এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারা দেশে ৭৮৬ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। রোববার যাচাই-বাছাই শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তারা এ ঘোষণা দেন। এতে তিনশ’ সংসদীয় আসনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়াল ২ হাজার ২৭৯ জন। বাতিলের তালিকায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দলটির কমপক্ষে শতাধিক প্রার্থী আছেন।

পাশাপাশি প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় চারটি আসনে বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই। বিভিন্ন মামলায় আদালত থেকে দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়া, ঋণ ও বিল খেলাপি, মামলাসংক্রান্ত সার্টিফায়েড কপি ও আয়কর সনদ না থাকা, ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর না থাকা এবং অসম্পূর্ণ হলফনামাসহ অন্তত ১০ কারণে এসব মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্রে জানা গেছে।

তবে নিয়মানুযায়ী, যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে তারা ৩ দিনের মধ্যে ইসিতে এ ব্যাপারে আপিল করতে পারবেন। আজ আপিল আবেদন গ্রহণ শুরু হবে। শুনানি চলবে ৬ ডিসেম্বর থেকে টানা ৩ দিন। আপিলে যদি মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল থাকে, সেক্ষেত্রে প্রার্থীরা আদালতে আপিল করতে পারবেন বলে জানান (ইসির) উপসচিব আতিয়ার রহমান।

যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে, তাদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী ও এমপিসহ বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থী আছেন। বাতিলের তালিকায় আছেন আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাও। বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, দণ্ডপ্রাপ্ত দেখিয়ে তাদের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হলেও সরকারপন্থী অনেকের প্রার্থিতা বহাল আছে।

এ প্রক্রিয়ায় সরকারি দলের জয়লাভ এগিয়ে রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ২০ দলীয় জোটের নেতা ও এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ।

ইসির নিয়মানুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই কাজে উপস্থিত ছিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ পুলিশ বিভাগ, ইসির কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ব্যাংক, আয়কর বিভাগ, বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান এবং প্রার্থী বা প্রার্থীদের প্রতিনিধিরা।

রোববার দেশের তিনশ’ আসনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। এ নির্বাচনে অংশ নিতে ৩ হাজার ৬৫ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। এতে ৭৮৬ জনের প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় এখন পর্যন্ত প্রার্থী সংখ্যা দাঁড়াল ২ হাজার ২৭৯ জন। সেই হিসাবে ২৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে গেল। তিনশ’ আসনের মধ্যে ঢাকা-১, বগুড়া-৭, জামালপুর-৪ এবং মানিকগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই। এছাড়া ৩৫টি আসনে দাখিল করা সবার মনোনয়নপত্র টিকে গেছে। কুড়িগ্রাম-৪ আসনে সর্বোচ্চ ১৩ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা।

এ আসনে আরও ১০ প্রার্থী আছেন। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ঢাকা-১৭ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন। এ দুটি আসনে ১১ জন করে প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এর পরও এখন পর্যন্ত ১৬ জন করে প্রার্থী রয়েছেন ওই দুই আসনে। বাছাই শেষে এখন দেশে সর্বাধিক প্রার্থী কুমিল্লা-৩ আসনে ১৭ জন। ওই আসনেও ১০ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

রোববার রাতে ইসি সূত্র জানায়, রাজনৈতিক দলগুলোর বা কোন দলের কতজন প্রার্থী বাছাইয়ে বাদ পড়েছেন সেই তথ্য পাওয়া যায়নি। ২৮ নভেম্বর ৩৯টি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে ২ হাজার ৫৬৭ জন প্রার্থিতা দাখিল করেছিলেন। বাকি ৪৯৮ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, সারা দেশে যেসব মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে তার বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবেন। তারা রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের সার্টিফায়েড কপিসহ আজ থেকে ৩ দিন আপিল করার সুযোগ পাবেন। কমিশন ৬ থেকে ৮ ডিসেম্বর শুনানি করে ওইসব আবেদন নিষ্পত্তি করবে।

