দিল্লিতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে শুরু হওয়া সংঘর্ষ থেকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় রূপ নেয়া সহিংসতায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪২ জনে পৌঁছেছে। এতে আহত হয়েছেন আরো ২০০ জন। পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, বাড়িঘর, দোকানপাট ও যানবাহন। ভাংচুর করা হয়েছে মসজিদ, মাদ্রাসা ও স্কুলে। টানা কয়েকদিন উত্তেজনাকর পরিস্থিতির পর শহরটিতে অপেক্ষাকৃত শান্ত পরিবেশ বিরাজ করেছে। স্থানীয় মসজিদগুলোয় শান্তির আহ্বান জানানো হয়েছে। সংঘাতের সময় নিষ্ক্রিয়তার দায়ে অভিযুক্ত দিল্লি পুলিশ এদিন জনগণ ও সংবাদকর্মীদের প্রতি বক্তব্য দিতে আহ্বান জানিয়েছে। এ খবর দিয়েছে দ্য হিন্দু।

খবরে বলা হয়, শুক্রবার দিল্লির উত্তরাংশের মসজিদগুলোয় শান্তি ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন ধর্মীয় নেতারা।

এক ঘোষণায় মসজিদগুলো জনগণের প্রতি শান্তি রক্ষা করতে ও গুজবে কান না দিতে আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া, সন্দেহজন ব্যক্তিদের সম্পর্কে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে ঘোষণায়।

এদিকে, গুরু তেজ হাসপাতালে শুক্রবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় দাঙ্গায় জখম হওয়া চার ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২ জনে। গত এক সপ্তাহে হাসপাতালটি দাঙ্গায় নিহত হওয়া ২৫ জনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এছাড়া, আরো ১৩ জন আহত অবস্থায় ভর্তি হওয়ার পর মারা গেছেন। অন্যদিকে লোক নায়েক হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে এমন আরো তিন জনের। জাগ প্রকাশ হাসপাতালে মারা গেছেন একজন।

শুক্রবার শহরজুড়ে কড়া নিরাপত্তা জারি রেখেছে পুলিশ ও  আধাসামরিক বাহিনীগুলো। জুম্মার নামাজ উপলক্ষে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কিছু এলাকায় জীবনযাত্রা খানিকটা স্বাভাবিক হওয়া শুরু করলেও, বেশিরভাগ জায়গায়ই বন্ধ রয়েছে দোকানপাট। বিরাজ করছে চাপা উত্তেজনা। সোমবার নিরাপত্তা রক্ষায় মোতায়েন করা হয় ৭ হাজার আধাসামরিক সেনা।

দিল্লির সহিংসতায় কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও পুলিশের গাফিলতি তীব্রভাবে সমালোচিত হয়েছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। এ নিয়ে দেয়া এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এসব সমালোচনা ‘ভুল ও অসত্য’। বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র সহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও সংগঠনগুলোকে দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য না করতে আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, সহিংসতার সময় দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয় থাকার ও কিছু ক্ষেত্রে দাঙ্গাকারীদের সঙ্গে সমম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ ওঠেছে। এই বাহিনীটি দেশের সবচেয়ে সমৃদ্ধ পুলিশ বাহিনী হিসেবে পরিচিত। এটি সরাসরি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে জবাবদিহিতা করে। সহিংসতা থামাতে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার জন্য সমালোচিত হয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সভাপতি অমিত শাহও। এছাড়া, দাঙ্গা নিয়ে অগ্রাহ্যতার অভিযোগে নিন্দিত হয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। এ সহিংসতা নিয়ে প্রথম মুখ খোলেন তিন দিন পর। ততদিনে প্রাণ হারিয়েছেন ২২ জন মানুষ। এসব কারণে সরকারের সমালোচনা করেছে ইউএস কমিশন ফর ইন্টারন্যাশনাল রেলিজিয়াস ফ্রিডম, যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক নেতা ও পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটি, অর্গানাইজেশন ফর ইসলামিক কোঅপারেশন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয়,

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version