বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে সঙ্গে নিয়েই শেখ হাসিনা এদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন এবং তাদের গৃহপালিত বিরোধী দল বানিয়েছেন।
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।
রোববার সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা এরশাদের জন্য শোক প্রস্তাবের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৮২ সালে এরশাদকে ক্ষমতা দখল করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। এ কারণেই তিনি খালেদা জিয়াকে শুধু দু’টি বাড়িই নয়, নগদ ১০ লাখ টাকাসহ অনেক সুযোগ-সুবিধা দিয়েছিলেন।
এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) সংসদে এ ধরনের অসত্য কথা প্রায়ই বলেন। যে কথার কোনো ভিত্তি নেই। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় না। বরং সত্য হচ্ছে এটাই একজন নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে সরিয়ে দিয়ে এরশাদ যখন রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন, তখন তিনি (শেখ হাসিনা) ভারত সীমান্তে বলেছিলেন, আই অ্যাম নট আনহ্যাপি, অর্থাৎ তিনি অখুশি নন। পরবর্তীকালে তার কাজ দেখেই আমরা বুঝতে পারি, তিনি এরশাদকে সঙ্গে নিয়েই এই দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছেন, মানুষের অধিকারকে কেড়ে নিয়েছেন। বরাবরই তিনি এরশাদকে সঙ্গে নিয়ে জোট করেছেন। তাদের সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্রকে হত্যা করে ওই পার্টিকে বিরোধী দলে বসিয়েছেন। যেটাকে আমরা সবসময় বলি, এরশাদ ছিলেন শেখ হাসিনার গৃহপালিত বিরোধী দলীয় নেতা।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পুন:প্রবর্তক ও আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার ছিলেন জিয়াউর রহমান। আজকের গণতন্ত্রের অন্যতম সেনানী যিনি আজীবন গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন, সেই খালেদা জিয়াকে অবৈধ দখলদার সরকার বেআইনিভাবে কারাগারে আটকে রেখেছে। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। আজকের এই দিনে মহিলা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আল্লাহর কাছে এই দোয়া করছি, আল্লাহ তাকে যেন অবিলম্বে মুক্ত করেন। আমাদের মাঝে নেতৃত্ব দিয়ে দেশ ও গণতন্ত্রকে আবার মুক্ত করতে পারেন।
পরে বিকাল তিনটায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর র‌্যালি বের করে মহিলা দল। র‌্যালিটি নাইটেঙ্গেল মোড় হয়ে আবার নয়াপল্টনে এসে শেষ হয়। র‌্যালির আগে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য বক্তব্য রাখেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী। বক্তব্যে খন্দকার মোশাররফ বলেন, সংসদে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জিয়াউর রহমানের সরকার নাকি অবৈধ ছিল। আমরা পরিস্কার ভাষায় বলতে চাই জিয়াউর রহমানের সরকার যদি অবৈধ হয় তাহলে এই সরকারের সবকিছুই অবৈধ। তিনি এই সরকারের মতো রাতের ভোটে নির্বাচিত হননি। এই সরকারতো রাতের ভোটে নির্বাচিত সরকার। যারা এই দেশে গণতন্ত্র হত্যা করেছে তাদের মুখে এমন কথা মানায় না। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি নূর জাহান ইয়াসমিন, সহ-সভাপতি জেবা খান, ?যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, ঢাকা মহানগর উত্তরের সহ-সভাপতি মেহেরুন্নেসা হক, সাধারণ সম্পাদক আমেনা খাতুন, যুগ্ম-সম্পাদক রাবেয়া আলম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রাজিয়া আলিম, সাধারণ সম্পাদক শামসুন্নাহার ভূইয়া, যুগ্ম-সম্পাদক রোকেয়া চৌধুরী বেবী প্রমুখ।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version