৮ নভেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। এর ৪ দিন পর পুনরায় তফসিল ঘোষণা করা হয়। পুনঃঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল ২৮ নভেম্বর। রোববার একই দিনে ৬৬ জন রিটার্নিং সারা দেশের জমা হওয়া সবক’টি মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করেন। ৯ ডিসেম্বর প্রত্যাহারের পর প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করবেন রিটার্নিং অফিসাররা। ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর শুরু হবে প্রচার। ৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা জেলার ২০টি আসনে ২৬৫ প্রার্থীর মধ্যে ৭১ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও ঢাকা জেলা প্রশাসক। তারা দু’জন এসব আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা। মানিকগঞ্জের তিনটি আসনে ৮ জনের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে।

এতে প্রার্থী সংখ্যা ২৫ থেকে কমে ১৭ জনে দাঁড়িয়েছে। গাজীপুরের পাঁচটি আসনে ৪৯ প্রার্থীর মধ্যে ১০ জনের প্রার্থিতা বাতিল করেছেন ওই জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা। নরসিংদীর ৫টি আসনের ৪৭ প্রার্থীর মধ্যে ৭ জনের মনোনয়নপত্র, নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে ৬১ প্রার্থীর মধ্যে ১৪ জনের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। এছাড়া টাঙ্গাইল জেলার ৮টি আসনে ৮৩ প্রার্থীর মধ্যে ১৭ জনের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ৬৬ জন।

আরও জানা গেছে, রংপুর বিভাগের ৩৩টি আসনে ৯১টি মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এ আসনের বর্তমানে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ২৬২ জন। এসব আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ৩৫৩ জন। রাজশাহী বিভাগের ৩৯টি আসনের মধ্যে ৩৫৫ প্রার্থীর মধ্যে ৯৬ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। বর্তমানে প্রার্থী সংখ্যা ২৫৯ জন।

খুলনা বিভাগের ৩৬টি আসনে ৯০ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে বর্তমানে প্রার্থী রয়েছেন ২৬১ জন। এসব আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ৩৫১ জন। বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার ২১টি আসনে বাতিল হয়েছে ৩৮ জনের মনোনয়নপত্র। বর্তমানে ১৪৫ বৈধ প্রার্থী রয়েছেন। ময়মনসিংহ বিভাগের ২৪টি আসনে ২৩১ প্রার্থীর মধ্যে ৬২ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এ বিভাগে প্রার্থী রয়েছেন ১৬৯ জন। ঢাকা বিভাগের ৭০টি আসনে ৭৩১ প্রার্থীর মধ্যে ১৯২ জনের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। বর্তমানে প্রার্থী রয়েছেন ৫৩৯ জন।

সিলেট বিভাগের চারটি জেলার ১৯টি আসনে ১৮৪টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল। এর মধ্যে ৪৪টি বাতিল হয়ে বর্তমানে প্রার্থী রয়েছেন ১৪০ জন। সর্বশেষ চট্টগ্রাম বিভাগের ৫৮টি আসনে ৬৭৭টি আসনের মধ্যে ১৭৩ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এ বিভাগের বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়াল ৫০৪ জনে।

যে ৩৫টি আসনে একটিও মনোনয়নপত্র বাতিল হয়নি : ঠাকুরগাঁও-২, দিনাজপুর-৫, জয়পুরহাট-২, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩, নওগাঁ-৩, নাটোর-৩, পাবনা-২ ও ৪, কুষ্টিয়া-৩, বাগেরহাট-৩, খুলনা-১, ৩, ৪ ও ৫, সাতক্ষীরা-৩, পটুয়াখালী-৪, ভোলা-৩, বরিশাল-৪ ও ৫, পিরোজপুর-২, টাঙ্গাইল-২ ও ৫, জামালপুর-২, নেত্রকোনা-৩, ঢাকা-১২ ও ১৩, নরসিংদী-৪, গোপালগঞ্জ-২, মৌলভীবাজার-৪, কুমিল্লা-৭, চাঁদপুর-৩, ফেনী-২, নোয়াখালী-৫, লক্ষ্মীপুর-৩ ও কক্সবাজার-১।

