এশিয়ান বাংলা, স্পোর্টস : আবাহনী কালই উৎসব করতে পারত। বাধা হয়ে দাঁড়াল শেখ জামাল। বিকেএসপিতে প্রাইম দোলেশ্বরের বিপক্ষে ১৮৩ করেও ১০ রানে জিতেছে শেখ জামাল। তাতেই ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট সুপারলিগ গড়াল শেষ রাউন্ডে। খেলাঘরের বিপক্ষে সোমবার মিরপুরে বড় ব্যবধানে জিতেছে আবাহনী। প্রথমে ব্যাট করে ১৫৬ রানে আট উইকেট হারিয়েছিল তারা। সেখান থেকে মেহেদী হাসান মিরাজের হাফ সেঞ্চুরি (৫০) ও তাসকিন আহমেদের (২৬) ব্যাটে ২৪১ রান করেন নাসির হোসেনরা। জবাবে মাত্র ১১৪ রানে অলআউট হয় খেলাঘর। ১২৭ রানে জেতে আবাহনী। বৃহস্পতিবার শেষ রাউন্ডে আবাহনী জিতলেই চ্যাম্পিয়ন হবে। তবে আবাহনী যদি লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে হেরে যায় এবং খেলাঘরের বিপক্ষে শেখ জামাল জিতে যায়, তাহলে চ্যাম্পিয়ন হবে শেখ জামাল। আর যদি আবাহনী ও শেখ জামাল দু’দলই হারে, তবে রূপগঞ্জেরও খানিকটা সুযোগ থাকবে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আবাহনীই। নাসিরের দলের পয়েন্ট ২২, শেখ জামাল ও রূপগঞ্জের সমান ২০ করে। চূড়ান্ত রাউন্ড শেষে তিন দলের পয়েন্ট সমান হলে প্রথমে বিবেচনা করা হবে সর্বোচ্চ জয়, এরপর তিন দলের হেড টু হেড-এ কার জয় বেশি। সেটাও সমান হলে রানরেট বিবেচনা করা হবে। রানরেটে এগিয়ে আবাহনী। তিন দলের জয় সমান। হেড টু হেডে বেশি জয় শেখ জামালের।

খেলাঘরের বিপক্ষে কাল আবাহনীর ম্যাচটিও অনেকে সন্দেহের চোখে দেখছেন। শুরুতে ভালো অবস্থানে থাকলেও আবদুল হালিমের বোলিংয়ে বিপদে পড়ে যায় আবাহনী। মাত্র ১৫৬ রানে আট উইকেট হারায় তারা। এরপরই খেলাঘরের ফিল্ডিং পজিশন ও বোলারদের বোলিং নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয়। দারুণ বোলিং করা আবদুল হালিমকে পাঁচ ওভারের পর আর বোলিংয়ে আনেননি অধিনায়ক নাজিমউদ্দিন। শেষদিকে বৃত্তের বাইরে থাকাও সন্দেহের উদ্রেক করে। মাত্র তিনজন ফিল্ডারের তাসকিন ও মিরাজ কভার দিয়ে শট ও বারবার কাট করলেও এই দুটি পজিশনে ফিল্ডার রাখা হয়নি। এছাড়া ছয়ে ও সাতে আসা দুই বোলার আনজুম আহমেদ ও সাদিকুর রহমানকে টানা ১৮ ওভার বোলিং করিয়েছে খেলাঘর। প্রশ্ন এখানেই। গুঞ্জন রয়েছে যে, খেলাঘর ম্যাচ ছেড়ে দিয়েছে। অবশ্য অধিনায়ক নাজিমউদ্দিন ও কোচ মোহাম্মদ রুহুল ম্যাচ ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। কোচ বলেন, ‘অধিনায়ক কীভাবে ফিল্ডিং সাজিয়েছে আমি তো সেটা বলতে পারব না। অধিনায়কের কাছে শুনেছি ফিল্ডিং অনুযায়ী বোলাররা বল করতে পারেনি। আমরা ইনজুরির কাছে হেরে গেছি।’ দারুণ ব্যাট করেছেন মিরাজ ও তাসকিন। মিরাজ ৪৪ বলে পাঁচ চার ও তিন ছক্কায় ৫০ করে আউট হন। তাসকিন ২৫ বলে করেন ২৬ রান। তার আগে হাফ সেঞ্চুরি (৫৪) করেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল হোসেন শান্ত। আবাহনী ৪৬.৩ ওভারে ২৪১ রানে অলআউট হয়। চারটি উইকেট নেন হালিম।

