের নেতা। এখন তো সেই নেতাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন না। ঐক্যফ্রন্ট চলছে মাথা ছাড়া নেতৃত্ব নিয়ে। নির্বাচনে যদি তারা জেতেন, সরকার গঠন করতে খালেদা জিয়াকে অথবা তারেক রহমানকে আনার চেষ্টা করবেন। মনে মনে হয়তো তাই। কিন্তু এই দু’জনই দণ্ডিত। নির্বাচন করার যোগ্য নয়।

তিনি বলেন, কামাল হোসেন সাহেব দৃশ্যপটে নেই। তিনি ইলেকশন করছেন না। আমি মনে করি, ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনের আগেই তাদের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হয়ে নির্বাচনে হেরে যাচ্ছে। তাদের পরাজয়ের আগাম ইঙ্গিত- প্রধানমন্ত্রী ফেইজ না থাকা।

রাজনৈতিক দৃশ্যপটের কোনো পরিবর্তন আসতে পারে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনটা হবে। তবে আগামী নির্বাচনে কারা জিতবে সেটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার হবে। ইসিতে বিএনপির গণগ্রেফতারের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সারা দেশে কোথাও কোনো খারাপ আভাস নেই। এই সিটিতে কোথাও কোনো ভায়োলেন্স হয়েছে? ইন্টারনাল ম্যাটার নিয়ে, ক্ষোভ-দুঃখ নিয়ে ছিটেফোঁটা সমস্যা কিছু কিছু জায়গায় হয়েছে, কিন্তু নির্বাচনের পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ার মতো ঘটনা ঘটেনি।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, স্পেসিফিক্যালি বলতে হবে, সিডিউল ঘোষণার পর কারা কারা গ্রেফতার হয়েছেন। অন্ধকারে ঢিল ছুড়বেন, আর সেটা বিশ্বাস করতে হবে? পল্টনের ঘটনায় যারা ভায়োলেন্স করছে তাদের বিরুদ্ধে তো ব্যবস্থা নিতেই হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দণ্ডিত ব্যক্তির নির্বাচন না করাই ভালো। নৈতিকতার প্রশ্নে আওয়ামী লীগ দণ্ডিত ব্যক্তিদের নির্বাচন করাকে সমর্থন করে না।

বিএনপির নয়াপল্টনের কার্যালয় মিথ্যাচার আর গুজবের কারখানা- উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের শক্তির ওপর নির্ভরশীল। বিএনপি গুজবের ওপর নির্ভরশীল। বিএনপির জনগণের ওপর আস্থা কম। যাদের জনগণের ওপর আস্থা কম তারাই গুজবের ওপর নির্ভর করে। দিন যত যাবে আগামী নির্বাচনে কারা ক্ষমতায় আসবে বিষয়টি তত স্পষ্ট হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version