ঢাকার ২০ আসন : ঢাকা-১, ২, ৩, ১৯ ও ২০ এ পাঁচটি আসনে ৫২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তাদের মধ্যে সাবেক মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপিসহ ৩৩ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান এবং কফিল উদ্দিনসহ ১৯ জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। রোববার ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দিনভর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়।

এ সময় ঢাকা জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান, সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্য, নির্বাচন কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক, আয়কর বিভাগ, বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান এবং প্রার্থী বা প্রার্থীদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

মনোনয়নপত্র বাছাই শেষে বিকালে জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান সাংবাদিকদের জানান, ঢাকা-১ আসনে ১২ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এদের মধ্যে পাঁচজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। ৭ জনের মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকা-২ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করা ১০ জনের মধ্য থেকে ৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

ঢাকা-৩ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করা ৮ জনের মধ্য থেকে ৩ জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। ঢাকা ১৯ আসনে ১২ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এদের মধ্যে বাতিল হয়েছে ২ জনের মনোনয়ন। ঢাকা ২০ আসনে ১০ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তাদের মধ্যে ৫ জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। যাদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে আগামী ৩ দিনের মধ্যে তারা নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যারা মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের কারও মনোনয়নপত্র বাতিল হয়নি। বিএনপি ও অন্যান্য দল, এমনকি স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।

ঢাকা-১ আসনে বিএনপির দুই প্রার্থীর কারও মনোনয়ন গ্রহণ করা হয়নি। তারা হলেন- খন্দকার আবু আশফাক (বিএনপি), ফাহিমা হোসেন জুবলী (বিএনপি)। এ আসনে অন্য যাদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে তারা হলেন- আনোয়ার হোসেন, আইয়ুব খান এবং শামসুদ্দিন আহমেদ। ঢাকা-২ আসনে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে আমানউল্লাহ আমান, মারুফ খান, সুকান্ত সফি চৌধুরী এবং মহিউদ্দিন চৌধুরী রিপনের।

ঢাকা-৩ আসনে মনির সরকার, সুলতান আহমেদ খান এবং মোস্তফা মহসিন মন্টুর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। ঢাকা-১৯ আসনে মনোনয়ন বাতিল হয়েছে কফিল উদ্দিন এবং শরিফুল ইসলামের। ঢাকা-২০ আসনে যাদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে তারা হলেন- নূরুল ইসলাম, তমিজ উদ্দিন, সুলতান আহমেদ, মো. আবদুল মান্নান এবং জামাল উদ্দিন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা-১ আসনে যাদের মনোনয়ন গ্রহণ করা হয়েছে তারা হলেন- সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম, সালমান এফ রহমান, কামাল হোসেন, করম আলী, জালাল উদ্দিন, আবিদ হোসেন এবং সেকান্দার হোসেন।

ঢাকা-২ আসনে যাদের মনোনয়ন গ্রহণ করা হয়েছে তারা হলেন- অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ইরফান ইবনে আমান, জহিরুল ইসলাম, আতাউল্লাহ, শাকিল আহমেদ এবং মোস্তফা মহসিন মন্টু। ঢাকা-৩ আসনে যাদের মনোনয়ন গ্রহণ করা হয়েছে তারা হলেন- নসরুল হামিদ বিপু, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মজিবর হাওলাদার, আরিফুর রহমান লিটন এবং আলী রেজা।

ঢাকা-১৯ আসনে যাদের মনোনয়ন গ্রহণ করা হয়েছে তারা হলেন- ডা. এনামুর রহমান, দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, আয়নল হক, ফারুক খান, নুরুল ইসলাম, আবু ইউসুফ খান, সারোয়ার হোসেন, ইদ্রিস আলী, সৌমিত্র কুমার দাস এবং আবুল কালাম আজাদ। এ আসনে দেওয়ান মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিনের মনোনয়ন যাচাইয়ের সময় পুলিশের পক্ষ থেকে আপত্তি জানানো হয়।

