এশিয়ান বাংলা ডেস্ক : ইরানের বিরুদ্ধে একতরফাভাবে যুদ্ধ ঘোষণার ক্ষমতা হারালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে একটি বিল পাসের মাধ্যমে এ ক্ষমতা খোয়ালেন তিনি। সর্বসম্মতিক্রমে পাস হওয়া এ বিলে ইরানের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একক সিদ্ধান্তে যুদ্ধ ঘোষণার ক্ষমতা বাতিল করা হয়েছে। বিলটি পাসের কারণে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার জন্য এখন থেকে কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন পড়বে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় প্রতিরক্ষা অনুমোদন আইন-২০১৯-এর অংশ হিসেবে বিলটি পাস হল। ইরানের সঙ্গে সই হওয়া পরমাণু চুক্তি থেকে মার্কিন সরকার বের হয়ে যাওয়ার দুই সপ্তাহ পর প্রতিনিধি পরিষদ বিলটি পাস করল। শুক্রবার এ খবর দিয়েছে ইরানের বার্তা সংস্থা মেহের নিউজ।
প্রতিনিধি পরিষদে বিলটি উত্থাপন করেন ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক দলের মিনেসোতার প্রতিনিধি কেইথ এলিসন। বিলটির পক্ষে জোরালো সমর্থন জানিয়ে স্বাক্ষর করেন ডেমোক্রেটিক দলের আরও পাঁচ নেতা। তারা হলেন, ক্যালিফোর্নিয়ার ১৫তম কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্টের বারবারা লি, ক্যালিফোর্নিয়ার ১৭তম কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্টের রো খান্না, ইলিনয়ের জ্যান শ্যাকোস্কি, ম্যাসাচুসেস্টের জিম ম্যাগগোভার্ন ও নর্থ ক্যারোলিনার নেতা ওয়াল্টার জোন্স।
বিলটি পাসের ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান দলেরও জোর সমর্থন ছিল। এর মধ্য দিয়ে কংগ্রেসের অবস্থান পরিষ্কার হল যে, ইরানের বিরুদ্ধে একক সিদ্ধান্তে প্রেসিডেন্ট যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারেন এমন কোনো আইন থাকা উচিত নয়। ডেমোক্রেটিক নেতা কেইথ এলিসন বলেন, ‘পরমাণু সমঝোতা থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রত্যাহার ও ইরানের সঙ্গে শত্র“তামূলক বক্তব্যের বিরুদ্ধে এ বিল হচ্ছে জোরালো পদক্ষেপ। বিলটি পাসে এ বার্তা দিচ্ছে যে, মার্কিন কংগ্রেস সদস্য ও আমেরিকার জনগণ ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না।’ এ বিলের মধ্য দিয়ে কংগ্রেস যুদ্ধ ঘোষণার ক্ষমতা নিজের হাতে ফিরিয়ে নিল বলেও মন্তব্য করেন এলিসন।
রো খান্না বলেন, ‘ওয়ার পাওয়ার অ্যাক্ট ও সংবিধানে এটা পরিষ্কার যে, আমাদের দেশে সামরিক কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের আগে অবশ্যই কংগ্রেসের অনুমোদন নিতে হবে। ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে যাওয়া হবে অসাংবিধানিক বিষয় ও ব্যয়বহুল।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিলটি পাসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন ও ট্রাম্প প্রশাসনকে এই বার্তা দিচ্ছে যে, যুদ্ধ ও শান্তি ইস্যুতে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা কংগ্রেসের রয়েছে।’ কংগ্রেসের আরেক সদস্য বারবারা লি বলেন, এই সংশোধনীর কারণে আমি খুশি যে, বিলটি পরিষ্কার করেছে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার কর্তৃত্ব ট্রাম্পের হাতে নেই।
একই দিন মাইক পম্পেও সিনেটে বলেন, ইরানের শাসন পরিবর্তনের ইচ্ছা ট্রাম্প প্রশাসনের নেই। ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় রাষ্ট্রের সই হওয়া পরমাণু চুক্তি থেকে মার্কিন সরকার বের হয়ে যাওয়ার দুই সপ্তাহ পর প্রতিনিধি পরিষদে বিলটি পাস হল। পরমাণু চুক্তি থেকে সরে গিয়ে ইরানের ওপর ইতিহাসের সেরা নিষেধাজ্ঞার হুশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প।