এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : সাদিয়া ইয়াসমিন মিনা। ঢাকা-১৮ আসনের নতুন ভোটার। ভোটের কথা জিজ্ঞেস করতেই তিনি বলেন, জীবনের প্রথম ভোটটা মিস করতে চাই না। মিনার কথা, অপেক্ষায় ছিলাম ভোটার হবো। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবো। অনেক দিনের আশা এ বছর পূর্ণ হলো। ডিজিটাল ভোটার আইডি কার্ডও পেয়েছি। নির্বাচনের পরিবেশ যেমনই হোক ভোট দিতে যাব।

পছন্দের প্রার্থীকে ভোট আমি দেবই। মিনা দক্ষিণখান এলাকার বাসিন্দা। সাদিয়া ইয়াসমিন মিনা বলেন, নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দিতে যাবেন। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে দেশে অনেক মারামারি হচ্ছে।

একপক্ষ আরেক পক্ষকে মাঠে নামতে দিচ্ছে না। এ নিয়ে সংঘর্ষের অনেক খবর শুনতে পাচ্ছি। ক্রমেই এ অবস্থা আরো বাড়ছে। তিনি বলেন, ভোটের দিনেও সংঘর্ষ হতে পারে। আমাদের মধ্যে অনেক ভয় কাজ করছে। তবুও জীবনের প্রথম ভোট দিতে চাই। ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটটা দিয়ে আসব। নির্বাচনে ভোট দেয়ার মনস্থির করেছেন কুষ্টিয়ার মো. আসাদুজ্জামান। এ বছর তার দ্বিতীয়বারের মতো ভোট হলেও গতবারের জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন নি সে। এবার যেকোনো মূল্যে তার ভোটটা দিতে চান পছন্দের প্রার্থীকে। আসাদুজ্জামান বলেন, যদি দেশের নাগরিক হয়ে ভোট দিতে না পারি এর মতো কষ্ট আর হতে পারে না। ভোট দেয়া ন্যায্য অধিকার। ভোটের দিন যেমন পরিবেশ হোক ভোটকেন্দ্রে গিয়ে আমার ভোট আমি দিতে চাই।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে আর মাত্র কয়েকঘণ্টা বাকি। ভোটারদের ভোট আকর্ষণ করতে অভিনব কায়দায় ভোটের মাঠে দাপটের সঙ্গে প্রচারণা চালিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তবে, ভোটের মাঠে বিরোধী রাজনৈতিক দল ছিল প্রায় অনুপস্থিত। বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির বিভিন্ন প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনাও ঘটছে। ফলে নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে এক ধরনের ভীতি কাজ করছে। নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন ভোটাররা। তারপরও ভোটারদের মধ্যে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ভোটের পরিবেশ যেমন হোক ভোট দেয়ার প্রবল আগ্রহ তাদের মধ্যে।

ভোটাররা বলছেন, আমরা দেশের নাগরিক। পরিচয়পত্র দিয়ে ভোট দেয়ার ক্ষমতা দিয়েছে সরকার। তারপরও ভোট না দেয়া ঠিক নয়। ভোট দেয়া জনগণের মৌলিক দায়িত্ব। এমনটিই বলছেন, চাঁদপুর-৫ আসনের হাজিগঞ্জের ভোটার মো. তারিকুল ইসলাম। ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনে জীবনের প্রথম ভোট দেবেন তিনি। যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ে তার ভোটকে অনেক মূল্যবান মনে করছেন তারিকুল। তিনি বলেন, একজন নাগরিকের সবচেয়ে বড় মূল্যবান অস্ত্র হলো তার ভোট। ভোট দিয়েই যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করা সম্ভব। তাই যে করেই হোক ভোটকেন্দ্রে গিয়ে আমার জীবনের ভোটটা প্রয়োগ করতে চাই। পছন্দের প্রার্থীর হাতে দেশের দায়িত্ব তুলে দিতে চাই।

যে ভোটারদের কল্যাণে কাজ করবে। তার মতো এবারের নির্বাচনে প্রথম ভোট দিতে যাচ্ছেন সোহাইল আহমেদ। সিরাজগঞ্জ-১ আসনের আকনাদিঘীর ভোটার তিনি। নতুন ভোটার বলেই ভোট দেয়ার বিষয়ে বেশ আগ্রহী সোহাইল। জীবনের প্রথম ভোট দেয়ার প্রতিক্রিয়ায় সিরাজগঞ্জের এই নতুন ভোটার বলেন, নতুনের প্রতি সবার আগ্রহ বেশি। এ বছর আমি নতুন ভোটার। তাই আমার ভোটটা নিজের হাতেই দিতে চাই। তিনি বলেন, ভোটের দিন পরিবেশ কেমন হবে জানি না। পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের মধ্যে অনেক ভয় কাজ করছে। তারপরও আমার জীবনের প্রথম ভোট মিস করতে চাই না। আমার ভোটে যোগ্য লোকই নির্বাচিত হবে। তাই ভোটটা আমি দেবই।

৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে অনেকটাই উদ্বিগ্ন টাংগাইল-৪ আসনের নতুন ভোটার শাহজাহান মিয়া। ভোটের আগেই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ায় ভোটের দিনের অবস্থা নিয়ে খুব চিন্তিত তিনি। জানেন না ভোটের দিনটা কেমন হবে। নিজের ভোটটা দিতে পারবেন কি না। মারামারি-সংঘাত ছড়িয়ে পড়বে কি না। তারপরও ভোট দেয়ার অনেক ইচ্ছা তার। শাহজাহান বলেন, এ দেশে জনগণের কোনো মূল্য নেই। ভোট আসলে আমাদের দাম বেড়ে যায়। ভোটের জন্য প্রার্থীরা প্রচারণা চালায়। সারা দেশে নির্বাচনের উৎসব চলছে। মাঠে সেনাবাহিনী নেমেছে। আশা করছি নির্বাচনের দিন শান্তিতে পছন্দের প্রার্থীকে প্রথম ভোটটা দিতে পারব। সূত্র : মানবজমিন

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version