এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার দেশগুলোকে সংযুক্ত করে অর্থনৈতিক বলয় সৃষ্টির জন্য চীনের নেতৃত্বে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) ধারণা ২০১৩ সালে আলোচনায় আসে। এর আওতায় অবকাঠামো ও বিনিয়োগ ঘাটতি দূর করার সুযোগ নিতে পারে বাংলাদেশ। কারণ চীন ও অন্যান্য দেশের বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশ ভারসাম্যপূর্ণ। আর বিআরআইয়ের আওতায় বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলোয় অর্থায়নকারীর ভূমিকা রাখতে চায় স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড। সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বেল্ট অ্যান্ড রোড ২০১৮’ শীর্ষক মিডিয়া সেশনে ব্যাংকটির স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসব মত ব্যক্ত করেন।

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার নাসের এজাজ বিজয়, ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও কান্ট্রি হেড অব গ্লোবাল ব্যাংকিং এনামুল হক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড (চায়না) লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও হেড অব গ্লোবাল করপোরেট অ্যান্ড ইনস্টিটিউশনাল ব্যাংকিং জিন লু এবং দ্য বেল্ট অ্যান্ড রোড স্ট্র্যাটেজি এক্সিকিউশন টিমের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সেবাস্টিয়ান এর মিডিয়া সেশনে বক্তব্য রাখেন।

জিন লু বলেন, বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ নিয়ে আশাবাদী হওয়ার পাঁচটি কারণ রয়েছে। প্রথম কারণ হলো নীতি সংযোগ। দ্বিতীয় কারণ বাণিজ্য। তৃতীয় কারণ অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ সহযোগিতা। এছাড়া অবকাঠামো যোগাযোগ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মতো বিষয় রয়েছে।

অনেক দিনের সম্পর্ক ও বাণিজ্যে বৃহৎ অংশীদার হওয়া সত্ত্বেও প্রতিবেশী অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ কম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে জিন লু বলেন, বিনিয়োগের জন্য অবকাঠামো প্রয়োজন। আরো প্রয়োজন বন্দর অবকাঠামোসহ বিদ্যুতের মতো পরিষেবার নিশ্চয়তা। এগুলো নিশ্চিত হলেই অনেক প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ নিয়ে এগিয়ে আসবে। প্রতিবেশী অনেক দেশের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাবে, বাংলাদেশে অবকাঠামো ও বাজার সক্ষমতা অতটা বড় নয়। তবে তা অনেক ভারসাম্যপূর্ণ। এখানে উৎপাদনশীল খাত আছে। অবকাঠামোও রয়েছে। এখন আবার সরকার হাইটেক খাত নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতে হাইটেক প্রতিষ্ঠানগুলোও বাংলাদেশে আসবে।

নাসের এজাজ বিজয় বলেন, বাণিজ্যের দিক থেকে চীন বাংলাদেশের বৃহৎ অংশীদার। তারা বৃহৎ সরবরাহকারী দেশ। চীনে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সুবিধাভোগী হিসেবে বাংলাদেশে দেশটির পোশাক শিল্প সরে আসতে শুরু করেছে। এমন আরো অনেক শিল্প রয়েছে, যেগুলোর সম্ভাবনা উন্মোচন করা যেতে পারে। এটা খুব স্পষ্ট, বাংলাদেশে অবকাঠামো ঘাটতি রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে অবকাঠামো খাতে অনেক বিনিয়োগ আসতে শুরু করেছে। এজন্য বিপুল পরিমাণ অর্থায়ন প্রয়োজন। খুব বেশি দেশ নেই, যারা এ অর্থের জোগান দেয়ার সক্ষমতা রাখে। চীনের এআইআইবি, চায়না এক্সিম ও চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়ন সক্ষমতা ভালো। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে সহায়তার জন্য এ সক্ষমতা কাজে দেবে। কাজেই এ উদ্যোগে সম্পৃক্ত হলে বাংলাদেশ লাভবান হতে পারে। এক্ষেত্রে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।

এনামুল হক বলেন, বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও বিনিয়োগের ঘাটতি কমিয়ে আনা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের আওতাধীন প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি লেনদেনের অংশ আমরা। চীনের বিনিয়োগের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা দিতে ব্যাংক হিসেবে আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version