এশিয়ান বাংলা স্পোর্টস : দুবাইয়ে বাংলাদেশ-শ্রীলংকা ম্যাচ দিয়ে আজ বসছে এশিয়া কাপের ১৪তম আসর। অভিযানের শুরুতেই চেনা প্রতিপক্ষ। পরস্পরের নাড়ি-নক্ষত্র জানা দু’দলেরই। বাংলাদেশের জন্য সেটা যদি হয় স্বস্তির উপলক্ষ, তবে অস্বস্তির কারণ আছে অনেক।

এবারের আসরে মাশরাফিদের আসল চ্যালেঞ্জটা অন্য জায়গায়। শ্রীলংকা ও আফগানিস্তানের চেয়েও বড় প্রতিপক্ষ হয়ে উঠতে পারে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বৈরী কন্ডিশন ও টুর্নামেন্টের অবিশ্বাস্য ঠাসা সূচি। ব্যস্ত সূচি অবশ্য আসরের ছয় দলের জন্যই সমান বিড়ম্বনার। ওয়ানডে ফরম্যাটের একটি টুর্নামেন্টে ১৪ দিনে ১৩টি ম্যাচ, ভাবা যায়!

এরমধ্যে গ্রুপপর্বে টানা ছয় দিনে ছয়টি ম্যাচ। বি-গ্রুপে বাংলাদেশ ও শ্রীলংকার সঙ্গে রয়েছে আফগানিস্তান। এ-গ্রুপে ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গী বাছাইপর্ব পেরিয়ে আসা হংকং। গ্রুপপর্বে সব দলই খেলবে দুটি করে ম্যাচ।

দুই গ্রুপ থেকে দুটি করে দল উঠবে সুপার ফোর পর্বে। সেখানে চার দলই পরস্পরের মুখোমুখি হবে। প্রতিটি দল খেলবে তিনটি করে ম্যাচ। সুপার ফোরের শীর্ষ দুই দল ২৮ সেপ্টেম্বর মুখোমুখি হবে ফাইনালে। খেলা হবে দুবাই ও আবুধাবিতে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ সর্বশেষ খেলেছে সেই ১৯৯৫ সালে। সাকিব, তামিমদের এখানে ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি ২০ লিগ খেলার অভিজ্ঞতা থাকলেও বর্তমান দলের কেউই আরব আমিরাতে এরআগে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেননি। সেপ্টেম্বরের এই সময়ে সেখানকার উষ্ণ ও আর্দ্র কন্ডিশন কঠিন পরীক্ষা নেবে মাশরাফিদের।

সব ম্যাচ দিবা-রাত্রির হওয়ায় দিনের প্রচণ্ড গরমের সঙ্গে রাতের পর্বের শিশির নিয়েও ভাবতে হবে। এখানেই শেষ নয় বিড়ম্বনার। ২০ সেপ্টেম্বর আবুধাবিতে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচ দিয়ে শেষ হবে গ্রুপপর্বের লড়াই। বি-গ্রুপে রানার্স-আপ হলে পরদিনই দুবাইয়ে সুপার ফোরের ম্যাচে নেমে পড়তে হবে বাংলাদেশকে। অর্থাৎ টানা দুই দিনে ভিন্ন দুটি ভেন্যুতে দুটি ওয়ানডে খেলতে হবে!

আপাতত অবশ্য অত দূরে দৃষ্টি দেয়ার সুযোগ নেই। দুই ম্যাচের একটিতে পা হড়কালে গ্রুপপর্বেই শেষ হয়ে যেতে পারে এশিয়া কাপ অভিযান। ঘরের মাঠে সর্বশেষ তিন আসরের দুটিতে ফাইনালে খেললেও এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সার্বিক রেকর্ড তেমন সুবিধার নয়। ৪২ ম্যাচে মাত্র সাত জয়। এই সাত জয়ের তিনটি আবার টি ২০ ফরম্যাটে।

মাশরাফিদের ভাবনাজুড়ে তাই শুধুই গ্রুপপর্ব। প্রথম পরীক্ষাটা চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শ্রীলংকার বিপক্ষে। যে হাথুরুসিংহে তিন বছর বাংলাদেশ দলের কোচ ছিলেন। তিনি বাংলাদেশে শক্তি ও দুর্বলতার জায়গাগুলো খুব ভালোই জানেন।

একইসঙ্গে হাথুরুর রণকৌশল সম্পর্কেও ভালো ধারণা আছে তামিমদের। এ নিয়ে তাই চিন্তার বিশেষ কিছু নেই। শুধু এ বছরই তিন সংস্করণ মিলিয়ে নয়বার হাথুরুর শ্রীলংকার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। অভিজ্ঞতাটা মিশ্র হলেও সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় একটু হলেও এগিয়ে বাংলাদেশ।

সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকলাব চোট শঙ্কা কাটিয়ে ওঠায় বাংলাদেশ যখন কিছুটা নির্ভার, শ্রীলংকা তখন চোটের থাবায় দলের অন্যতম সেরা দুই ব্যাটসম্যান দিনেশ চান্দিমাল ও দানুশকা গুনাতিলকাকে হারিয়ে বিপাকে।

তবে গ্রুপপর্ব পেরোতে নিজেদের সেরাটা খেলার কোনো বিকল্প দেখছেন না সাকিব, ‘আমাদের মতো গ্রুপের বাকি দুই দলও ভালো ক্রিকেট খেলছে। গ্রুপপর্ব পেরোতে আমাদের তাই সেরা ক্রিকেটই খেলতে হবে। শ্রীলংকা খুব ভালো দল। ম্যাচ জেতানোর মতো বেশ কিছু খেলোয়াড় আছে তাদের। তবে দু-একজনকে নিয়ে না ভেবে তাদের সবার বিপক্ষেই দল হিসেবে ভালো খেলতে হবে আমাদের।’

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version