প্রতারণার অভিযোগে ‘স্বদেশ ওভারসীস’ ও ‘বিদেশ ভ্রমণ’ নামের দু’টি এজেন্সীর চারজনকে আটক করেছে ঢাকা হজ অফিস। সোমবার সকাল ১১টায় তাদের আটক করে হজক্যাম্পের দোতলায় একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। তবে আটককৃত চারজনই নিজেদের নির্দোষ দাবি করে বলেছেন, তারা নিজেরাও হজযাত্রী। এজেন্সী মালিকের প্রতারণার সাথে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এদিকে অভিযুক্ত এজেন্সী দুটির মালিককে আজকের মধ্যেই গ্রেফতার করতে পুলিশ, র‌্যাব ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তা নিচ্ছে হজ অফিস।

জানা যায়, সোমবার সকালে ‘স্বদেশ ওভারসীস’ এবং ‘বিদেশ ভ্রমণ’ নামের দুটি হজ এজেন্সীর মোট ৭০জন হজযাত্রী হজক্যাম্পে এসে জড়ো হন। তারা সব টাকা পরিশোধ করার পরেও কেন এখনো ভিসা পাচ্ছেন না তা জানার জন্য হজ ক্যাম্পের পরিচালকের কাছে গিয়ে অভিযোগ করেন। পরে তাদের সাথে আসা গ্রুপ লিডার আমিরুল ইসলাম, রাকিবুর ইসলাম, আবুল হাসনাত ও হেমায়েত উদ্দিনকে আটক করা হয়। তবে এজেন্সীর প্রতারণার মূল সহযোগী বাপ্পী নামের একজনকে প্রথমে আটক করা হলেও পরে তিনি কৌশলে হজক্যাম্প থেকে পালিয়ে যান।

এদিকে এই দুটি এজেন্সীর প্রায় ৭০ জন হজযাত্রীর হজযাত্রা এখনো অনিশ্চিত। যদিও ভিসা করার সময় আর মাত্র একদিন বাকি আছে। এজেন্সী মালিক এখনো এই হজযাত্রীদের মক্কায় এবং মদিনায় বাড়ি ভাড়ার মোফা সংগ্রহ করেননি।

আশকোনার হজ অফিস সূত্র জানায়, স্বদেশ ওভারসীস (লাইসেন্স নং ১৫৩১) এবং বিদেশ ভ্রমণ (লাইসেন্স নং ৭০১) এ দুটি এজেন্সীর মালিক কেউই এবছর হজে কোনো হাজী পাঠাচ্ছেন না। তবে দুটি এজেন্সীর লাইসেন্সই দোহা নামের এক ব্যক্তির কাছে ভাড়া দিয়েছেন এজেন্সীর মূল মালিক। ফলে বিনা লাইসেন্সে ফটকা কারবারীর মতো কিছু দালাল (এজেন্সীর ভাষায় বলা হয় গ্রুপ লিডার) নিয়োগ করে বড় অংকের মুনাফা করার ফন্দি করেছিল তোহা নামের একজন ট্রাভেল ব্যবসায়ী। কিন্তু তার নিয়োগকৃত টীম লিডারদের কূটচালে তিনিও এখন ধরাশায়ী। ফলে বিপাকে পড়েছেন হজযাত্রীরা।

সূত্র আরো জানায়, স্বদেশ ওভারসীসের নামে ১৬৭ জন হজযাত্রী চূড়ান্ত নিবন্ধন করেছেন। আর ‘বিদেশ ভ্রমণ’ এজেন্সীর নামে নিবন্ধিত হয়েছেন ১২৮ জন হজযাত্রী। বাড়ি বাড়া ও ভিসা বাকি আছেন এখনো ৭০ জন হজযাত্রীর।

এদিকে প্রতারক হজ এজেন্সী স্বদেশ ওভারসীস-এর মালিক খায়রুল ইসলাম ঠাকুর ও বিদেশ ভ্রমণ-এর মালিক উমর ফারুক এবং এই দুটি এজেন্সীর ভাড়াকারী মূলহোতা দোহাকে সোমবারের মধ্যে গ্রেফতার করতে পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতা নিচ্ছে ঢাকা হজ অফিস। তাদের গ্রেফতারে ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছেন তারা।

ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, প্রতারক এই দুটি এজেন্সীর এখনো ৬০ জনের বেশি হজযাত্রী ভিসা পাননি। তারা হজক্যাম্পেই অবস্থান করছেন। সোমবার সকালে পাঁচজনকে আমরা আটক করেছিলাম। এদের একজন পালিয়ে গেছে। বাকি চারজন আমাদের কাছেই আটক আছেন। তবে মূল হোতা দোহা ও এজেন্সী দুটির মালিককে গ্রেফতার করতে আমরা চেষ্টা করছি। এ বিষয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা নিচ্ছি।

এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব (হজ) এস এম মনিরুজ্জামান নয়া দিগন্ত অনলাইনকে জানান, আমরা বার বার এজেন্সীগুলোকে হজযাত্রীর নির্ধারিত ফ্লাইটের এক সপ্তাহ আাগে ভিসা করার নির্দেশনা দিয়েছি। তারপরেও কিছু এজেন্সী গাফিলতি করছে। ৩০ জুলাই মঙ্গলবারের মধ্যে যারা ভিসা করার বাকি থাকবেন সেই সব এজেন্সীর বিরুদ্ধে আমার সরাসরি এ্যাকশনে যাবো।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version