এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : নির্বাচনে বিস্ময়কর বিজয়ের পর মালেশিয়ার সপ্তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন ৯২ বছর বয়সী মাহাথির মোহাম্মদ। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ১০ টার কিছুক্ষণ আগে রাজধানী কুয়ালালামপুরের রাজ প্রাসাদে সুলতান মোহাম্মদ তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান।
প্রাসাদ থেকে তার শপথ অনুষ্ঠান টিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। মাহাথিরের পরনে ছিল দেশের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ‘বাজু মালায়ু’ এবং ‘সুরুং’ আর মাথায় ছিল টুপি।
বিশ্বে মাহাথিরই নির্বাচিত হওয়া সবচেয়ে বয়স্ক দেশ নেতা। মালয়েশিয়াকে উন্নতির পথে নিয়ে যাওয়া মাহাথির এবারের সাধারণ নির্বাচনে নিজের সাবেক দলের বিরুদ্ধেই লড়েছেন। যে দলের হয়ে তিনি ২২ বছর ক্ষমতায় ছিলেন, বিরোধী জোটের নেতা হিসেবে সে দলেরই প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাককে ক্ষমতা থেকে টেনে নামালেন তিনি।
এর মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় বারিসান ন্যাসিওনাল (বিএন) জোটের ৬১ বছরের শাসনের অবসান হয়েছে। ১৯৫৭ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে এ জোট একটানা দেশটির ক্ষমতায় ছিল।
এখন বিরোধী জোট থেকে নির্বাচিত হয়ে এসে নতুন করে মালয়েশিয়ার হাল ধরবেন মাহাথির। তার শপথ উপলক্ষে শত শত মানুষ প্রাসাদ অভিমুখী রাস্তায় লাইন ধরে দাঁড়িয়ে দলীয় পতাকা হাতে উল্লাস করেছে।
নির্বাচন কমিশন বুধবার রাতেই মাহাথিরের জোটের জয় ঘোষণা করলেও তার শপথ গ্রহণের সময় নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছিল। তবে মাহাথির বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে শপথ এদিনই হবে বলে জানান। তিনি বলেন, “তাড়াতাড়ি করা জরুরি। আমাদের আজ, এখনই সরকার গঠন করা প্রয়োজন।”
রাজপ্রাসাদও এদিন এক বিবৃতিতে মালয়েশিয়ার সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মাহাথিরের নিয়োগে কোনোরকম দেরী করার কথা নাকচ করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “মহামান্য রাজা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং প্রজাদের ইচ্ছাকে র্দঢ় সমর্থন ও শ্রদ্ধা করেন।”
মাহাথির মোহাম্মদ ১৯৮১ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে কঠোর হাতে দেশ শাসন করেছেন। এরপর ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসেন তারই পছন্দের প্রার্থী নাজিব রাজাক।
কিন্তু প্রায় এক দশকের শাসনামলে রাজাক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার পর তাকে ক্ষমতা থেকে সরাতেই মাহাথিরকে ফের অবসর থেকে রাজনীতিতে ফিরে এসে দেশের হাল ধরতে হল।