এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা ও সন্ত্রাসের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। বলেছেন, নির্বাচন ও সন্ত্রাস একসঙ্গে চলতে পারে না। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সদস্যদের পক্ষপাতমূলক আচরণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি ৩০শে ডিসেম্বর ভোটারদের নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানান। গতকাল লিখিত বিবৃতিতে মাহবুব তালুকদার এ আহ্বান জানান। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের ডেকে তিনি এ বিবৃতি দেন। বিবৃতিতে মাহবুব তালুকদার বলেন, স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর একটি সহিংসতামুক্ত পরিবেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন না করতে পারলে এই স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে। আমরা তা হতে দিতে পারি না।

প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন করে কলঙ্কিত হতে চান না- উল্লেখ করে মাহবুব তালুকদার বলেন, নির্বাচন কেবল অংশগ্রহণমূলক হলে হয় না, নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও আইনানুগ হতে হয়। এ ছাড়া, নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য না হলে বিশ্বসভায় আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে আমরা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবো না। প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন করে আমরা কলঙ্কিত হতে চাই না। নির্বাচনে যিনি বা যারাই জয়লাভ করুন, দেশের মানুষ যেন পরাজিত না হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রতি অতি উৎসাহী হয়ে কোনো অনভিপ্রেত আচরণ না করার জন্য আহ্বান জানান মাহবুব তালুকদার। এসব বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা নির্বাচনের সবচেয়ে বড় সহায়ক শক্তি। প্রত্যেকের প্রতি সমআচরণ ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করা আপনাদের কর্তব্য। নির্বাচনে পক্ষপাতমূলক আচরণ থেকে বিরত থাকুন। নিজেদের পোশাকের মর্যাদা ও পবিত্রতা রক্ষা করুন। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের প্রতি মাহবুব তালুকদার বলেন, জাতির ক্রান্তিকালে আপনারা এক ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করছেন। বিবেক সমুন্নত রেখে অনুরাগ ও বিরাগের বশবর্তী না হয়ে সাহসিকতার সঙ্গে আইন অনুযায়ী নিজেদের দায়িত্ব পালন করুন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও সংরক্ষণে আপনাদের অবদান জাতি কৃতজ্ঞতাচিত্তে স্মরণ করবে। কোনো কলুষিত নির্বাচনের দায় জাতি বহন করতে পারে না। ভোটারদের নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে আসার আহ্বান জানান মাহবুব তালুকদার। তিনি বলেন, আপনারা ইচ্ছানুযায়ী প্রার্থীকে ভোট দিন। ভয়ভীতি ও প্রলোভনের কাছে নতি স্বীকার করবেন না। আপনার একটি ভোট গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ। এবারের নির্বাচন আমাদের আত্মসম্মান সমুন্নত রাখার নির্বাচন। এবারের নির্বাচন আগামী প্রজন্ম ও আপনার সন্তানদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্মাণের নির্বাচন।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version