এ সময় ঢাকা জেলা পুলিশের সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত এসপি গোলাম আজাদ খান অভিযোগ করেন, সালাহ উদ্দিনের নামে ১৫টি মামলা আছে। কিছু মামলায় তিনি জামিনে এবং কিছু মামলায় পলাতক আছেন। তখন সালাহ উদ্দিন বলেন, আমি কোনো মামলাতেই পলাতক নই। সব মামলাতেই জামিনে আছি। এরপর জেলা প্রশাসক তার মনোনয়ন গ্রহণ করেন। জামানতের রসিদের মূল কপি জমা না দেয়ার কারণে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিডিপি) প্রার্থী সারোয়ার হোসেনের প্রার্থিতা নিয়ে আপত্তি জানানো হয়েছিল। পরে তা জমা দেয়ার আশ্বাস দিলে তার মনোনয়ন গ্রহণ করা হয়।

ঢাকা-২০ আসনে যাদের মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হয়েছে তারা হলেন- বেনজীর আহমেদ, ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান খান, আবদুুল মান্নান, এমএ মান্নান এবং খান মো. ইস্রাফিল। এ আসনে ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমানের মনোনয়ন যাচাইয়ের সময় ২০১৩ সালে ১ হাজার ৮৮১ টাকা আয়কর বকেয়ার অভিযোগ উঠেছিল।

এ সময় ব্যারিস্টার জিয়া বলেন, নীতিমালায় সবশেষ অর্থবছরের আয়কর পরিশোধ থাকার কথা বলা হয়েছে। আমি নিয়মিত কর পরিশোধ করি। ২০১৩ সালে আমার যে কর বকেয়া ছিল সেটা আমাকে অবগত করা হয়নি। এটা আমি জানার পর তা পরি

শোধ করেছি। ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমানের এ বক্তব্যের পরও আওয়ামী লীগ প্রার্থী বেনজীর আহমেদ তার (ব্যারিস্টার জিয়া) মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানান। তবে শেষ পর্যন্ত তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়নি। ঢাকা-২ আসনে আমানউল্লাহ আমানের মনোনয়ন বাতিল হওয়া প্রসঙ্গে তার ছেলে ইরফান ইবনে আমান বলেন, মামলাসংক্রান্ত কারণে বাবার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। আমরা এর বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাব। শেষ পর্যন্ত যদি বাবা নির্বাচন করতে না পারেন তাহলে তরুণ প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে আমি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার লড়াইয়ে নির্বাচনী মাঠে থাকব।

জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্র জানায়, প্রস্তাবকারী এবং সমর্থনকারী ব্যক্তির ভোটার আইডি নম্বর সঠিক না হওয়ায় ঢাকা-৩ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মনির হোসেন সরকারের মনোনয়ন বাতিল করা হয়। মনোনয়ন ফরমে প্রস্তাবক হিসেবে মনির হোসেন সরকার নিজের নাম উল্লেখ করেছেন। তাছাড়া ফরমের ২০ নম্বর এবং ২১ নম্বর কলাম তিনি পূরণ করেননি। এ আসনে ঋণ খেলাপি হওয়ায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী সুলতান আহমেদ খানের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।

একই আসনে মনোনয়ন ফরমের ২০ এবং ২১ নম্বর কলাম পূরণ না করার কারণে গণফোরামের মোস্তফা মহসিন মন্টুর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। ঢাকা-১৯ আসনে বিএনপি প্রার্থী কফিল উদ্দিনের মনোনয়ন বাতিল করা হয় অক্টোবরের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করার কারণে। এক-তৃতীয়াংশ ভোটারের স্বাক্ষর প্রমাণিত না হওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফুল ইসলামের মনোনয়ন বাতিল করা হয়।

আয়কর রিটার্ন দাখিল না করার কারণে ঢাকা-২০ আসনে জাকের পার্টির প্রার্থী নুরুল ইসলামের মনোনয়ন বাতিল করা হয়। এ আসনে বিএনপির প্রার্থী তমিজ উদ্দিনের মনোনয়ন ফরম যাচাইয়ের সময় প্রথমে পুলিশের পক্ষ থেকে অপত্তি জানানো হয়। দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা গোলাম আজাদ খান বলেন, তমিজ উদ্দিনের নামে ধামরাইয়ে তিনটি মামলা আছে। এসব মামলায় তিনি পলাতক।

