এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : মুম্বইয়ে অবস্থিত জিন্নাহ হাউসকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের একটি বক্তব্যের পর এ বিতর্ক দেখা দিয়েছে। এতে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিচ্ছে উভয় দেশ। সুষমা স্বরাজ বলেছেন, জিন্নাহ হাউস নামের ওই বাংলোটির নাম পাল্টে ফেরার প্রক্রিয়া চলছে। এরই প্রেক্ষিতে পাকিস্তান সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছে জিন্নাহ হাউজ পাকিস্তানের সম্পদ। এর নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্য ভারত কোনো রকম চেষ্টা করলে তা হবে অগ্রহণযোগ্য।
মুম্বইয়ে মালাবার হিলে সমুদ্রমুখী বাংলো জিন্নাহ হাউস। ইউরোপিয় ধাঁচে এর ডিজাইন করেছেন ভাস্কর ক্লাউডি ব্যাটলে।
১৯৩০ এর দশকের শেষ দিকে ওই বাংলোতে বসবাস করতেন পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তান এটাকে তাদের সম্পদ দাবি করে তাদেরকে বুঝিয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে ভারতের কাছে। বলা হয়েছে, পাকিস্তানের মুম্বই কনসুলেটের আবাসিক ভবন হিসেবে এটি ব্যবহার করা হবে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের বক্তব্যের পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ ফয়সাল বলেছেন, জিন্নাহ হাউসের দাবিদার আমরা। অন্য কেউ এর হেফাজতের দায়িত্ব নেয়ার চেষ্টা করুক এটা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। ভারতীয়রা এরই মধ্যে এটাকে পাকিস্তানি সম্পদ বলে মেনে নিয়েছে। এর স্বপক্ষে আমাদের কাছে রেকর্ড আছে।
তার কাছে সাংবাদিকরা জানতে চান, কর্তারপুর এলাকা ভারতের হাতে তুলে দেয়ার বিনিময়ে কি পাকিস্তান ওই জিন্নাহ হাউস পাওয়ার কথা বিবেচনা করছে। জবাবে ফয়সাল বলেন, একেবারেই না। শিখ সম্প্রদায়ের সুবিধার জন্য তাদেরকে ভিসামুক্ত করিডোর দেয়া হয়েছে। কর্তারপুর করিডোর তো দুই দেশের সরকারের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠকের ফল।
ওদিকে, মুম্বইয়ে বিজেপির এমপি মঙ্গল প্রভাত লোধার কাছে একটি চিঠি লিখেছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের অফিস। তাতে জিন্নাহ হাউসকে আধুনিকায়ন করে, নতুন করে সাজাতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে দিল্লিতে হায়দরাবাদ হাউসের মতো সুযোগ সুবিধা রাখতে হবে এতে। ওই চিঠিতে সুষমা স্বরাজ লিখেছেন, বর্তানে ওই ভবনটি আছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশন্স-এর অধীনে। এটা সেখান থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনার অনুমোদন দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর অফিস। ৫ই ডিসেম্বর লেখা ওই চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, জিন্নাহ হাউসটির মালিকানা ভারতের অধীনে আনার প্রক্রিয়া চলছে।
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর মেয়ে দিনা ওয়াদিয়া ২০০৭ সালে এ ভবনটির মালিকানা দাবি করে মুম্বই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। পরে দিনা ওয়াহিদা মারা যান। এরপর তার ছেলে ও ওয়াদিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান নুসলি নেভিলে ওয়াদিয়া এ সম্পদের মালিকানা বহন করে চলেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ ফয়সাল আরো কিছু বিষয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন। তার কাছে ভারতীয় বন্দি হামিদ নিহাল আনসারিকে মুক্তি দেয়া নিয়ে জানতে চাওয়া হয়। জবাবে ফয়সাল বলেন, অবৈধ উপায়ে পাকিস্তানে সফর করেছিলেন আনসারি। গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে তাকে গ্রেপ্তার করে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। শাস্তি ভোগের পর পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী তাকে তার দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তবে তাকে মুক্তি দেয়ার সঙ্গে কাশ্মিরে পাকিস্তানি নীতির ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না।