এশিয়ান বাংলা, ঢাকা : সংসদ নির্বাচনে ভোটের দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়া হবে না। তবে সেনা সদস্যরা প্রয়োজনে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে পারবে। তবে তাদের সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে। পরিস্থিতি তৈরি হলে তারা হস্তক্ষেপ করতে পারবে। গতকাল শনিবার নির্বাচন ভবনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা এ কথা জানান।

ব্রিফিংয়ে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, কবিতা খানম, ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ও যুগ্ম সচিব এসএম আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর সঙ্গে বৈঠকের পর ইসি সচিব জানিয়েছিলেন, ২৪শে ডিসেম্বর থেকে ২রা জানুয়ারি পর্যন্ত সেনাবাহিনী নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবে। গতকাল ব্রিফিংয়ে সিইসি বলেন, সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়া হবে না। তারা নিজেরা গ্রেপ্তার করতে পারবে।

তাদের সে ক্ষমতা দেয়া আছে। যদি ম্যাজিস্ট্রেট থাকে। যদি কোনো একটা কেন্দ্রে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় তাহলে তাতে তারা হস্তক্ষেপ করতে পারবে। আইন ও সিআরপিসি অনুসারে তারা কাজ করবে। ভোটকেন্দ্রে গণমাধ্যমের কাজের পরিধি সম্পর্কে সিইসি বলেন, নির্বাচন কক্ষের ভেতরে কোনো কিছু লাইভ প্রচার করা যাবে না। বাইরে বারান্দায় এসে লাইভ করা যাবে।

সীমিত আকারে ভোটকক্ষে সাংবাদিকদের যেতে হবে। যেন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে। তিনি বলেন, অনেক লোক গেলে সেখানে দায়িত্ব পালনে অসুবিধা হবে। ভেতরে ছবি তোলা যাবে। কিন্তু গোপন কক্ষে যাওয়া যাবে না। সীমিত আকারে ঠিক কতজন সাংবাদিক কক্ষে প্রবেশ করতে পারবে সে সম্পর্কে কিছু জানাননি। এক্ষেত্রে প্রিজাইডিং অফিসারের নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি। মোবাইল ফোন ব্যবহার প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, ভোট কক্ষের ভেতরে মোবাইল ব্যবহার করতে পারবে না। ভেতরে ছবি তোলা যাবে। লাইভ করা যাবে না। পর্যবেক্ষকদের প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের পৃথক পৃথক নীতিমালা আছে। সেসব মেনেই তারা দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের বিষয়েও এক ধরনের নির্দেশনা।

তারা কেন্দ্রে বেশিক্ষণ থাকতে পারবে না। তারা পর্যবেক্ষণ করবে কিন্তু কোনো ছবি তুলতে বা সম্প্রচার করতে পারবে না। যদি কিছু প্রচার করতে হয় তবে কেন্দ্রের বাইরে এসে প্রচার করতে পারবে। প্রচারণা শুরুর পর আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে কতজনকে জরিমানা করা হয়েছে বা শাস্তি প্রদান করা হয়েছে- জানতে চাইলে সিইসি বলেন, আমাদের কাছে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে। সারা দেশে ১২২টি ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটি করা হয়েছে। এ অভিযোগগুলো তারা তদন্ত করবে। রিটার্নিং অফিসারের কাছে অধিকাংশ দায়িত্ব দেয়া আছে। দেশব্যাপী হওয়ায় এ তথ্য নেই আমাদের কাছে। সিইসি জানান, মোবাইল ব্যাংকিং বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। ইন্টারনেটের গতি কমানোর বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়নি। ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অস্বাভাবিক লেনদেন বন্ধের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান সিইসি। ড. কামালসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা এবং গ্রেপ্তারের বিষয়ে ইসি কোনো পদক্ষেপ নেবে কিনা- জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ড. কামালের ওপর হামলা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা।

তিনি একজন প্রখ্যাত ব্যক্তি। তার ওপর হামলা হওয়াটা কখনো কাঙ্ক্ষিত নয়। এটা ফৌজদারি আইনে অপরাধ হিসেবে যে ব্যবস্থা প্রয়োজন তাই হবে। তারা একটা আবেদন করেছে। এটা আমরা ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারির কাছে পাঠাবো। তারা প্রতিবেদন দিলে আমরা ব্যবস্থা নেব। অন্যান্য জায়গায় হামলায় কি ব্যবস্থা হয়েছে সাংবাদিকদের প্রশ্নে সিইসি বলেন, দু’একদিনের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইজিপির কাছে চিঠি দেব। প্রার্থী এবং রাজনীতির সঙ্গে জড়িতদের বিনা অপরাধে বা ফৌজদারি অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকলে যেন গ্রেপ্তার না করে। অহেতুক হয়রানি কেন হচ্ছে সে সম্পর্কে কিছু বলতে পারবো না। তাদের বিরুদ্ধে হয়তো ফৌজদারি মামলা ছিল আগে থেকেই। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়েছে কি-না জানতে চাইলে নূরুল হুদা বলেন, আমি মনে করি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়েছে। কারণ প্রার্থীরা তাদের প্রচারণা চালাতে পারে। তাদের কাজে কোনো বাধা নেই। স্থানীয়ভাবে কোনো ফৌজদারি অপরাধ ঘটে সেগুলো তারা আমাদের কাছে পাঠালে তদন্ত করা হবে।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version