সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন বিমান হামলায় অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দা ও উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন। মঙ্গলবারের এ হামলায় সরকারি বাহিনী নিয়ন্ত্রিত আলেপ্পোর পশ্চিমে কফার তাল গ্রামে ছয়টি শিশুসহ আটজনের এক পরিবারের সবাই নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। এর পাশাপাশি ইদলিব প্রদেশের দক্ষিণ-পূর্বে মারদাবেশে আরো ৯ বেসামরিক নিহত হয়েছে।

সরকারবিরোধীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে বিদ্রোহীদের হটিয়ে দিতে সিরিয়ার সেনাবাহিনী বড় ধরনের একটি অভিযান শুরু করেছে। এই অভিযানে ইরানের মিলিশিয়া বাহিনীগুলোও তাদের সঙ্গে আছে। এর সঙ্গে রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন বিমান হামলা যোগ হওয়ায় ওই এলাকা থেকে হাজার হাজার লোক তুরস্কের সীমান্তের দিকে পালিয়ে যাচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

কফার তালে নিহত পরিবারটির এক স্বজনের আহাজারির ভয়েস রেকর্ড রয়টার্সের কাছে পাঠানো হয়েছে, তাতে আবু ইয়াসের নামে ৭১ বছরের এক বৃদ্ধকে বলতে শোনা গেছে, ‘আল্লাহ সব জালেমের ওপর প্রতিশোধ নেবেন। আমার পরিবারের আর কেউ রইল না, সবাই চলে গেল।’

ইদলিবের গ্রামাঞ্চলে বিদ্রোহীদের অবস্থানগুলোর ওপর রাশিয়া ও সিরিয়ার যুদ্ধবিমানের অপরাপর হামলায় আরো অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। ডিসেম্বরে ইদলিবে আশ্রয় নেয়া বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী। এই অভিযানে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ও ইরানের মিলিশিয়া বাহিনীগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

বিমান হামলার পাশাপাশি রাশিয়া স্থলেও বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করেছে বলে জানা গেছে। সম্মিলিত অভিযানে এসব বাহিনী বিদ্রোহী অধিকৃত এলাকার অনেক ভেতরে ঢুকে পড়েছে আর এতে ওই এলাকার অনেক ছোট ছোট শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, হাসপাতাল ও স্কুলও রক্ষা পায়নি বলে জানিয়েছে উদ্ধারকর্মী ও ত্রাণ সংস্থাগুলো।

অপর দিকে বেসামরিকদের ওপর নির্বিচার বিমান হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে মস্কো ও দামেস্ক। তারা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে দাবি করে এবং বিদ্রোহীরা আলেপ্পো শহরের বেসামরিকদের ওপর হামলা জোরদার করেছে বলে অভিযোগ করেছে।

সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, আলেপ্পোর একটি আবাসিক এলাকায় ‘বিদ্রোহীদের’ রকেট হামলায় দুই নারী ও একটি শিশু নিহত হয়েছে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদবিরোধী বিদ্রোহীদের বোঝাতে ‘সন্ত্রাসী’ পদটি ব্যবহার করে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। সূত্র : রয়টার্স।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version