স্টাফ রিপোর্টার 

ওয়েবারের জেনারেল ম্যানেজার তারেকের সাথে কোন্দলের কারনে তার লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাসীরা গত শনিবার ওই কোম্পানীর ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমানকে বাসা থেকে উঠিয়ে নিয়ে গেছে। চাকুরীকালীন ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমানকে অন্যায়ভাবে একটি কাজ করে দিতে বলেছিলো তারেক কিন্তু মাহবুবুর রহমান তা করতে রাজি হয়নি। আর সে কারনেই ওই কর্মকর্তা মাহবুবকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে সন্ত্রাসী দিয়ে ১০ কোটি টাকা দাবী করে।

জানা গেছে, ওয়েবারের এমডি এবং জেনারেল ম্যানেজার তারেক চাকরীর পাশাপাশি পিডিবি থেকে আমদানীকৃত বিভিন্ন যন্ত্রাংশ বাইরে বিক্রি করে ব্যবসা করতো। ওই ব্যবসা করতে গিয়ে তাকে কোম্পানীর ইঞ্জিনিয়ার ও বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সাহায্য প্রয়োজন হতো। তারই অংশ হিসেবে এক সময় তারেক, ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমানকে একটি কাজের জন্য স্বাক্ষর দিতে বলে। ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমানের ওই স্বাক্ষরের কারনে তারেক ওয়েবারের প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্নসাৎ করতে পারতো। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষর দিতে রাজি না হওয়ায় তারেক ক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমানের গ্রামের বাড়ি পূর্বগ্রামের কয়েতপাড়ায়। কয়েতপাড়া ইউনিয়নের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কেন্দ্রিয় হকার্সলীগের সেক্রেটারী জায়েদ আলী এবং চনপাড়ার ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার বজলুর লোকজন এলাকায় সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। ওয়েবারের তারেক ওই সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়েই ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমানকে শনিবার জায়েদ আলীর অফিসে নিয়ে আসে। মাহবুবকে ধরে নিয়ে আসার সময় তার চাচাতো ভাই চন্দন, কিছু বন্ধু ও প্রতিবেশিরা তার সাথে ওই অফিসে আসে। সেখানে জায়েদ আলী ওয়েবারের পক্ষ হয়ে তাদের ব্যবসার ক্ষতিপূরন হিসেবে মাহবুবের কাছে ১০ কোটি টাকা দাবী করে। মাহবুব তার প্রতিবাদ করে টাকা দিতে অস্বীকার করে। সেসময় পাশে থাকা ওয়েবারের তারেক রেগে মাহবুবের গায়ে ধাক্কা দিয়ে বলে তুই আমাদের ১০ কোটি টাকা ক্ষতি করেছিস। তোকে আমি আজ মেরে ফেলবো। দেখি কে তোকে আজ বাঁচাতে পারে। তার কথা শেষ না হতেই সন্ত্রাসী বাহিনীর একজন মাহবুবকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। পাশে থাকা মাহবুবের চাচাতো ভাই চন্দন তাকে রক্ষা করতে এলে তার হাতে লাঠির আঘাত লাগে। প্রতিবাদে চন্দন ওই আক্রমনকারীকে ধাক্কা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয় । এক পর্যায়ে লাঠির আঘাতে চন্দনের মাথায় লাগলে সে মাটিতে পড়ে যায়। সবাই তার দিকে নজর দিলে মাহবুব দৌড়ে ওই অফিস থেকে পালিয়ে যায়। পরে মাহবুব স্থানীয় পুলিশ ফাড়িতে ঘটনার বিষয়ে জিডি করতে গেলে তারা তা নিতে অস্বীকার করে। তাকে ধরতে ওই দিন রাতে সন্ত্রাসী বাহিনী তার বাড়িতে গিয়ে না পেয়ে হামলা চালায় এবং ভাংচুর করে।  এমনকি পরের দিন স্থানীয় সংসদ সদস্যকে বিষয়টি জানাতে গেলে সে তার সাথে দেখা করেনি।

ওই ঘটনার পরের দিন ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমানকে রুপসী নৌকা ঘাটে একা পেয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী তাকে মেরে ফেলার জন্য তার উপর হামলা চালায়। হামলায় তার মাথা ও কাধে প্রচন্ড আঘাত লাগলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তার ও আশেপাশের মানুষের আর্তচিৎকারে রুপসী বাজারের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে। লোকজন তাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে সাবাসপুর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেও সন্ত্রাসীরা তার উপর হামলা চালাতে গেলে হাসপাতালের ডাক্তার ও কর্মকর্তারা তাকে লুকিয়ে রাখে।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version