কাশ্মীর পরিস্থিতি ‘খুব নিবিড়ভাবে’ ওয়াশিংটন পর্যবেক্ষণ করলেও ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশই যদি চায় তাহলে কাশ্মীর ইস্যুতে ‘সহায়তা করতে প্রস্তুত’ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউস থেকে এ কথা জানানো হয়েছে। এ খবর দিয়ে ভারতের সরকারি বার্তা সংস্থা পিটিআই বলছে, জম্মু কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল সংক্রান্ত  সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল ও জম্মু-কাশ্মীরকে দুটি ইউনিয়ন টেরিটোরিতে ভাগ করার ভারতীয় সিদ্ধান্তে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এরই মধ্যে পাকিস্তান জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনে যোগাযোগ করেছে। তারা এ সমস্যায় সমাধান চাইছে।

কিন্তু ভারত জম্মু-কাশ্মীরকে দ্বিপক্ষীয় ইস্যু হিসেবে আখ্যায়িত করে। তারা চায় না এতে তৃতীয় কোনো পক্ষ যুক্ত হোক। ওদিকে সপ্তাহান্তে ফ্রান্সে জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন। সেখানে যোগ দিচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। ওই বৈঠকের ফাঁকে এই দু’নেতার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় ইস্যুতে বৈঠক হতে পারে। তার আগে হোয়াইট হাউসের একজন সিনিয়র প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেছেন, কাশ্মীর পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র। আমরা অব্যাহতভাবে সবাইকে শান্ত থাকা, বিরত থাকা ও বাগাড়ম্বরতা এড়িয়ে চলার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

ভারত বলছে, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করা তাদের আভ্যন্তরীণ ইস্যু। একই সঙ্গে পাকিস্তানকে বাস্তবতা মেনে নিতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তবে হোয়াইট হাউসের ওই কর্মকর্তার মতে, কাশ্মীর পরিস্থিতিতে খুব বেশি নজর দিয়েছেন ট্রাম্প। কারণ, জম্মু-কাশ্মীরের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপর বড় প্রভাব পড়তে পারে। ওই কর্মকর্তা আরো বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, উভয়পক্ষ যদি উত্তেজনা প্রশমনের আগ্রহ দেখায় তাহলে তিনি সহায়তা করতে প্রস্তুত। কিন্তু আমরা এরই মধ্যে জানি যে, ভারত মধ্যস্থতা করার জন্য কোনো অনুরোধ করেনি। ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ফ্রান্সে মোদির সঙ্গে বৈঠকের সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানতে চাইতে পারেন যে, মোদির সিদ্ধান্তের পর আঞ্চলিক উত্তেজনা কমিয়ে আনার জন্য তিনি কি করতে পারেন। কিভাবে কাশ্মীরে মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখানো যায়। কারণ, ভারত সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ। তাদের ভূমিকা আছে এতে। এর আগে মঙ্গলবার ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর ইস্যু সমাধানে মধ্যস্থতা অথবা কিছু একটা করতে আগ্রহী।

কিন্তু নয়া দিল্লি পরিষ্কার করে বলে দিয়েছে, কাশ্মীর হলো ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় ইস্যু। এতে তৃতীয় পক্ষের কোনো ভূমিকা নেই। এমন প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প আশা করেন, সব পক্ষের মধ্যে সংলাপ হওয়া দরকার। কাশ্মীরে যোগাযোগে যে অচলাবস্থা রয়েছে তা তুলে নেয়া উচিত। কাশ্মীরিদের চলাচলে বিধিনিষেধ তুলে নেয়া উচিত। বিক্ষোভ দমন থেকে বিরত থাকা উচিত। এ ছাড়া ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশের নেতাদের বন্ধু। হোয়াইট হাউসের ওই কর্মকর্তা বলেন, সুনির্দিষ্টভাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চান নিয়ন্ত্রণ রেখা দিয়ে জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ বন্ধ করুক পাকিস্তান।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version