এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : টাঙ্গাইলের মধুপুরে যাত্রীবাহী চলন্ত বাসে তরুণী রূপা খাতুনকে ধর্ষণের পর ঘাড় মটকে হত্যার বছরও পেরোয়নি। দ্রুততম সময়ে আলোচিত সেই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের রায়ও হয় কিছুদিন আগে। এই অবস্থায় রাজধানীর অদূরে ধামরাইয়ে চলন্ত বাসে আবারও ঘটল ধর্ষণের ঘটনা। এবার শিকার এক পোশাক শ্রমিক। রোববার রাতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের কেলিয়া কচমচ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ধামরাই পুলিশ জানিয়েছে, বাসের চালকসহ পাঁচজনকে রাতেই গ্রেফতার করেছে। জব্দ করা হয়েছে বাসটি। এ ঘটনায় ধর্ষিতা বাদী হয়ে ধামরাই থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ধর্ষকদের গতকাল সোমবার ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে পুলিশ আদালতে পাঠালে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- বাসচালক চুয়াডাঙ্গা সদরের বাবু মল্লিক (২৪), নীলফামারী জেলার ডিমলার বলরাম (২০), ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার আবদুল আজিজ (৩০), ধামরাইয়ের দক্ষিণ গাওয়াইল গ্রামের সোহেল রানা (২০), একই উপজেলার দক্ষিণ কেলিয়া গ্রামের মকবুল হোসেন (৩৮)।

ধামরাই থানা পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ধামরাইয়ের শ্রীরামপুর গ্রাফিকস টেক্সটাইল কারখানার এক পোশাক শ্রমিক ছুটি হওয়ার পর তার ভাড়া বাসা ইসলামপুরে ফেরার উদ্দেশে রাত ৯টার দিকে শ্রীরামপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রীসেবা পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। বাসটি কালামপুরে আসার পর অন্য যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। পরে বাসটি ঢাকার দিকে না এসে এদিক-ওদিক ঘুরাতে থাকে। পরে আবার ইসলামপুরের দিকে রওনা দিয়ে কেলিয়া এলাকা থেকে আরও তিনজনকে বাসে তোলে। যাত্রীবেশে ওঠা ওই তিনজনসহ বাসের হেলপার ও সুপারভাইজার হঠাৎ ওই পোশাককর্মীকে বাসের পিছন দিকে নিয়ে হাত, মুখ ও পা বেঁধে ফেলে। এরপর তিনজন তাকে ধর্ষণ করে। পরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ধামরাইয়ের কেলিয়া ব্রিজের পশ্চিম পাশে বাস থামিয়ে চালকসহ অন্য দু’জন ধর্ষণ করতে গেলে মুখের বাঁধন খুলে চিৎকার দেয় ধর্ষিতা। এ সময় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে টহলরত ধামরাই থানার এসআই ভজন রায় টের পেয়ে বাসটি ধাওয়া দিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের কেলিয়া ব্রিজের পূর্বপাশ থেকে বাসসহ ধর্ষণকারীদের আটক করেন।

এ ব্যাপারে ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকারিয়া হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাদের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও গ্রেফতার করা হবে।

গত বছরের ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে তরুণী রূপা খাতুন চলন্ত বাসে ধর্ষণের শিকার হন। দুর্বৃত্তরা তাকে ধর্ষণের পর ঘাড় মটকে হত্যা করে টাঙ্গাইলের মধুপুর বন এলাকায় ফেলে যায়। এ ঘটনায় করা মামলার রায়ে আদালত বাসটির চালকসহ চারজনকে ফাঁসির আদেশ ও একজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version