এশিয়ানা বাংলা, ঢাকা : খালেদা জিয়াজিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেওয়া হাইকোর্টের জামিনের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি বুধবার (৯ মে) পর্যন্ত মুলতবি করেছেন আদালত।

এর আগে মঙ্গলবার (৮ মে) সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে খালেদা জিয়ার জামিন বিষয়ে আপিলের শুনানি শুরু হয় । প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চে শুনানি চলে।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলী। অন্যদিকে, দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। এছাড়া, রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত আছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

এ মামলায় সকাল থেকেই শুনানি শুরু করেন দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। এরপর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম খালেদা জিয়াকে দেওয়া হাইকোর্টের জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে আপিল শুনানি করেন।

শুনানিতে মাহবুবে আলম মামলার নথি থেকে পাঠ করে আদালতকে বলেন, ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা বিচারিক আদালতে চলাকালে ৬৭টি তারিখের মধ্যে খালেদা জিয়া মাত্র আট দিন হাজির হয়েছিলেন। আবার হাজির হলেও বারবার সময় আবেদন করেছেন। মামলার পাঁচ বছর পর চার্জ গঠন হয়। এরপর তারা কয়েকবার হাইকোর্টে মামলা করে সময় ব্যাহত করেন।’

এ সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যের মাঝে আপত্তি তুলে ধরে বলেন, ‘তিনি রাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি এসব কী পড়ছেন?’ এ পর্যায়ে এজলাসে উপস্থিত বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা উচ্চ স্বরে ইয়েস…ইয়েস বলে জয়নুল আবেদীনকে সমর্থন জানান এবং তারা হৈচৈ শুরু করেন।

তখন অ্যাটর্নি জেনারেল বিচারপতিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘তারা এমন করলে কিভাবে শুনানি করবো?’ তখন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘আপনারা এমন করলে কিন্তু শুনানি করতে পারবো না ‘
পরে আদালতের পরিস্থিতি শান্ত হলে অ্যাটর্নি জেনারেল পুনরায় শুনানি শুরু করেন। এরপর আপিল শুনানি বুধবার (৯ মে) পর্যন্ত মুলতবি করেন আদালত।

প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত অস্থায়ী পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত। রায় ঘোষণার পরপরই তাকে ওই দিন বিকালে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি এখন সেখানেই আছেন।ওই রায়ে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। একইসঙ্গে এ মামলার অপর আসামি তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ বাকি পাঁচ জনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাদের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা জরিমানাও করা হয়।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় অপর মামলাটি করে দুদক। এ মামলায় ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version