এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনওয়া প্রদেশে যুদ্ধ আরম্ভ হতে যাচ্ছে। সেনাবাহিনীর অত্যাচার আর নিপীড়নের শিকার হয়ে ওই প্রদেশের মানুষ প্রতিবাদী হয়ে উঠছে। গড়ে তুলেছে ‘পশতুনিস্তান লিবারেশনে আর্মি’। স্বাধীনতার জন্য শুরু হয়েছে সশস্ত্র আন্দোলন। পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনওয়া প্রদেশের পশতুন জনগোষ্ঠী আর পাকিস্তানের সঙ্গে থাকতে চায় না।

এর মূল কারণে রয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তারা পশতুনদের শত শত মেয়ে ধরে নিয়ে গেছে। বহু অধিকারকর্মী গুম হয়েছেন। এ অবস্থায় আবার ভাঙনের মুখে পড়েছে পাকিস্তান। শুরুতে পশতুনদের ওপর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অত্যাচার নির্যাতন বন্ধে ‘পশতুন তাহাফুজ মুভমেন্ট’ বা পিটিএম নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছিলো তরুণরা। দিন দিন এ সংগঠন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

পশতুন নারীদের অপহরণ করে যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার, নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে খুন, গুম ইত্যাদি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপক অভিযোগের কারণে জনপ্রিয়তা পায় সংগঠনটি। পরে পিটিএম’র একটি অংশ গঠন করে ‘পশতুনিস্তান লিবারেশনে আর্মি’। এ ছাড়া সম্প্রতি পাঞ্জাব পুলিশ চারজনকে বন্দুকযুদ্ধে হত্যা করে। এরপর আরও উত্তাপ ছড়ায় ওই অঞ্চলটিতে। খবর এক্সপ্রেস ট্রিউবিয়নের।

চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি ‘পিটিএম ইন পাকিস্তান: অ্যানাদার বাংলাদেশ ইন মেকিং?’ শিরোনামে একটি কলাম প্রকাশ করে আল-জাজিরা। পাকিস্তানের সাংবাদিক তাহা সিদ্দিকি ওই কলামে জানান, পশতুনের জনপ্রিয় তরুণ নেতা নকিবুল্লাহ মেহসুদকে হত্যার পর স্বাধীকার আন্দোলন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে খাইবার পাখতুনওয়ায়। আর এদের দমনে উঠেপড়ে লেগেছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী।

২০১৮ সালে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নকিবুল্লাহ মেহসুদ নিহত হন। চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি তাকে নির্দোষ ঘোষণা করেছেন পাকিস্তানের আদালত।

কলামে তাহা সিদ্দিকি বলেন, ‘সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ করার পরিবর্তে পাক সামরিক বাহিনীর অভিযানে নির্দোষ মানুষকে শিকারে পরিণত করা হচ্ছে। পাকিস্তানজুড়ে পশতুনদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে; যদিও পশতুনরাই সেখানে সন্ত্রাসবাদের শিকার।’

১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানেও একই ধরনের অধিকার আদায়ের আন্দোলন শুরু হয়েছিল, যা শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হয়ে যাওয়ার আন্দোলনে রূপ নেয় মন্তব্য করে তাহা সিদ্দিকি বলেন, ্এরপর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়।

৫০ বছর পরে এখন মনে হচ্ছে, পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী ইতিহাস থেকে অনেক কিছুই শিক্ষা নেয়নি মন্তব্য করে সিদ্দিকি বলেন, একই ধরনের ভুলের পুনরাবৃত্তি করতে যাচ্ছে তারা, যা ১৯৭০ সালের মতো পাকিস্তানের জন্য অনেক ব্যথা, রক্ত বন্যা ও অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

এদিকে পাকিস্তানের এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের ভেটেরান্স (ভিওপি) বলেছে যে পশতুন তাহাফুজ মুভমেন্ট (পিটিএম) একটি বিরোধী রাষ্ট্রীয় গোষ্ঠী। এটি পাকিস্তানকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসাবে দেখতে চায়।

বেটেরান্স আরও বলেছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রধান লক্ষবস্তু পশতুনিস্তান লিবারেল আর্মি। শনিবারের এক বিবৃতিতে সংস্থাটি এ মন্তব্য করে।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version