আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আবাসন সংকট ও গণরুম সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ভিসির বাসভবনে থাকার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের গনরুমে অবস্থান করা শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সদস্য তানভীর হাসান সৈকত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেন।
আজ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে আয়োজিত ছাত্র সমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেয়া হয়। গণরুম সমস্যা সমাধান ও নবীন শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে ভর্তির দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলের গণরুমের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
ডাকসু সদস্য সৈকত ভিসিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি যদি আমাদের গণরুম সমস্যা সমাধানের জন্য আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করেন, তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যত গণরুমবাসী শিক্ষার্থী আছে, যারা গণরুমে থাকে, তারা সবাই গিয়ে আপনার বাসায় উঠবো।
ভিসির বাসভবনে ওঠার হুঁশিয়ারিতে জোর দিয়ে সৈকত বলেন, এখান থেকে বলছি, ১৫ দিন সময়। ১৫ দিন থেকে একদিনও এদিক-ওদিক হবে না। ১৫ দিনের মধ্যে যদি গণরুম সমস্যা সমাধানের জন্য কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ না নিয়ে থাকেন তাহলে ১৫ দিন পরে এই গণরুমবাসী শিক্ষার্থীরা আপনার বাসায় গিয়ে উঠবে।
ভিসিকে উদ্দেশ্য সৈকত আরও বলেন, কীরকম অভিভাবক হয়েছেন আপনি? একটা সন্তান না ঘুমানো পর্যন্ত অভিভাবকের ঘুম আসা উচিত না। সেখানে সন্তানরা না ঘুমিয়ে রাস্তায় রাত্রি যাপন করে, মসজিদে ঘুমায়, না ঘুমিয়ে পরের দিন সকালে ক্লাস করে। তাদের কথা চিন্তা না করে আপনি কিভাবে এসি রুমে ঘুমাচ্ছেন?
এ সময় ক্যাম্পাসের সক্রিয় ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতারা ব্যক্তিগত রাজনীতি নিয়েই ব্যস্ত বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সৈকত।
এছাড়া গণরুম সমস্যা সমাধানে ডাকসুর নেতাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
ছাত্র সমাবেশে উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলের গণরুমের শিক্ষার্থীরা গণরুম সমস্যার সমাধান ও ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে আগত নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আমরা এখন চুপসে গেছি, জ্ঞানশূন্য কালো মাছ’, ‘গণরুমের বঞ্চনা, মানি না মানবো না’, প্রথম বর্ষ থেকে বৈধ সিটের অধিকার চাই’ ইত্যাদি লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
উল্লেখ্য, ডাকসু নির্বাচনের সময় প্রায় প্রতিটি সংগঠনের নেতারা তাদের ইশতেহারে গণরুম সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু ছয় মাসেও এই সমস্যা সমাধানে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার প্রতিবাদ হিসেবে গত ১লা সেপ্টেম্বর থেকে নিজের বৈধ সিট ছেড়ে দিয়ে গণরুমে থাকছেন ডাকসু সদস্য সৈকত। গত ৩রা সেপ্টেম্বর সাময়িকভাবে গণরুম সমস্যা সমাধানে কয়েকটি প্রস্তাব সংবলিত একটি স্মারকলিপিও ভিসির কাছে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এখনও গণরুম সমস্যার সমাধানে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ায় ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন এই নেতা।