নতুন লেখক হিসেবে একটি বই লেখা শুরু করলেই তা থেকে সফলতা পাওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। এ জন্য প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম। ছাড় দিতে হবে অনেক বিষয়। প্রথম বই থেকেই আর্থিক লাভের আশা করা যাবে না। এ বিষয়ে জানার আছে আরো অনেক খুঁটিনাটি।

সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি : বই রচনার পূর্বে নিজের সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার প্রয়োজন রয়েছে। এ জন্য চিন্তা করে নিতে হবে যে, হাজার হাজার বই প্রকাশিত হয়। এতসব বইয়ের ভিড়ে কিভাবে আপনার বইটি পাঠকপ্রিয়তা পাবে। এ জন্য প্রথমেই প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা যেমন-আকর্ষণীয় নাম, কাহিনী, বিষয়বস্তুর ভিন্নতা কিংবা অন্য কোন বিষয়ে জোর দেয়া।
পরিকল্পনা : যদি কখনো বই না লিখেন তাহলে হয়ত মনে করবেন,লেখা শুরু করলেই আপনার হাতে যা আসে, তা থেকেই একটি উপন্যাস হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে বিষয়টা অত সহজ নয়। প্রথমেই আপনার লেখার প্লট ঠিক করতে হবে। মূল কাঠামো দাঁড় করানোর পর তা কয়েকটি অধ্যায়ে ভাগ করুন। এরপর কোন অধ্যায়ে কয়টি চরিত্র থাকবে, তা ঠিক করুন।
সংশোধন : প্রথম অবস্থায় সম্পূর্ণ বইটি লেখার পর আপনার হাতে যা আসবে তা মোটেও প্রকাশযোগ্য হবে না। এরপর আপনার কাজ হবে পা-ুলিপি সংশোধন করা। এ জন্য লেখাগুলো বারবার পড়ে তা ঠিকঠাক করে নিতে হবে। এছাড়াও সম্পূর্ণ কাজটি শেষ করে অন্য কারো কাছে দেয়ার আগে মাসখানেক বিরতি নিতে পারেন। মাসশেষে পা-ুলিপি পড়া শুরু করলে তাতে কিছুটা নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে পড়ার অনুভূতি হবে। সে সময় কোথাও খটকা লাগলে তা দ্রুতমার্ক করে রাখুন এবং প্রয়োজনীয় সংশোধন করুন।
নিয়মিত লেখার অভ্যাস : যাদের লেখালেখির অভ্যাস নেই, তাদের পক্ষে কোন বই লেখা মোটেও সহজ কাজ নয়।
এ জন্য প্রয়োজন যথাযথ লেখার অভ্যাস গড়ে তোলা। প্রতিদিন পাঁচশ থেকে এক হাজার শব্দ লেখার মাধ্যমে এ অনুশীলন শুরু করা যেতে পারে।
দৃষ্টিনন্দন মোড়ক : বইয়ের ভেতরের বিষয়বস্তু যেমন আকর্ষণীয় হতে হবে তেমনি মোড়কটাও হওয়া চাই চমকপ্রদ ও মনোহর। বিশেষ করে পাঠক আকর্ষণ করার জন্য দৃষ্টিনন্দন মোড়কের কোন বিকল্প নেই। আর এ ক্ষেত্রে রুচির পরিচয় দিতে হবে লেখককেই।
প্রুফ রিডারের সহায়তা গ্রহণ : আপনি যে বানানে লেখেন তা বর্তমানে প্রচলিত বানান নাও হতে পারে। এ ক্ষেত্রে আপনার বইতে মানসম্মত বানানের বিষয়টি হেলাফেলা করার কোন উপায় নেই। আর তাই কোনভাবেই ভাল প্রুফ রিডারকে না দেখিয়ে বই প্রকাশের কথা চিন্তা করবেন না। আপনি যদি প্রফেশনালভাবে কোনকিছু করতে চান তাহলে তাতে কোন ঘাটতি না রাখাই ভালো।
প্রচারণা : ভালো বইও পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ নাও করতে পারে।
এক্ষেত্রে প্রচার-প্রচারণার কোন বিকল্প নেই। পাঠকের সামনে আপনার বইটি উপস্থাপনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।
এ জন্য ব্যবহার করতে হবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ব্যক্তিগত যোগাযোগসহ সম্ভাব্য সব যোগাযোগের মাধ্যম।
মূলত : লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চাইলে মনে লালিত স্বপ্নের বাস্তব রূপায়ন ঘটাতে হবে। এ জন্য পাড়ি দিতে হবে সাফল্যের দুর্গম সিড়ি। যার জন্য জানা থাকা চাই প্রয়োজনীয় সব বিষয়।
বর্ণিত বিষয়গুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে এ পথে এগিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি আত্মবিশ্বাস ও ধৈর্য্যরে পরীক্ষা দিতে হবে প্রতি পদক্ষেপে। যা আপনাকে নিয়ে যাবে কাক্সিক্ষত গন্তব্যে।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version