এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : সংসদ নির্বাচনের বাকি আর ২১ দিন। এখনো শুরু হয়নি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান। পাশাপাশি থানাগুলোতে বৈধ অস্ত্র জমা দেয়ার বিষয়েও কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। কবে নাগাদ অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার শুরু হবে এবং বৈধ অস্ত্র জমা দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবে এ বিষয়ে কেউই বলতে পারছেন না। সূত্র জানায়, প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং বৈধ অস্ত্র থানা হেফাজতে রাখা অনেকটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। নির্বাচনকে সব ধরনের পেশিশক্তি থেকে প্রভাবমুক্ত রাখতেই এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়। অতীতে দেখা গেছে, জাতীয় নির্বাচন ছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বৈধ অস্ত্র জমা দিতে হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মহাজোট সরকারের গেল ১০ বছরে প্রায় ২০ হাজার বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্স দেয়া হয়েছে।

১৯৫২ সাল থেকে শুরু করে ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ তিন হাজার অস্ত্রের লাইসেন্স দেয়া হয়। এর আগে অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পালনের সময় তার নির্বাচনী এলাকার নেতাকর্মীদের সবচেয়ে বেশি বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নামেও এক বা একাধিক অস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে। দেশের ৬৪ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের নামেও বৈধ অস্ত্র রয়েছে।

সেই কারণে প্রতি নির্বাচনের আগে বৈধ অস্ত্র জমা নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এবারও নির্বাচনের ক্ষেত্রে বৈধ অস্ত্র জমা নেয়া হবে না কি প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা হবে ওই বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, জেলা পর্যায়ে লাইসেন্সধারী অস্ত্রের মালিক বা তাদের আত্মীয়স্বজন নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। তাদের হাতে অস্ত্র থাকার কারণে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। জননিরাপত্তা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, লাইসেন্স করা ৪৩ হাজারেরও বেশি আগ্নেয়াস্ত্রের হদিস মিলছে না। এরমধ্যে ঢাকাতেই ৩৮ হাজার অস্ত্রের খোঁজ মিলছে না।

গেল সাত থেকে আট বছর ধরে এসব অস্ত্র মালিকদের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক দিন ধরে এসব অস্ত্রের লাইসেন্স নবায়ন হচ্ছে না। এদিকে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দুই দফায় বৈধ অস্ত্র জমা দেয়ার নির্দেশ দেয় ফখরুদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ওই সময় বৈধ অস্ত্র ফিরিয়ে নিতে নির্বাচন কমিশন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি দেয়। একই সঙ্গে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য ‘বিশেষ অভিযান’-এর ঘোষণা আসে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা ও পেশিশক্তির ব্যবহার বন্ধের জন্যই নির্বাচন কমিশন থেকে বৈধ অস্ত্র জমার নির্দেশনা দেয়া হয়। যদিও বিতর্কিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বৈধ অস্ত্র জমা দেয়ার নির্দেশনা দেয়নি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তাই ওই সময় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও তেমন তৎপরতা লক্ষ্য করা যায় নি। এবার শেষ বেলায় কি হয় তা খোলাসা করে নির্বাচন কমিশন বা জননিরাপত্তা বিভাগের কেউই বলতে পারছেন না।
সূত্র : মানবজমিন।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version