জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের প্রধান আবু বকর আল বাগদাদি মারা যাওয়ার খবরে সংশয় প্রকাশ করেছে রাশিয়া। রাশিয়া মনে করে বাগদাদি যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হন নি। বাগদাদি নিহত হওয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প যে ঘোষণা দিয়েছেন রোববার, সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে রাশিয়ার।  ট্রাম্প দাবি করেছেন, শনিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের স্পেশাল ফোর্স সিরিয়াতে বাগদাদির অবস্থানে অভিযান চালানোর পর তিনি আত্মহত্যা করেছেন তিন সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে। ট্রাম্প আরো বলেছেন, খেলাফত কায়েম করা এই নেতা একটি টানেলের ভিতর বিস্ফোরকের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে চিৎকার করতে করতে কুকুরের মতো মারা গেছেন। বৃটিশ একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ এ খবর দিয়ে জানাচ্ছে রাশিয়ার মেজর জেনারেল ইগোর কোনাশেনকভ যুক্তরাষ্ট্রের ওই বক্তব্যের সঙ্গে একমত হতে পারছেন না।

রাশিয়ার রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ সংস্থা রিয়া নভোস্তি জানাচ্ছে, মেজর জেনারেল ইগোর বলেছেন, সিরিয়ার ইদলিব শহরে যুক্তরাষ্ট্র বা জোটবাহিনী আকাশ থেকে কোনোও হামলা চালায় নি। যেখানে বাগদাদির অবস্থানস্থল সেখানে কোনো অভিযান চালানো হয় নি। অন্যদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, অন্য দেশগুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ওই মিশন সম্পর্কে সাংঘর্ষিক তথ্য পাওয়া গেছে।

এ নিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ওই অভিযানে সরাসরি অংশ নিয়েছিল যেসব অংশীদার ও দেশ তাদের সবার কাছ থেকেই বিতর্কিত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এতে অভিযানের বৈধতা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। এর বাস্তবতা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। আর সফলতা নিয়ে তো আরো বেশি সন্দেহ। ওদিকে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দমিত্রি পেসকভ রিয়া নভোস্তিকে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির পক্ষেই থাকবেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সব কথা বলে দিয়েছে।

এর আগে রোববার হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তাতে তিনি বলেন, বাগদাদি ছিলেন একজন নৃশংস খুনি। তিনি ছিলেন ভয়াবহ ও সহিংস। তিনি মারা গেছেন ভয়াবহতার মধ্য দিয়ে আর্তনাদ করতে করতে এবং চিৎকার করতে করতে। বাগদাদি মারা গেছেন কুকুরের মতো। কাপুরুষের মতো। বিশ্ব এখন অধিক নিরাপদ হয়েছে। ট্রাম্প আরো বলেন, এই সন্ত্রাসীর দেহ বিস্ফোরণের ভয়াবহতায় ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। ডিএনএ পরীক্ষা করে তাকে সনাক্ত করা হয়েছে।  তবে তার অন্য ১১ টি সন্তান এই বিস্ফোরণ থেকে রেহাই পেয়েছে এবং তারা নিরাপদ আছে। ২০০৩ সালে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের পরে প্রথম সক্রিয় হন আল বাগদাদি। এরপর তাকে রাখা হয়েছিল আবু গ্রাইবে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দিশিবিরে। পরে ক্যাম্প বুক্কায়।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version