সাভারে ধলেশ্বরী নদীতে গোসল করতে নেমে ধানমন্ডি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নিখোঁজ তিন শিক্ষার্থীর লাশ রোববার উদ্ধার করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ঢাকা জোন-৪ এর কমান্ডার আনোয়ারুল হক খবরটি নিশ্চিত করেছেন।
ফায়ার সার্ভিস ঢাকা জোন-৪ এর কমান্ডার আনোয়ারুল হক বলেন, সাভার ব্যাংক টাউন এলাকার শেষ সীমানায় ভাসমান অবস্থায় সকাল পোনে ১১টায় ব্যাংক টাউন এলাকার বাবুল হোসেনের ছেলে আকাশ হোসেন (১৮), দুপুর পৌনে ১টার সময় ঘটনাস্থল থেকে দেড় থেকে দুই কিলোমিটার দূরত্বে বনগাঁয়ের কুন্ডা ব্রিজ এলাকা থেকে ঢাকার আগারগাঁওয়ের তালতলার আনোয়ার হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসানের (১৭) ও বেলা সাড়ে ৩টার সময় বলিয়ারপুর ব্রিজ এলাকা থেকে ষাট ফুট এলাকার রাজনের (১৭) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে পরিবারের উপস্থিতিতে পুলিশের নিকট লাশগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, শনিবার ঢাকার ধানমন্ডির আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণীর ১২ জন শিক্ষার্থীকে সকালে দেরি করে আসায় কলেজে ঢুকতে না দিয়ে প্রবেশদ্বার থেকেই ফেরত পাঠানো হয়। হঠাৎ করে একজন বলে ওঠে- কলেজের এই সময়টা বেড়াতে গেলে কেমন হয়। সবাই রাজি। ছুটল সাভারের বন্ধু আকাশের সাথে তার বাড়ির উদ্দেশে। সাভার গিয়ে ব্যাংক টাউনের ব্রিজ এলাকায় ধলেশ্বরী নদীতে নেমে গোসলে মেতে উঠল তারা।
আর তখনই স্রোতের টানে ভেসে যায় তিনজন। শনিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল অভিযান চালিয়ে লাশ উদ্ধারে ব্যর্থ হলে ওই দিন অভিযান বিরতি দিয়ে রোববার সকাল থেকে পুনরায় অভিযান শুরু করে। পরে স্থানীয় ও স্বজনদের সহযোগিতায় একে একে ৩ টি লাশ ভাসমান অবস্থায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল উদ্ধার করে।
সাভার ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার লিটন আহমদ বলেন, ১২ জন ছাত্র দেরি করায় শনিবার সকালে কলেজে ঢুকতে না পেরে অভিভাবকদের অজান্তে সাভারের ব্যাংক টাউনের বাসিন্দা আকাশের সাথে তার এলাকায় তারা বেড়াতে আসে। ১২ জনের মধ্যে ১১ জন নদীতে গোসল করতে নামে। ওই সময় স্রোতের টানে পাঁচজন ভেসে যায়। অন্য ছয়জন কোনো রকমে পাড়ে উঠতে পারে। স্থানীয় লোকজন পাঁচজনের মধ্যে দুজনকে উদ্ধার করে তাদের একজনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করেন। অন্য তিনজন নিখোঁজ হলে তাদের লাশ রোববার উদ্ধার করা হয়।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে নদীতে গোসল করতে না নামা মোকাদ্দিম জানায়, সে ছাড়া বাকি ১১ বন্ধু নদীতে নামে। কলেজে ঢুকতে না পেরে সরাসরি তারা সাভারে চলে আসে। তবে আকাশের বাড়ি না গিয়ে তারা সরাসরি নদীতে যায়। তার কাছে কলেজের ব্যাগ রেখে ১১ বন্ধু নদীতে নামে। এর মধ্যে কিবরিয়া, হাসিব, ইমন, নাহিদ, রাউফোন ও জিমাম নদী থেকে পাড়ে উঠতে পারলেও ভেসে যায় জিহাদুল, মানিক, আকাশ, রাজন ও মেহেদি। এর মধ্যে জিহাদুল ও মানিককে আশপাশের লোকজন উদ্ধার করতে পারে। বাকী ৩ জন পানিতে তলিয়ে নিখোঁজ হয়।