এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : ৭ই মার্চ শপথ নিচ্ছেন গণফোরামের দুই বিজয়ী প্রার্থী সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ ও মোকাব্বির খান। তাদের দেয়ার চিঠির প্রেক্ষিতে ৭ই মার্চ শপথের তারিখ নির্ধারণ করেছে সংসদ সচিবালয়। এদিকে দল ও জোটের সিদ্ধান্ত অমান্য করে শপথ নিতে যাওয়ায় এই দুই নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে গণফোরাম। এদিকে শপথ না পড়ানোর জন্য স্পিকারকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট চিঠি দেবে বলে জোট সূত্র জানিয়েছে। গতকাল বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

দুই নেতার শপথের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিএনপি মহাসচিব ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মানবজমিনকে বলেন, এই দুই প্রার্থী বিএনপির কেউ না। তাদের শপথ নেয়ার ব্যাপারে আমাদের কিছু জানায়নি। আমরা অফিসিয়ালি কিছু জানি না।

শপথ নেয়ার ব্যাপারটি পত্রিকায় দেখছি। আর যদি শপথ নেয় বলছেন, আসলে যদি বলে তো কিছু নেই। শপথ নিলে নেবে। তারা গণফোরামের সদস্য। ইতিমধ্যে গণফোরাম বলেছে- শপথ নিলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। গতকাল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, একটা বৃহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন হয়েছিল।

যেহেতু আমরা এই নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছি, অতএব বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্টের যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা কেউ সংসদে যাবে না এটা আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল। এখন ঐক্যফ্রন্টের দুইজন সংসদে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্ত এখনো না যাওয়ার পক্ষে। এটা নিয়ে আমাদের আর কোনো মতামত নেই। যেহেতু তারা গণফোরামের প্রার্থী তাই গণফোরামই তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

যে বিধিবিধান আছে এবং ঐক্যফ্রন্টের যে সিদ্ধান্ত আছে সেই প্রেক্ষাপটেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, গণফোরামের দুই প্রার্থী শপথ নিলে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের কোনো টানাপড়েন হবে কিনা এটা এতো আগে বলা যাবে না। আমরা একটা বড় টার্গেট করে ঐক্যফ্রন্ট করেছি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এটার প্রধান এবং বৃহত্তর দল। অতএব এ ব্যাপারে আমি বিশ্বাস করি, যদি কেউ সংসদে যায় তাতে ঐক্যফ্রন্টের কোনো ক্ষতি হবে না। নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, তারা দুইজন গণফোরামের প্রার্থী। শপথ নিলে ঐক্যফ্রন্ট কি করবে সেটা বড় বিষয় না। ব্যবস্থা গ্রহণ করবে তাদের দল। দল বহিষ্কার করলে আইন অনুযায়ী তাদের সংসদ সদস্য পদ বাতিল হওয়ার কথা। কিন্তু এখন তো কত কিছুই হচ্ছে। বেআইনি বিষয় আইনি হয়ে যাচ্ছে। আবার আইনি বিষয় বেআইনি হয়ে যাচ্ছে।

গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসিন মন্টু বলেন, তারা যদি শপথ গ্রহণ করে তাহলে এটা জাতির সঙ্গে বেইমানি হবে। আর এভাবে শপথ গ্রহণ করলে তাদের বিরুদ্ধে দলের পক্ষ থেকে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একাদশ সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ। তিনি বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করেন। অন্যদিকে সিলেট-২ আসন থেকে গণফোরামের দলীয় প্রতীক উদীয়মান সূর্য নিয়ে নির্বাচন করে বিজয়ী হন মোকাব্বির খান। এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হয়েছিলেন প্রয়াত নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদির লুনা। আইনি জটিলতায় তিনি নির্বাচন করতে না পারায় মোকাব্বির খানকে সমর্থন দেয় ঐক্যফ্রন্ট। এদিকে একাদশ সংসদ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বিজয়ী প্রার্থীদের শপথ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version