এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : সংলাপ কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না করতে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ড. কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিটি গতকাল শনিবার বিকালে নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে পৌঁছায়। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে গণফোরাম নেতা রফিকুল ইসলাম পথিক চিঠিটি ইসিতে পৌঁছান। এ সময় বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন। চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর চলমান সংলাপের বিষয়টি উল্লেখ করে বলা হয়, আপনারা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপের বিষয়টি আপনাদের দৃষ্টিতে রয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, ৮ই নভেম্বরের পরে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সংলাপের বিষয়টি আবারো বিবেচনায় রয়েছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আবারও সংলাপে বসতে ইচ্ছুক। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে আপনারা জানিয়েছেন ৪ঠা নভেম্বর কমিশনের বৈঠকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

চিঠিতে সিইসির উদ্দেশ্যে আরও বলা হয়, আপনারা যেহেতু সংলাপের বিষয়টি অবগত আছেন এবং সেদিকে নজর রাখছেন। সেই প্রেক্ষাপটে আমরা মনে করি তফসিল ঘোষণার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়টি চলমান রাজনৈতিক প্রক্রিয়া। এজন্য সংলাপ না হওয়া পর্যন্ত কমিশনের অপেক্ষা করাই শ্রেয়।

তফসিল ঘোষণা নির্বাচনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তফসিল ঘোষণার পরই রাজনৈতিক দলগুলো এবং প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেন। যেকোনো ধরনের নির্বাচনে রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীরা হচ্ছেন অন্যতম স্টেক হোল্ডার। তাদের কর্মকাণ্ড এবং কর্মসূচিকে আমলে নেয়া নির্বাচন কমিশনের মৌলিক দায়িত্ব বলে আমরা মনে করি। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে এবং একটি সম্ভাব্য রাজনৈতিক সমঝোতা একাদশ নির্বাচনসহ দেশের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অনেক গুণগত পরিবর্তন আনতে পারে; যা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য আপনাদের প্রচেষ্টাকেও সহায়তা করবে।

এমতাবস্থায় সংলাপ শেষ হওয়ার পর তফসিল ঘোষণার তারিখ নির্ধারণের অনুরোধ করা হয় চিঠিতে।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ই অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। জোটের পক্ষ থেকে সাত দফা ও ১২টি লক্ষ্য উপস্থাপন করা হয়। ১লা নভেম্বর ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জোট নেতারা তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে সরকারের সঙ্গে সংলাপে বসে।

আবারো সংলাপ চেয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট চিঠি দিতে যাচ্ছে
আবারো প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপ চেয়ে চিঠি দিতে যাচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। আজ দিনের কোনো এক সময় চিঠিটি ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে। গতকাল বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত করেছে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি জানান, আবারো সংলাপ চেয়ে চিঠি দেয়া হবে। আশা করছি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সরকার আমাদের সাত দফা দাবি মেনে নেবেন। এর আগে গত রোববার আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ করার অংশ হিসেবে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কাছে চিঠি পাঠায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। পরদিনই সংলাপে রাজি হওয়ার কথা জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গত বৃহস্পতিবার এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। তবে সংলাপের পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও সরকারের পক্ষ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এ জন্য নতুন করে সংলাপের চিঠি দিতে যাচ্ছে ঐক্যফ্রন্ট।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version