এর জবাবে তমিজ উদ্দিন বলেন, সব মামলাতেই আমি জামিনে আছি। পরে জেলা প্রশাসক তাকে প্রশ্ন করেন, আপনি কী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন? জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি।’ স্থানীয় সরকার বিভাগ ওই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেনি উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক তার মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেননি। জেলা প্রশাসকের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে তমিজ উদ্দিন বলেন, কুষ্টিয়া এবং নাটোরসহ বিভিন্ন এলাকায় পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে অনেকে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। কিন্তু আমাকে এ সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। তাছাড়া পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার দায়িত্ব তো আমার নয়। এক দেশে দুই আইন চলতে পারে না। ঋণ খেলাপি হওয়া এবং আয়কর বকেয়া থাকার কারণে এ আসনে সুলতান আহমেদ ও জামাল উদ্দিন আহমেদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়।

ঢাকার অপর ১৫টি সংসদীয় আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য স্বতন্ত্রসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ১৬২ জনের মনোনয়ন প্রস্তাবের বৈধতা দেয়া হয়েছে। প্রার্থীর ছোটখাটো ভুল ছাড়া ইসির মৌলিক চাওয়া পূরণে সক্ষম হওয়ায় এসব প্রার্থীর প্রার্থিতা গ্রহণ করেছে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়। একই ভাবে ঋণখেলাপি, করখেলাপি, বিভিন্ন ইউটিলিটি সার্ভিসের বকেয়া বিল পরিশোধ না হওয়া, হলফনামায় ভুল তথ্য প্রদানসহ বিভিন্ন কারণে বাতিল করা হয়েছে ৫২ জনের প্রার্থিতা। এর আগে ২১৪ জন এ নির্বাচনে প্রার্থিতার জন্য তাদের মনোনয়ন জমা দেন।

রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে সকাল ৯টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত বিভিন্ন সংসদীয় আসন ভিত্তিক প্রার্থীদের মনোনয়ন যাচাই-বাছাই কার্যক্রম চলে। বিভাগীয় কমিশনার কেএম আলী আজম এ কার্যক্রমের নেতৃত্ব দেন। এতে দেখা গেছে, বিএনপির ৬ জন এবং আওয়ামী লীগের ২ প্রার্থীর প্রার্র্থিতা বাতিল করা হয়। এর মধ্যে ঋণখেলাপি ও ঢাকা টেলিফোনের ইউটিলিটি বকেয়া থাকার কারণে ঢাকা-৯ এর বিএনপি প্রার্থী আফরোজা আব্বাসের মনোনয়ন বাতিল করেছে বিভাগীয় রিটার্নিং কর্মকর্তা।

এছাড়া ঋণ খেলাপির অভিযোগে বিএনপি প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুর স্ত্রী নাসিমা আক্তার কল্পনা, মনোনয়ন ফরমে নিজ দলের নাম বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কোনোটিই উল্লেখ না করায় ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, বিএনপির সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিক (ঋণ খেলাপি) এবং জাকের পার্টির সাবেক ফুটবলার কায়সার হামিদের (ঋণ খেলাপি) মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।

তবে দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদের মামলায় ১৩ বছরের সাজা হওয়া সত্ত্বে¡ও হাইকোর্ট তা বাতিল করায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী হাজী সেলিমের মনোনয়নের বৈধতা দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে কেএম আলী আজম জানান, যাদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে তা আইনানুগ না হওয়ায় তা করা হয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি প্রার্থীর প্রার্থিতা যথাসম্ভব বহাল রাখতে। এ

জন্য অনেককে সময়ও দেয়া হয়েছে। এতে অনেকে টিকেও গেছেন। হাজী সেলিম প্রসঙ্গে বলেন, এখানে মনোনয়ন বাছাইয়ের সময় পুলিশ কমিশনারের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা অবহিত হয়েছি কার কত মামলা এবং সাজা হয়েছে কিনা? কিন্তু উপস্থিত কেউ এখানে এ বিষয়ে আমাদের অবহিত করেননি। প্রার্থীও তার হলফনামায় উল্লেখ করেননি।

