বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রহণযোগ্য নতুন ব্রেক্সিট পরিকল্পনা প্রস্তাবের আল্টিমেটাম দিয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ)। অন্যথায়, চলতি মাসের শেষের দিকে অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে ব্রেক্সিট নিয়ে নতুন করে কোনো আলোচনায় বসবে না তারা। ব্রেক্সিট আলোচনায় ইউরোপীয়ান পরিষদের প্রধান আলোচনাকারী মিশেল বার্নিয়ার বৃহস্পতিবার রাতে এই আল্টিমেটামের কথা জানান। ইইউ’র নতুন এই আল্টিমেটাম জনসনকে চরম বিপাকে ফেলে দিয়েছে। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ব্রেক্সিট চুক্তি নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে তার জন্য। এ খবর দিয়েছে দ্য টাইমস।
খবরে বলা হয়, আগামী ১৭ অক্টোবর ইউরোপীয় পরিষদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সম্মেলনটিতে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে জনসনের। এর আগে ১১ অক্টোবরের মধ্যে নতুন ব্রেক্সিট পরিকল্পনা উপস্থাপন করতে হবে জনসনকে।
এ বিষয়ে এক ইউরোপীয় রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের আগামী সপ্তাহের মধ্যেই নিশ্চিত করতে হবে যে, সম্মেলনের আগে আলোচনা করার জন্য আমাদের কাছে একটি প্রস্তাব থাকবে কিনা।
এদিকে, আলোচনার রাস্তা খোলা রাখলেও বৃটেনের ব্রেক্সিট কৌশল নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ইইউ’র শীর্ষ নেতারা। ইউরোপীয় পরিষদের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড টাস্ক বলেছেন, ইইউ স¤পূর্ণভাবে আয়ারল্যান্ডের পক্ষে থাকবে। জনসন আয়ারল্যান্ড সীমান্তে নতুন একটি কাস্টমস স্থাপনের দাবি জানানোর পর এমনটা জানান টাস্ক। এতে করে আয়ারল্যান্ড ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের মধ্যে ব্রেক্সিটের পর পণ্য আনা-নেয়ায় তল্লাশি প্রক্রিয়া চালু হবে। যদিও বর্তমানে উভয় দেশের মধ্যে তল্লাসি ছারাই পণ্য আনা-নেয়া হয়।
টাস্ক বলেন, বরিস জনসনের কাছে আমার বার্তা হচ্ছে, আমরা আলোচনায় ইচ্ছুক কিন্তু তাদের বর্তমান পরিকল্পনাউ সন্তুষ্ট নই। আইরিশ প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকারের সঙ্গে এক ফোনালাপ শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
জনসনের নতুন পরিকল্পনা
বৃহস্পতিবার জনসন জানান, ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ইইউ কর্মকর্তাদের সন্তুষ্ট করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত, বর্তমান চুক্তি অনুসারে, ৩১ অক্টোবরে থেকে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। জনসনের নতুন পরিকল্পনা অনুসারে, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড (বৃটেনের অংশ) প্রাণী, খাদ্য ও প্রস্তুতকৃত পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে ইইউ’র একক বাজারের নিয়ম মেনে চলবে। প্রতি চার বছর পর পর নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের সরকার পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে ইইউ’র একক বাজারের সঙ্গে থাকতে চায় কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে ও চাইলে বাজার ছেড়ে চলে আসতে পারবে বা নতুন করে সামিল হতে পারবে। তবে সার্বিকভাবে ২০২১ সালের মধ্যে ইইউ’র একক বাজার ছাড়তে হবে তাদের। তখন কেবল পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে একক বাজার ব্যবহার করবে তারা। ওই বছর বৃটেনও ইইউ’র একক বাজার ছেড়ে যাবে। বৃটেন ও ইইউ’র মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড সীমান্ত থেকে কিছুটা দূরে ইলেকট্রনিক পেপারওয়ার্ক ও হালকা শারীরিক তল্লাশি চালু হবে।
কিন্তু জনসনের এই প্রস্তাব অগ্রহণযোগ্য বলে জানিয়েছেন ইইউ কর্মকর্তারা। তারা জনসনকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এর চেয়ে ভাল কোনো চুক্তি প্রস্তাবের আহ্বান জানিয়েছে।