প্রধানমন্ত্রীর জেদ আর হিংসার কারণেই বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গে বলেন, আগের সফরে প্রধানমন্ত্রী তিস্তার আধা লিটার পানিও আনতে পারেন নাই। সমতার ভিত্তিতে আদায় দূরে থাক ভারতের কাছ থেকে শেখ হাসিনা একটা কানাকড়িও আদায় করতে পারেননি। অথচ প্রধানমন্ত্রী নিজমুখেই বলেছেন, ‘আমরা ভারতকে অনেক কিছুই দিয়েছি।’কিন্তু কি দিয়েছেন তা জনগণ এখনো জানেনা। জনগণ শুধু জানে ভারত থেকে কিছু আদায় করতে শেখ হাসিনা ব্যর্থ হয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে এক বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবীতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা মহানগর পশ্চিমের উদ্যোগে এই মিছিল বের হয়। নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি কাকরাইলের নাইটিংগেল মোড় হয়ে আবার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে মিছিলে উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা মহানগর পশ্চিমের সভাপতি কামরুজ্জামান জুয়েল, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ রাজিব আহমেদ, সহ-সভাপতি মাহামুদুল হাসান বসুনিয়া, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সজীব আহমেদ রানা সহ বিভিন্ন থানা ও কলেজের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সহ চার শতাধিক নেতা-কর্মী।

মিছিল শেষে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবীতে ছাত্রদল ঢাকা মহানগর পশ্চিমের এই বিশাল মিছিলের আওয়াজ স্বৈরাচারের বক্ষে কম্পন ধরাবে। এভাবে ছাত্ররা রাস্তায় নেমে আসলে এই নিষ্ঠুর স্বৈরসরকারের পতন হতে আর বেশী সময় লাগবেনা।

প্রধানমন্ত্রীর দিল্লী সফর নিয়ে তিনি বলেন, শুস্ক মৌসুমে পানি কম পাওয়ার কারণে বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে সেচকার্য, প্রাণী বৈচিত্র, জি-কে প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নিম্ন অববাহিকার অনেক ভেতরে লবণাক্ত পানি ঢুকে পড়ছে। এ বিপর্যয় এড়াতে আরেকটি গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণের জন্য ফিজিবিলিটি স্ট্যাডিও সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু মাসখানেক আগে ভারতের সচিব এসে এই ব্যারেজ নির্মাণে ভারতের ক্ষতির দিক কিংবা লাভ হলে তাতে ভারতের অংশীদারিত্বের বিষয়ে আলোচনা করেছেন। কিন্তু ফারাক্কা ব্যারেজ নির্মাণের সময় কী এরকম স্ট্যাডি করা হয়েছিল? প্রধানমন্ত্রী কী এসব প্রশ্ন করতে পারবেন।

রিজভী প্রশ্ন রেখে বলেন, কোনো কোনো মন্ত্রী অতি উৎসাহী হয়ে বলছেন, বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রী কিংবা ভাই-বোনের। কিন্তু কে স্বামী কে স্ত্রী বা কে বোন কে ভাই সেটি উল্লেখ করেননি-জনগণও এটি জানতে চায়। আমরা বিশ্বাস করি বন্ধু রাষ্ট্রের কাছ থেকে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করে সমতার ভিত্তিতে লেনদেন সম্ভব। কিন্তু নতজানু পররাষ্ট্রনীতি অবলম্বন করলে কেউই পাত্তা দেয়না।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে শেখ হাসিনার ‘নো কম্প্রোমাইজ’বলাতেই প্রমাণিত হয় বেগম খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার জেদ ও প্রতিহিংসার কারণেই কারাগারে বন্দী হয়ে আছেন। সেক্ষেত্রে আইন ও বিচারিক প্রক্রিয়া কেবল মুখোশমাত্র। বেগম খালেদা জিয়ার বিয়োগান্তক পরিণতি না ঘটানো পর্যন্ত শেখ হাসিনার প্রতিহিংসা পূরণ হবেনা। একারণেই বিনা অপরাধে বেগম জিয়াকে ধুকে ধুকে মারার জন্য তাঁকে বন্দী করে ষড়যন্ত্রের নিষ্ঠুর ছক আঁটা হচ্ছে। তবে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রকে বাঁচানোর শর্তই হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি। একারণেই তরুণদের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version