এদিকে ঢাকা-১৭ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য সর্বাধিক ২৭ জন মনোনয়ন জমা দিলেও গ্রহণ করা হয়েছে ১৬টি এবং ১১টি বাতিল করা হয়েছে। বৈধ প্রার্থীরা হলেন- হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ (চেয়ারম্যান- জাতীয় পার্টি), আবদুল কাদের খান এবং আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) আওয়ামী লীগ। মাহী বি. চৌধুরী (বিকল্পধারা), আন্দালিব রহমান পার্থ (বিজেপি), একেএম সাইফুর রশীদ (বিকল্পধারা), ফরহাদ হালিম (বিএনপি), ওয়াখিল উদ্দিন (স্বতন্ত্র), আবুল কালাম আজাদ (বিএনএফ), রুহুল আলম চৌধুরী (বিএনপি) প্রমুখ। আর বাতিল হয়েছে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা (মনোনয়ন ফরমে নিজ দলের নাম বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কোনোটিই উল্লেখ নেই), শওকত আজীজ (বিএনপি-লংকাবাংলা ও জনতা ব্যাংকের কাছে ঋণখেলাপি) এবং রুবেল আজীজ (আওয়ামী লীগ) ঋণখেলাপি।

ঢাকা-৭ আসনে ১৯ প্রার্থী তাদের মনোনয়ন জমা দেন। তবে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের রিটার্নিং কর্মকর্তা এর থেকে ১৫ প্রার্থীর প্রার্থিতা বৈধ বলে জানান। বাকি ৪ জনের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। এ আসনে আওয়ামী লীগের হাজী সেলিম ও হাজী আবুল হাসনাত এবং মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তাদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটানির্ং কর্মকর্তা। তবে ঋণখেলাপির অভিযোগে বাতিল হয়েছে বিএনপি প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুর স্ত্রী নাসিমা আক্তার কল্পনার মনোনয়ন। অন্যদিকে এ আসনে মনোনয়ন বাতিল হয়েছে আওয়ামী লীগের অপর প্রার্থী নাজমুল হোসেনের।

ঢাকা-৬ আসনেও মনোনয়ন জমাদানকারী ১৩ প্রার্থী থেকে যাচাই-বাছাইয়ের পর বৈধ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে ১১টি এবং বাতিল হয়েছে ২টি। এ আসনে সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন চৌধুরীর মনোনয়ন করসংক্রান্ত জটিলতার কারণে ২ ঘণ্টা স্থগিত করা হলেও পরে এ সময়ের মধ্যে জটিলতা কাটিয়ে ওঠায় শেষ পর্যন্ত তার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

ঢাকা-৮ আসনে দ্বিতীয় সর্বাধিক ২২টি মনোনয়ন জমা পড়ে। এদের থেকে ১৫টি বৈধ এবং আইনানুগ না হওয়ায় ৭টি অবৈধ বলে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা। এর মধ্যে যেসব মনোনয়ন বৈধ বলে বিবেচিত হয়েছে তাদের উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে রয়েছেন- আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও বিএনপির প্রার্থী ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।

ঢাকা-৯ আসনে ১০টি মনোনয়ন জমা পড়ে। এর মধ্যে ৭টি গৃহীত এবং ৩টি বাতিল বলে গণ্য করা হয়। আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরীর মনোনয়ন গৃহীত হলেও বিভাগীয় রিটার্নিং কর্মকর্তা তাকে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পুরনোটির পরিবর্তে নতুন অ্যাকাউন্ট নাম্বার জমা দিতে বলেন। অপরদিকে এ আসনে বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের স্ত্রী ও বিএনপি প্রার্থী আফরোজা আব্বাসের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।

ঢাকা-১৫ আসনে ১৬টি প্রস্তাবের বিপরীতে ১৩টি গৃহীত হয় এবং ৩টি বাতিল হয়। এ আসনে ভোটের মাঠে লড়ার বৈধতা পেয়েছেন নিবন্ধন বাতিল হওয়া রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান। তিনি ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা-১৫ আসনে মনোনয়নপত্রের বৈধতা পেয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত বর্তমান সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার ও ১৬৪টি মামলা নিয়ে বৈধতা পেয়েছেন বিএনপির প্রার্থী মামুন হাসান।

