এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সারা দেশে ৭৮৬ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। তবে নিয়মানুযায়ী, যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে তারা ৩ দিনের মধ্যে ইসিতে এ ব্যাপারে আপিল করতে পারবেন। আজ সোমবার আপিল আবেদন গ্রহণ শুরু হবে।

শুনানি চলবে ৬ ডিসেম্বর থেকে টানা ৩ দিন। আপিলে যদি মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল থাকে, সেক্ষেত্রে প্রার্থীরা আদালতে আপিল করতে পারবেন বলে জানান (ইসির) উপসচিব আতিয়ার রহমান।

এর আগে রোববার যাচাই-বাছাই শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তারা এ মনোনয়নপত্র বাতিলের ঘোষণা দেন।

যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে, তাদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী ও এমপিসহ বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থী আছেন। বাতিলের তালিকায় আছেন আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাও।

বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, দণ্ডপ্রাপ্ত দেখিয়ে তাদের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হলেও সরকারপন্থী অনেকের প্রার্থিতা বহাল আছে।

এ প্রক্রিয়ায় সরকারি দলের জয়লাভ এগিয়ে রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ২০ দলীয় জোটের নেতা ও এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ।

ইসির নিয়মানুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই কাজে উপস্থিত ছিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ পুলিশ বিভাগ, ইসির কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ব্যাংক, আয়কর বিভাগ, বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান এবং প্রার্থী বা প্রার্থীদের প্রতিনিধিরা।

রোববার দেশের তিনশ’ আসনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। এ নির্বাচনে অংশ নিতে ৩ হাজার ৬৫ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন।

এতে ৭৮৬ জনের প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় এখন পর্যন্ত প্রার্থী সংখ্যা দাঁড়াল ২ হাজার ২৭৯ জন। সেই হিসাবে ২৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে গেল।

তিনশ’ আসনের মধ্যে ঢাকা-১, বগুড়া-৭, জামালপুর-৪ এবং মানিকগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই। এছাড়া ৩৫টি আসনে দাখিল করা সবার মনোনয়নপত্র টিকে গেছে। কুড়িগ্রাম-৪ আসনে সর্বোচ্চ ১৩ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা।

এ আসনে আরও ১০ প্রার্থী আছেন। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ঢাকা-১৭ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন। এ দুটি আসনে ১১ জন করে প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এর পরও এখন পর্যন্ত ১৬ জন করে প্রার্থী রয়েছেন ওই দুই আসনে।

বাছাই শেষে এখন দেশে সর্বাধিক প্রার্থী কুমিল্লা-৩ আসনে ১৭ জন। ওই আসনেও ১০ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

রোববার রাতে ইসি সূত্র জানায়, রাজনৈতিক দলগুলোর বা কোন দলের কতজন প্রার্থী বাছাইয়ে বাদ পড়েছেন সেই তথ্য পাওয়া যায়নি। ২৮ নভেম্বর ৩৯টি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে ২ হাজার ৫৬৭ জন প্রার্থিতা দাখিল করেছিলেন। বাকি ৪৯৮ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, সারা দেশে যেসব মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে তার বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবেন। তারা রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের সার্টিফায়েড কপিসহ আজ থেকে ৩ দিন আপিল করার সুযোগ পাবেন।

কমিশন ৬ থেকে ৮ ডিসেম্বর শুনানি করে ওইসব আবেদন নিষ্পত্তি করবে।

৮ নভেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। এর ৪ দিন পর পুনরায় তফসিল ঘোষণা করা হয়। পুনঃঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল ২৮ নভেম্বর।

রোববার একই দিনে ৬৬ জন রিটার্নিং সারা দেশের জমা হওয়া সবক’টি মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করেন। ৯ ডিসেম্বর প্রত্যাহারের পর প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করবেন রিটার্নিং অফিসাররা।

১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর শুরু হবে প্রচার। ৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version