২০২০ সালের মধ্যে পদ্মাসেতুর কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে সময় বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ)। রোববার (১৮ আগস্ট) চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিকে (এমবিইসি) আনুষ্ঠানিকভাবে সময়সীমার ব্যাপারে জানানো হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকৌশলী জানান, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে সেতুর ঠিকদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মেয়াদ শেষ হয়। এরপর কতো সময় বাড়ানো হবে তা নিয়ে চলে বৈঠক আর আলোচনা। এখন ২০২০ সালের মধ্যে সেতুর কাজ সম্পন্ন করার জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এখনি দুই বছর সময় দেওয়া হলে কাজ ধীরগতিতে চলবে। এসব বিষয় বিবেচনা করে এক বছর সময় দেওয়া হয়েছে। কাজের অগ্রগতি দেখে পরবর্তীতে আরও বাড়তি সময় দেওয়া হতে পারে।
পদ্মাসেতুর প্রকৌশল সূত্রে জানা যায়, সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে ২০১৪ সালে। আর সেতুটির নকশা প্রণয়ন করা হয় তারও দুই বছর আগে। কিন্তু কাজ শুরু করতে গিয়ে ১১টি পিলারের পাইলিং নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়। এক বছরের বেশি সময় ধরে আটকে থাকে এসব পিলারের কাজ। এরপর থেকেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেতুর কাজ সম্পন্ন করা নিয়ে দেখা দেয় সংশয়।
প্রকৌশলীরা বলছেন, নকশা জটিলতার সমাধান আসতে বেশি সময় অতিবাহিত হওয়ায় ঠিকাদার নির্দিষ্ট সময়ে কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি। ঠিকদারকে চূড়ান্ত নকশা দিতে দেরি হওয়ার সময় এখানে যোগ হয়েছে।
জানা যায়, সর্বশেষ চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে পদ্মাসেতুর ৬ ও ৭ নম্বর পিলারের নকশা সমাধানের মাধ্যমে শেষ হয় নকশা জটিলতা। এরআগে, ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি সেতুর ৮, ১০, ১১, ২৬, ২৭ নম্বর পিলারের নকশা চূড়ান্ত অনুমোদন হয় ও অক্টোবর মাসের শেষের দিকে চূড়ান্ত হয় ২৯, ৩০, ৩১ ও ৩২ নম্বর পিলারের নকশা। চলতি বছরের জুলাই মাসে শেষ হয় পদ্মাসেতুর সব পিলারের পাইল ড্রাইভিংয়ের কাজ। সেতুর মোট ৪২টি পিলারের মধ্যে প্রস্তুত ৩১টি পিলার এবং বাকি ১১টি পিলারের কাজ চলমান আছে। ৪১টি স্প্যানের মধ্যে ১৪টি স্প্যান বসানোর মাধ্যমে দৃশ্যমান হয়েছে ২১০০ মিটার (২.১ কিলোমিটার)।
উল্লেখ্য, পুরো সেতুতে ২ হাজার ৯৩১টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে। আর রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে ২ হাজার ৯৫৯টি। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সেতু নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।