কানাডার ম্যানিটোবা প্রাদেশিক পরিষদের (লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলি) নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চট্টগ্রামের মেয়ে দুর্দানা ইসলাম। আগামী ১০ই সেপ্টেম্বর এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেইন রিভার আসন থেকে প্রদেশটির বর্তমান বিরোধী দল নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনয়ন পেয়েছেন দুর্দানা ইসলাম। এ আসনে মোট জনসংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। এ আসনটি প্রদেশের রাজধানী উইনিপেগ শহর হওয়ায় এটির গুরুত্ব অনেক বেশি।
১৮৭০ সালে ম্যানিটোবা প্রাদেশিক সরকার চালু হওয়ার পর এই প্রথম কোনো বাংলাদেশি প্রার্থী হিসেবে সরাসরি নির্বাচনে লড়ছেন। এর আগে গত বছর কানাডার অন্টারিও প্রদেশ থেকে প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নাগরিক হিসেবে এমপি নির্বাচিত হন ডলি বেগম। দুর্দানা ইসলাম ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯৪ সালে কুমিল্লা বোর্ড থেকে মেধাতালিকায় স্থান লাভ করে এসএসসি পাস করেন।
১৯৯৬ সালে চট্টগ্রাম থেকে এইচএসসি পাস করার পর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কমিপউটার সায়েন্সে ব্যাচেলর ডিগ্রি নেন।
এরপর অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে এনভায়রনমেন্টাল ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টে মাস্টার্স করেন। পরবর্তীতে কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ম্যানিটোবা থেকে পিএইচডি করেন। বর্তমানে উইনিপেগ ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা পেশার পাশাপাশি পরিবেশ নিয়ে কাজ করছেন। তিনি দুই সন্তানের জননী।
দুর্দানা ইসলামের বাবা বাংলাদেশের খ্যাতিমান বংশীবাদক ওস্তাদ আজিজুল ইসলাম। ২০১৭ সালে সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদকে ভূষিত হন তিনি। মা ডা. আঞ্জুমান আরা বেগম একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ। দু’জনেই স্থায়ীভাবে চট্টগ্রামে বসবাস করেন।
তার মায়ের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার সকালে কথা হয় চট্টগ্রামে বড় হওয়া দুর্দানা ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, কানাডায় দুই কক্ষবিশিষ্ট সরকারব্যবস্থা চালু আছে। ফেডারেল ও প্রাদেশিক সরকার। ১০টি প্রদেশের মধ্যে ম্যানিটোবা একটি। ৬ লাখ ৪৭ হাজার ৭৯৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ম্যানিটোবার প্রাদেশিক পরিষদে ৫৭টি সংসদীয় আসন রয়েছে।
দুর্দানা বলেন, নির্বাচিত হলে ম্যানিটোবা প্রদেশের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি সংযোগ ঘটানোর চেষ্টা তিনি করবেন। ম্যানিটোবার গম ও তেল বাংলাদেশে রপ্তানি করা সম্ভব। অন্যদিকে কানাডাতে বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের একটি বড় বাজার রয়েছে। তিনি বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের বাজার আরও প্রসারে সহযোগী ভূমিকা পালন করবেন বলে জানান।
দুর্দানা ইসলাম ইতিমধ্যে তাঁর নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ম্যানিটোবা প্রদেশের বর্তমান সরকার স্বাস্থ্যখাতে অনেক বাজেট কমিয়েছে। তিনি আশা করেন, তাঁর দল ক্ষমতায় এলে স্বাস্থ্যখাতে আরও বাজেট বরাদ্দ বাড়াবে ও শিক্ষাখাতে ব্যাপক উন্নয়ন আনবে।
এর পাশাপাশি তিনি ব্যক্তিগতভাবে পরিবেশ নিয়ে কাজ করবেন। বিশেষ করে গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের ব্যাপারে তিনি দলকে সঙ্গে নিয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেবেন।