এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : আরো আড়াইশত রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা করছে সৌদি আরব। তাদেরকে ফেরত পাঠানো হলে তা হবে এ বছরে দ্বিতীয়বার জোরপূর্বক ফেরত পাঠানোর ঘটনা। ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন নামের অধিকার বিষয়ক গ্রুপকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।

ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশনের প্রচারণা বিষয়ক সমন্বয়কারী নাই সান লুইন বলেছেন, সৌদি আরবে আছেন প্রায় ৩ লাখ রোহিঙ্গা। এদেরকে ফেরত পাঠানো বন্ধ করার জন্য তার সংগঠন সৌদি আরব কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। তিনি আরো বলেছেন, ফেরত পাঠানো রোহিঙ্গারা পৌঁছার পর বাংলাদেশে জেলের মুখোমুখি হবেন। আল জাজিরাকে তিনি আরো বলেন, এসব রোহিঙ্গার বেশির ভাগেরই সৌদি আরবে বসবাসের অনুমোদন আছে (রেসিডেন্সি পারমিট)। তারা বৈধভাবে সৌদি আরবে বসবাস করতে পারেন।

কিন্তু জেদ্দার শুমাইসি বন্দি শিবিরে যেসব রোহিঙ্গাকে আটকে রাখা হয়েছে তাদের সঙ্গে অন্য রোহিঙ্গাদের মতো আচরণ করা হচ্ছে না। উল্টো তাদের সঙ্গে এমন আচরণ করা হচ্ছে যেন, তারা ক্রিমিনাল।

নাই সান লুইনের দেয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায় রোহিঙ্গাদের। এদের অনেকেই বেশ কয়েক বছর আগে সৌদি আরবে গিয়েছেন। তাদেরকে রোববার জেদ্দা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল। তাদেরকে সরাসরি ঢাকাগামী ফ্লাইটে রোববার দিনের শেষে বা সোমবার রাতে তুলে দেয়ার কথা।

নাই সান লুইন আরো বলেন, পাচারকারীদের মাধ্যমে ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত অথবা নেপালের মতো দেশের পাসপোর্ট সংগ্রহ করেছে অনেক রোহিঙ্গা। তা ব্যবহার করে তারা সৌদি আরবে প্রবেশ করেছে।

উল্লেখ্য, ১৯৮২ সালে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়। এর ফলে তারা রাষ্ট্রহীন মানুষ হয়ে পড়েন। ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইনের অধীনে রোহিঙ্গাদেরকে মিয়ানমারের ১৩৫টি জাতিগত পরিচয়ের অধীনে নেয়া হয় নি। এর ফলে তাদের পড়াশোনা, কাজকর্ম, ভ্রমণ, বিয়ে, ভোট দেয়ার অধিকার, ধর্মীয় চর্চা ও স্বাস্থ্যসেবা পড়ে বিধিনিষেধের মধ্যে। এমন অবস্থায় ২০১১ সালের পরে যেসব রোহিঙ্গা সৌদি আরবে প্রবেশ করেছেন তাদেরকে আবাসিক অনুমোদন দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে সৌদি আরব। নাই সান লুইন বলেছেন, এ পরিস্থিতিতে হস্তপক্ষেপ করতে বেশকিছু মানবাধিকার বিষয়ক কর্মী সৌদি কর্তৃপক্ষের প্রতি দু’বছরের বেশি আবেদন করেছে। তিনি নিজেও সৌদি আরব ও কূটনীতিকদের দ্বারস্থ হয়েছেন। তিনি বলেন, এসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পৌঁছার পর তাদের জেল হতে পারে। তাই তাদেরকে ফেরত পাঠানো বন্ধ করা উচিত সৌদি আরবেন। অন্য রোহিঙ্গাদের যেভাবে আবাসন অনুমোদন দেয়া হয়েছে তাদেরকেও সেই একই সুবিধা দেয়া উচিত।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version