এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : ইপিজেডে ট্রেড ইউনিয়ন করতে পারবেন শ্রমিকরা। তাদের শ্রমিক কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন করার বিধান রেখে গত ৩রা ডিসেম্বর মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন-২০১৮’ অনুমোদন দেয়া হয়। এরপর থেকে এটি
অধ্যাদেশ আকারে চলছিল। এখন অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করা হচ্ছে। আজ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠেয় মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে ‘বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন-২০১৯’ অনুমোদনের জন্য উঠবে। অনুমোদন মিললেই এটি জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে আইন আকারে অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হবে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠানো আইনে, শ্রমিক কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন করতে ৩০ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ সমর্থন নেয়ার বিধান করা হচ্ছে। আর ধর্মঘট করার জন্য দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন প্রয়োজন পড়বে।

২০০৬ সালের মূল শ্রম আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে এবং আইএলও, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রেরও কিছু অবজারভেশন ছিল আইনকে একটু শ্রমবান্ধব করার। সেই দাবিতেই এটাকে শ্রমিকদের জন্য ফেভারেবল করে মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসা হয়েছে। নতুন আইনের বিভিন্ন পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মধ্যে বেপজা’র নিজস্ব পরিদর্শন কার্যক্রমের পাশাপাশি শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের যে অধিদপ্তর আছে তাদেরও এই আইনের আওতায় পরিদর্শন করার সুযোগ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া শ্রমিকদের ধর্মঘট করার ক্ষেত্রে যে তিন-চতুর্থাংশের সমর্থনের বাধ্যবাধকতা ছিল সেটি কমিয়ে দুই-তৃতীয়াংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। শ্রম আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শ্রমিক কল্যাণ সমিতির গঠনতন্ত্র শ্রমিকরা নিজেরা করতে পারবেন, সেই বিধান রাখা হয়েছে। নতুন আইন শ্রমিকদের ধর্মঘট ও লক আউটের অধিকার দেয়া হয়েছে। শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাচিত কর্মকর্তাদের চাকরি সংক্রান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। মালিকদেরও সমিতি করার অধিকার দেয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় অনেক যাচাই বাছাই করে শ্রমিক কল্যাণ সমিতি দিয়েছে। আদতে শ্রমিক কল্যাণ সমিতি মানেই ট্রেড ইউনিয়ন, নামটা ভিন্ন, কিন্তু কাজ একই। শ্রমিকরাও এই নামটি পছন্দ করেছেন। যোগ্য শ্রমিক বলে একটি বিধান ছিল, আগের আইনে সেটি বাদ দেয়া হয়েছে। নতুন আইনে শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিষদের পরবর্তী নির্বাচনের সময় এক বছর থেকে কমিয়ে ৬ মাস করা হয়েছে। এ ছাড়া শ্রমিকদের ইস্তফাজনিত কারণে সার্ভিস বেনিফিট প্রাপ্তি সংক্রান্ত একটি নতুন উপধারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে অবসর গ্রহণের ক্ষেত্রে শ্রমিকরা সার্ভিস বেনিফিট হিসেবে প্রত্যেক বছরের জন্য ৩০ দিনের মূল মজুরির পরিবর্তে ৪৫ দিনের মূল মজুরি পাবেন। এর আগের আইনে নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠানে ৩ মাস পর্যন্ত শ্রমিক সমিতি গঠন নিষিদ্ধ ছিল। সেই বিধানটি নতুন আইন থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। শ্রমিক কল্যাণ সমিতি গঠনের জন্য আগে ১২টি স্টেপ ছিল, এখন কমিয়ে তিনটি করা হয়েছে।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version