ঋণ খেলাপির অভিযোগ জাতীয় পার্টির মো. মুকুল আমিন ও ভোটারের ভুয়া স্বাক্ষরের অভিযোগে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সলিমুদ্দিন, আবদুর রহিমের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ঢাকা-১০ আসনে ১০ প্রার্থীর মধ্যে ৯ প্রার্থী রিটার্নিং কর্মকর্তার বিবেচনায় টিকে যায় এবং ১ প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হয়। এ আসনে বৈধ প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এবং বিএনপির তিন প্রার্থী আবদুল মান্নান, শেখ রবিউল আলম ও ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম।

এতে ঢাকা-১২ আসনে দাখিল করা ৮ প্রার্থীর মনোনয়নই বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের আসাদুজ্জামান খান কামাল, বিএনপির সাইফুল ইসলাম নীরব ও আনোয়ারুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জোনায়েদ সাকি ও জাপার প্রার্থী এম নাসিরুদ্দিন সরকার প্রমুখ।

একইভাবে ঢাকা-১৩ আসনেও সবার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এখানে ১২ জন মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের সাদেক খান, সিপিবির খান আহসান হাবিব, বিএনপির আতাউর রহমান ঢালি, আবদুস সালাম ও আতিকুল ইসলাম মতিন, জাপার শফিকুল ইসলাম, এনপিপির দুলাল কান্তি, বিকল্পধারার মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।

ঢাকা-১১ আসনে ১১ জন প্রার্থীর মধ্যে ১০ জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছে ঢাকা বিভাগীয় রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়। বহাল প্রার্থীরা হলেন- একেএম রহমতউল্লাহ (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ), শামীম আরা বেগম (বিএনপি), মোজাম্মেল হক বীরপ্রতীক (গণফোরাম), এসএম ফয়সাল চিশতী (জাতীয় পার্টি), আবদুল বাতেন (বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি) ও এজিএম শামসুল হক (বিএনপি)। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান মিয়ার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।

ঢাকা-১৪ আসনে ১৩ মনোনয়নের মধ্যে ৮টি বৈধ এবং ৫টি বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। বৈধ ঘোষণা করা প্রার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- আওয়ামী লীগের এমপি আসলামুল হক, সিপিবির রিয়াজউদ্দিন, বিএনপির সাবেক ফুটবলার আমিনুল হক ও মুন্সি বজলুল বাসিত আঞ্জু এবং জাপার মুস্তাকুর রহমান প্রমুখ। আর বাতিল প্রার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হচ্ছেন- বিএনপির সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিক (ঋণখেলাপি) এবং জাকের পার্টির সাবেক ফুটবলার কায়সার হামিদ (ঋণখেলাপি)।

ঢাকা-৪ আসনে মনোনয়ন জমা পড়েছে ১৫টি। এর মধ্যে প্রার্থীর ছোটখাটো ভুল ছাড়া নির্বাচন কমিশনের মৌলিক চাওয়া পূরণে সক্ষম হওয়ায় ৯ প্রার্থীর প্রার্থিতা গ্রহণ করা হয়েছে। আর চাওয়া পূরণ করতে না পারায় বাতিল করা হয়েছে ৬ জনের প্রার্থিতা।

এছাড়া ঢাকা-৫ আসনে ১৩ প্রার্থীর মধ্যে প্রার্থিতা গৃহীত হয়েছে ১১টি। বাতিল হয়েছে ২টি। ঢাকা-১৬ আসনে ১০ আবেদনের মধ্যে ৪টি বাতিল ও ৬টি গ্রহণ করা হয়। ঢাকা-১৮ আসনে মনোনয়নপত্রের সংখ্যা ছিল ১৫টি। এর থেকে গৃহীত হয়েছে ১২টি এবং বাতিল হয়েছে ৩টি।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version