এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা প্ল্যাটফরম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের তিন যুগ্ম আহ্বায়ককে মেরে রক্তাক্ত করেছে ছাত্রলীগ। গতকাল বিকাল ৩টার দিকে ‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’ শিরোনামে এক কর্মসূচি পালনের আগ মুহূর্তে এ হামলার ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার তিন শিক্ষার্থী হলেন- সোহরাব হাসান, জসিম উদ্দিন আকাশ ও জালাল আহমেদ। মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সোহানুর রহমান ও শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের স্কুল ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহীদুল শানের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন সোহরাব হাসান। তিনি বলেন, ‘হামলার পর জসীম উদ্দিন আকাশকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার খোঁজ এখনো আমরা জানি না।’ তবে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেছে ছাত্রলীগ।

ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন, ‘কে কাকে মেরেছে- আমি এমন কিছু জানি না। এর সঙ্গে ছাত্রলীগের কারো সম্পৃক্ততা নেই।’ ‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’ কর্মসূচির সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থী ফাহিম রহমান খান পাঠান বলেন, ‘আমরা ৮-১০ জন টিএসসিতে আড্ডা শেষে ক্যাফেটেরিয়াতে খাবার নিয়ে খেতে বসি। তখন আমাদের ওপর ছাত্রলীগের বিভিন্ন হলের পদধারী নেতাসহ প্রায় ৮০-৯০ জন নৃশংসভাবে হামলা করে।’ এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, ‘আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মী ‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’ এর কর্মসূচিতে সমর্থন দিতে গেলে তাদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা করে।

আমরা এ হামলা তীব্র নিন্দা জানাই।

আমরা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানাই। একই সঙ্গে হামলার প্রতিবাদে কোনো কর্মসূচি দেয়া যায় কি না আমরা সভা করে সিদ্ধান্ত নেবো।’ ভুক্তভোগীরা জানান, কর্মসূচি পালনের আগে দুপুর আড়াইটার দিকে টিএসসিতে খেতে বসলে তাদের ওপর ২০-২৫ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী অতর্কিতভাবে হামলা করে। হামলাকারীরা সবাই বিভিন্ন হলের নেতাকর্মী। হামলাকারীরা মারধরের সময় টিএসসির গেট আটকে দেয় বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। মারধরে সোহরাব হাসানের নাক ফেটে রক্ত বের হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এছাড়াও জসিম উদ্দিন আকাশ, জালাল আহমেদসহ আরো কয়েকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। উল্লেখ্য, ‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’ শিরোনামে শিক্ষার্থীরা গত কয়েকদিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নীলক্ষেত, শাহবাগ, কাঁটাবনসহ বিভিন্ন এলাকায় পাঁচ দফা দাবিতে লিফলেট বিতরণ করে। তাদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- নিরাপদ ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা; নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা; নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা; কোটা ও সড়ক আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং হামলাকারীদের বিচার; নির্বিচারে হামলা-মামলা ও গ্রেপ্তার বন্ধ এবং গণমানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version