২৪২ তাড়া করতে নেমে বাজে ব্যাটিং করেছে খেলাঘর। শুরুতে ভালো করতে না পারলেও পরে দারুণ বোলিং করে তিন উইকেট নিয়েছেন মাশরাফি মুর্তজা। ঢাকা লিগ লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটের মর্যাদা

পাওয়ার পর এক আসরে সর্বোচ্চ

উইকেট পেলেন তিনি। ১৫ ম্যাচে তার উইকেট সংখ্যা ৩৮। গত আসরে আবু হায়দার রনির নেয়া ৩৫ উইকেট ছিল আগের সর্বোচ্চ। খেলাঘরের মাত্র চার ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের রান করতে পেরেছেন। দুটি করে উইকেট নেন তাসকিন, মিরাজ ও সন্দীপ রায়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

আবাহনী ও খেলাঘর

আবাহনী ২৪১/১০, ৪৬.৩ ওভারে (এনামুল হক ২৭, নাজমুল হোসেন শান্ত ৫৪, মোহাম্মদ মিঠুন ১৮, নাসির হোসেন ১৫, সানজামুল ইসলাম ২৩, মেহেদী হাসান মিরাজ ৫০, তাসকিন আহমেদ ২৬। আবদুল হালিম ৪/১০)।

খেলাঘর ১১৪/১০, ২৭.৩ ওভারে (রবিউল ইসলাম রবি ২০, মাহিদুল ইসলাম ২৭, আনজুম আহমেদ ২৪, মাসুম খান ২৩*। মাশরাফি ৩/৩২, তাসকিন ২/২৫, নাসির হোসেন ২/৮, সন্দীপ রায় ২/৫)।

ফল : আবাহনী ১২৭ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ : মেহেদী হাসান

মিরাজ (আবাহনী)।

শেখ জামাল ও দোলেশ্বর

শেখ জামাল ১৮৩/১০, ৩৮ ওভারে (সৈকত আলী ১৭, উন্মুক্ত চাঁদ ২৭, পিনাক ঘোষ ২৪, তানভির হায়দার ৪৩*, নুরুল হাসান ২০, জিয়াউর রহমান ৩৯। ফরহাদ রেজা ২/২৪, শরীফউল্লাহ ২/৫২, জাকারিয়া মাসুদ ৩/১০)।

প্রাইম দোলেশ্বর ১৭৩/১০, ৪৮.২ ওভারে (ইমতিয়াজ হোসেন ১৪, ফজলে মাহমুদ ৩৫, মার্শাল আইয়ুব ২৯, আরাফাত সানি ৩৫*, সালাউদ্দিন শাকিল ৩১। নাজমুল ইসলাম ২/৩৭, তানভির হায়দার ৪/৩১)।

ফল : শেখ জামাল ১০ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ : তানভির হায়দার (শেখ জামাল)।

গাজী গ্রুপ ও রূপগঞ্জ

গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ১৫২/১০, ৪৫.৪ ওভারে (মেহেদী হাসান ২১, জহরুল ইসলাম ৩১, জাকের আলী ৩০, নাঈম হাসান ২৩। মোহাম্মদ শহীদ ৪/২৬, পারভেজ রসুল ২/২৭, আসিফ হাসান ২/১৭)।

লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ১৫৩/২, ২২.৫ ওভারে (মোহাম্মদ নাঈম ৪৫, অভিষেক মিত্র ৫৭*, মুশফিকুর রহিম ৩০*। আবু হায়দার ১/২৯, টিপু সুলতান ১/২২)।

ফল : লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৮ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ : মোহাম্মদ শহীদ (রূপগঞ্জ)।

Share.

Comments are closed.

Exit mobile version