সাপ্তাহিক ছুটির দিনে গতকাল খুচরা বাজারে অন্য দিনের তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা ছিল বেশি। কিন্তু দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টিতে বাজারে গিয়ে অনেকেই দুর্ভোগে পড়েন। বৃষ্টির কারণে বাজারে সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেয়। তরিতরকারির দাম প্রকারভেদে ওঠানামা করেছে। বাজারে পেঁয়াজের ঝাঁজ কিছুটা কম থাকলেও কাঁচামরিচে ঝাল ছিল বেশি।
পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমে খুচরা বাজারে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিন্তু মরিচে ঝাল বেশি হওয়ায় একলাফে খুচরা বাজারে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেশি বিক্রি হয়েছে। অস্থির কাঁচাবাজের স্বস্তি না থাকায় ক্রেতাদের মধ্যেও এক ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

কাওরানবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত সপ্তাহে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৪৫ টাকা কেজি। গতকাল কিছুটা কমে সেই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩৬ থেকে ৩৮ টাকা। খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। এর আগে হঠাৎ করেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়। খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যেসব বাজারে গত বুধবার দেশী পেঁয়াজের কেজি ৫৫ টাকা বিক্রি হচ্ছিল, তা এখন কমে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর কিছুটা নি¤œমানের দেশী পেঁয়াজ বিক্রি করা হয় ৪০-৪২ টাকা কেজিদরে, যা গত বুধবার ছিল ৫০-৫২ টাকা কেজি। তবে কিছু কিছু বাজারে ভালো মানের দেশী পেঁয়াজের কেজি ৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে, যা গত বুধবার ছিল ৫৫ টাকা কেজি।

পেঁয়াজের দাম কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে সবজি, মাছ ও গোশতের দাম। তবে কাঁচামরিচ ২৫০ গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৫ থেকে ২০ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচামরিচের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। গতকাল কাওরানবাজার, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা, রামপুরা, মালিবাগ, হাজীপাড়া, খিলগাঁও, ফকিরেরপুলসহ রাজধানীর খুচরা বাজারের চিত্র ছিল এরকম। এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জানান, গত সপ্তাহে ২৫০ গ্রাম কাঁচামরিচ বিক্রি করেছি ২০ টাকায়। সেই মরিচ এখন ৩০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। পাইকারিতে দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে আমাদের এমন বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

সবজির বাজারে দেখা গেছে, এখন সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে শসা, টমেটো ও গাজর। বাজারভেদে শসা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। একই দামে বিক্রি হচ্ছে পাকা টমেটো ও গাজর। সপ্তাহের ব্যবধানে শসা ও গাজরের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও টমেটোর দাম কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে কোনো বাজারেই টমেটোর কেজি এক শ’ টাকার নিচে বিক্রি হয়নি। শসা, টমেটো ও গাজরের মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বেশির ভাগ সবজি। গত সপ্তাহের মতো করলা বিক্রি করা হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকা। কাঁকরোল বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। ঢেঁড়সের কেজি বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হয়েছে ঝিঙ্গা, উচ্ছে ও ধুন্দল। এ ছাড়া পটোল বিক্রি হয় ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি, বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি, পেঁপের কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, বরবটির কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা এবং কচুর লতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। সপ্তাহের ব্যবধানে এ সবজিগুলোর দামও অপরিবর্তিত থাকতে দেখা যায়।

এ দিকে গোশতের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির আগের সপ্তাহের মতো ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। পাকিস্তানি কক মুরগি ২২০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি বিক্রি হয়। একই দামে বিক্রি করা হয় লাল লেয়ার মুরগি। গরুর গোশত বাজারভেদে বিক্রি হয় ৫৫০ থেকে ৫৭০ টাকা এবং খাসির গোশত বিক্রি হয়েছে ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি। মাছের বাজারও প্রকারভেদে কমবেশি বিক্রি হয়েছে। খুচরা বাজারে তেলাপিয়া মাছ ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, রুই মাছ ২৮০ থেকে ৬০০ টাকা, পাবদা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, টেংরা ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, শিং ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা এবং চিতল মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়। যদিও পাঙ্গাশ মাছের দাম আগের মতো অপরিবর্তিত রয়েছে।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version