এর আগে গতকাল বুধবার তার জামিন প্রশ্নে রুলের ওপর শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (আজ) রায়ের জন্য দিন ধার্য করা হয়।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো: সারোয়ার হোসাইন বাপ্পী।

এ সময় আদালত কক্ষে থাকা জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসরুল হক চৌধুরী জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন।

শুনানিতে আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, কিছু দিন আগে (মিন্নির) বিয়ে হয়। তার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। সে একজন নারী। পুলিশ বলছে, তদন্ত শেষ পর্যায়ে। তাই জামিন চাইছি। জামিন দিলে তদন্ত বাধাগ্রস্ত করা কোনো সুযোগ নেই।

নয়ন বন্ডের সাথে টেলিফোনে মিন্নির কথোপকথনের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগে বিষয়ে এ আইনজীবী বলেন, পত্রিকায় এসেছে, নয়ন বন্ডের সাথে পুলিশের ৭৭ বার কথা হয়েছে। একজন এসআই আসাদের সাথে ১০১ মিনিট ২৪ সেকেন্ড কথা হয়েছে নয়ন বন্ডের। নয়ন বন্ড তো পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতাদের সৃষ্টি। অথচ এখন সেই দোষ আমাদের ওপর চাপানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, মামলার এজাহারভুক্ত সব আসামিকে এখনো গ্রেফতার করেনি পুলিশ। অথচ মিন্নিকে নিয়ে তাদের যত তোড়জোড়।

এ আইনজীবী শুনানিকালে রিফাতকে কোপানোর ভিডিও ফুটেজ আদালতে দাখিল করে বলেন, এই ভিডিও ফুটেজ পুলিশ ১১টি খণ্ডে ভাগ করেছে। সিসিটিভি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা। সেই ফুটেজ কীভাবে ভাইরাল ও প্রচার হলো? এটা একটা অপরাধ। এজন্য তো তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা নেয়া যায়।

জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনসুরুল হক চৌধুরীর বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা বললেন, তদন্ত শেষ পর্যায়ে। টিভিতে দেখেছি, মিন্নির বিরুদ্ধে সরাসরি আঘাত করার অভিযোগ নেই।

তিনি বলেন, মেয়েটির বয়স কম। বলা হচ্ছে ১৯ বছর। ভালোভাবে পরীক্ষা করলে হয়তো দেখা যাবে ১৮ বছরের কম। তাছাড়া মেয়েটি তার স্বামীকে হারিয়েছে। তাই এ পর্যায়ে তাকে জামিন দিলে তদন্ত বাধাগ্রস্ত হবে বলে মনে করি না।

শুনানিতে আদালত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক হুমায়ুন কবিরের বক্তব্য জানতে চান। জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, তদন্ত শেষ পর্যায়ে। আজ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু হাইকোর্টে আসার কারণে তা দেয়া যায়নি।

আদালত তার কাছে জানতে চান, নয়ন বন্ড নামের আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে কি-না? জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, তাকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান পরিচালনা করা হয়। সন্ত্রাসীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তাই তাকে গ্রেফতার করা যায়নি।

এ সময় আদালতের দুই বিচারপতি মামলার সিডি (কেস ডকেট) দেখেন। এরপর তা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে দেখতে বলেন।

মামলার সিডি দেখার পর আদালত বলেন, এটা কি দেখে মনে হয় যে মিন্নি দোষ স্বীকার করেছে? আমরা তো দেখছি যে সব এড়িয়ে গেছে। জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, প্রাথমিকভাবে দোষ স্বীকার করেছে বলেই প্রতীয়মান হয়।

আদালত বলেন, আপনার দেয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন। মিন্নি ঘটনায় দোষ স্বীকার করেছে কি-না? এসপি সাহেব বলছেন, করেছে। মিন্নি স্বীকার করেছে বলে তার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন।

আদালত বলেন, যত বড় জায়গা, যত বড় দায়িত্ব, তাকে ততটা সচেতন থাকতে হয়।

এর আগে ২০ আগস্ট এক সপ্তাহের রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। একইসাথে ২৮ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে সিডি (কেস ডকেট) নিয়ে হাইকোর্টে হাজির হতে বলা হয়। এছাড়া মিন্নির সংশ্লিষ্টতার বিষয় জানিয়ে করা সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে পুলিশ সুপারকে (এসপি) লিখিত ব্যাখ্যা দিতেও বলা হয়।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version