এশিয়ান বাংলা স্পোর্টস : এশিয়া কাপে গ্রুপের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে ১৩৬ রানে হারের হতাশার মাঝেও আলো খুঁজছিল বাংলাদেশ। শুক্রবার সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে সেটার দেখা পেল কোথায়! গতবারের দুই ফাইনালিস্টের লড়াইয়ের ফলাফলের পুনরাবৃত্তিই হলো আবার। ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভারতের কাছে ৭ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫২ রান করা রোহিত শর্মা আবার খেলেছেন অধিনায়কোচিত ইনিংস। বাংলাদেশ তিনটি উইকেট শিকার করলেও তার ৮৩ রানের অপরাজিত ইনিংসে স্বাচ্ছন্দ্যে জয় পায় ভারত। ১০৪ বল খেলে তিনি মারেন ৫টি চার ও ৩টি ছয়। ৩৬.২ ওভারে ৩ উইকেটে ১৭৪ রান করে তারা।
বড় স্কোর গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। বোলিংয়ে তাই ভালো একটা শুরুর প্রত্যাশা ছিল। যদিও হয়নি তা। শিখর ধাওয়ান ও রোহিত শর্মা দারুণ শুরু শুরু এনে দেন ওপেনিংয়ে। ১০ ওভারে স্কোর ৫০ ছাড়ায় এই জুটি। অবশেষে তাদের প্রতিরোধ ভাঙেন সাকিব। ধাওয়ানকে এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান বাংলাদেশি স্পিনার। আউট হওয়ার আগে ৪০ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলে যান ধাওয়ান। ৪৭ বলের ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ৪ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায়।
বাংলাদেশ আরেকবার উইকেট উদযাপন করে রুবেল হোসেনের সৌজন্যে। তার দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে আম্বাতি রাইডুকে ফেরালেন সাজঘরে। ১০৬ রানে ভারতের দ্বিতীয় উইকেট পায় বাংলাদেশ।
রুবেলের বল রাইডুর ব্যাট ছুঁয়ে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসবন্দি হলেও আম্পায়ার আউট দেননি। বাংলাদেশ রিভিউ নিলে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বদলে যায়। মাত্র ১৩ রানে মাঠ ছাড়েন রাইডু। তারপর রোহিতকে নিয়ে মহেন্দ্র সিং ধোনি দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু লক্ষ্য থেকে ৪ রান দূরে থাকতে মাশরাফি মুর্তজার বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজের ক্যাচ হন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান, ভাঙে ৬৪ রানের জুটি। ৩৭ বলে ৩ চারের ৩৩ রান করেন ধোনি। ভারতের জয় আসে রোহিত ও দিনেশ কার্তিকের অপরাজিত জুটিতে।
তার আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ১৭৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। শেষ দিকে মিরাজ ও মাশরাফির ব্যাটিং দৃঢ়তায় অতদূর পর্যন্ত যেতে পেরেছে টাইগাররা। ব্যাটিং ব্যর্থতার পর বল হাতেও শুরুটা ভালো হয়নি মাশরাফিদের।
টপ অর্ডার ব্যর্থ, পারেনি মিডল অর্ডারও। ভারতের বিপক্ষে দিশেহারা বাংলাদেশ জ্বলে উঠলো লোয়ার অর্ডারে। যেখানে মিরাজ ও মাশরাফির দুটো সময় উপযোগী ইনিংস না থাকলে চরম লজ্জাতেই পড়তে হতো বাংলাদেশকে। ৪৯.১ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে টাইগাররা করেছে ১৭৩ রান।
সত্যিকারের অলরাউন্ডার হয়ে সামনে এলেন এবার মিরাজ। এতদিন দিন বল হাতে দাপট দেখানো দলের প্রয়োজনের সময় ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলেন হাতে। তার চমৎকার ব্যাটিংয়েই বাংলাদেশের স্কোর অতদূর পর্যন্ত গিয়েছে। নয় নম্বরে নেমে খেলেছেন তিনি কার্যকরী ৪২ রানের ইনিংস। ৫০ বলের ইনিংসটি সাজিয়েছেন ২ চার ও ২ ছক্কায়।
অষ্টম উইকেটে মাশরাফির সঙ্গে মিরাজের গড়া ৬৬ রানের জুটিটাই ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ ম্যাচের হাইলাইট। বাংলাদেশ অধিনায়কের অবদানও কম নয় সেখানে, ৩২ বলে তিনি ২ ছক্কায় করেছেন ২৬ রান।
ভারতের পক্ষে সবচেয়ে বেশি ৪টি উইকেট পেয়েছেন এক বছরেরও বেশি সময় পর ওয়ানডেতে ফেরা রবীন্দ্র জাদেজা, ম্যাচসেরাও তিনি। তিনটি করে উইকেট নেন জশপ্রীত বুমরাহ ও ভুবনেশ্বর কুমার।