এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : সেনাবাহিনীর চাকরির নিয়োগে প্রথমবারের মতো মিথ্যা শনাক্তকরণ যন্ত্র ব্যবহার শুরু করেছে চীন। প্রার্থীদের পেশাজীবী মনোভাব ও আনুগত্য নিশ্চিত করতেই এ ব্যবস্থা চালু করেছে দেশটির পিপল’স লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)।
এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, নিয়োগকারীদের যাতে যথাযোগ্য এবং রাষ্ট্রের কমিউনিস্ট আদর্শে বিশ্বাসী প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল না হয়। চলতি বছরে এই প্রক্রিয়ায় ইতিমধ্যে ২০ হাজার জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বছরের শেষ নাগাদ নেয়া হবে আরও ৯ হাজার ৩০০ জনকে।
চীনা সেনাবাহিনীর মুখপত্র পিএলএ ডেইলির বরাত দিয়ে শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
সন্দেহভাজন কেউ সত্য বলছে নাকি মিথ্যা বলছে, তা নির্ণয়ে সারা বিশ্বেই ইতিমধ্যে বেশ পরিচিতি পেয়েছে ‘লাই ডিটেক্টর টেস্ট’ বা মিথ্যা শনাক্তকরণ যন্ত্র। এটাকে পলিগ্রাফ টেস্টও বলা হয়ে থাকে।
সংক্ষেপে বলা যায়, পলিগ্রাফ টেস্টে বিভিন্ন ধরনের শরীরিক প্রতিক্রিয়া ধারণ করা হয় যার মাধ্যমে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হয় যে, একজন ব্যক্তি সত্য কথা বলছে কিনা। সাধারণত রক্তচাপ কেমন, শ্বাস-প্রশ্বাসের পরিবর্তন এবং হাতের তালু ঘামছে কিনা, নাড়ির গতি- এগুলোই তার মাপকাঠি হিসেবে কাজ করে। বিশ্বের নানা প্রান্তে পলিগ্রাফ পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পর জাপান, রাশিয়া এবং বর্তমানে চীনে এর ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে সবখানেই এর প্রযুক্তি এবং প্রক্রিয়া এখনও একই ধরনের। পিএলএ ডেইলি জানায়, চীনা সেনাবাহিনীর সাউদার্ন থিয়েটার কমান্ড প্রথমে মিথ্যা শনাক্তকরণ যন্ত্র ব্যবহার করে সেনা নিয়োগ শুরু করে।
চলতি বছরের নভেম্বরে সরকারি টিভি চ্যানেল সিসিটিভিতে এ সম্পর্কিত একটি ভিডিও ক্লিপ প্রচার করা হয়।
সেখাতে দেখানো হয়, মিথ্যা ধরতে নিয়োগকারীরা যন্ত্র দিয়ে কীভাবে চাকরি প্রার্থীদের হৃদস্পন্দর ও রক্তের চাপ নিরীক্ষণ করছেন।
ওই ভিডিওতে মোট ১৮ জন প্রার্থীকে পরীক্ষা করা হয়। উইচ্যাটে সাউদার্ন থিয়েটার কমান্ড চীনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর নিয়োগ পরীক্ষায় এ ধরনের যন্ত্র ব্যবহার এটাই প্রথম ঘটনা।
তারা আরও জানায়, পরীক্ষাকালে প্রার্থীদের আনুগত্য ও পেশাদারিত্ব মূল্যায়নে মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা, মুখোমুখি সাক্ষাৎকারের পাশাপাশি তাদের রাজনৈতিক আদর্শও পর্যবেক্ষণ করা হয়। এ সময় কেউ মিথ্যা বলছে কিনা তা ওই যন্ত্রের সাহায্যে শনাক্ত করা হয়।