শিয়ান বাংলা, ঢাকা : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি মামলা তদন্ত করতে গেলে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির একদল পুলিশের ওপর হামলা করে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা এক এসআইসহ ৪ পুলিশকে মারধর করে দারোগার সরকারি পিস্তল ছিনিয়ে নেয়। রাত ১১টার দিকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিনতাই হওয়া পিস্তলটি উদ্ধার করে। এ সময় হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১ জনকে গ্রেপ্তার করে তারা। শনিবার রাতে উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের টেলাপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রফিকুল আলম জানান, শনিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে ভুলতা ইউনিয়নের বলাইখাঁ এলাকার মাহমুদ কবির তার স্ত্রী মৌটুসীকে নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে এশিয়ান হাইওয়ে বাইপাস সড়কের পোনাব এলাকার মুন্সী ফিলিং স্টেশনের সামনে পৌঁছলে তিনটি মোটরসাইকেলযোগে ৬ জন ছিনতাইকারী তাদের গতি রোধ করে। তারা মাহমুদ কবিরের স্ত্রীকে মারধর করে স্বর্ণের চেইন, নগদ টাকা ও মোবাইলফোন ছিনিয়ে নেয়। মাহমুদ কবির বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে তাকেও পিটিয়ে আহত করে ছিনতাইকারীরা। এসময় তারা ভুলতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি হামজালার লোক বলে জানায়। এ ঘটনায় মাহমুদ কবির ভুলতা পুলিশের কাছে অভিযোগ করলে তার অভিযোগ তদন্তের জন্য এসআই নাদিরুজ্জামানকে তদন্তভার দেয়া হয়।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে এসআই নাদিরুজ্জামান, এএসআই রাশেদুল আলম, এটিএসআই ফারুক ও কনস্টেবল কবিরসহ একদল পুলিশ পাঁচাইখা টেলাপাড়া এলাকায় যায় ঘটনার তদন্তে। সেখানে গিয়ে এসআই নাদিরুজ্জামান ভুলতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি হামজালার সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়ে।
একপর্যায়ে পুলিশ হামজালাকে আটক করে। এখবর ছড়িয়ে পড়লে হামজালার লোকজন তাকে ছাড়িয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নেয়। হামলায় এসআই নাদিরুজ্জামানকে রক্তাক্ত জখমসহ এএসআই রাশেদুল আলম, এটিএসআই ফারুক ও কনস্টেবল কবিরকে জখম করে নাদিরুজ্জামানের সঙ্গে থাকা সরকারি পিস্তলটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে ভুলতা ফাঁড়ি পুলিশ তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করান। রাত সাড়ে ১১টার দিকে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ, ভুলতা ফাঁড়ি পুলিশ টেলাপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিনতাই হওয়া পিস্তলটি উদ্ধার করে। এ ঘটনায় গোলাকান্দাইর নতুন বাজার এলাকার মহিউদ্দিনের ছেলে সুমনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
রূপগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল হক বলেন, ছিনতাইয়ের অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করতে গেলে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে তারা এসআই নাদিরুজ্জামানকে রক্তাক্ত জখমসহ ৪ পুলিশ সদস্যকে শারীরিক আঘাত করে অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়। রাত সাড়ে ১১টায় অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে তল্লাশি চালিয়ে খোয়া যাওয়া অস্ত্রটি উদ্ধার করে। তিনি আরো জানান, পুলিশকে মারধরের ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, পুলিশকে মারধরের বিষয়ে তদন্ত চলছে। অস্ত্রটি ধস্তাধস্তির সময় খোয়া গিয়েছিল নাকি এসআইকে মারধর করে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছিল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।