এশিয়ান বাংলা স্পোর্টস : প্রতিনিয়তই ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হতে হয় তাদের। এই বুঝি জেরুজালেম থেকে বোমা উড়ে এসে কেড়ে নিল কারও প্রাণ- এমন শঙ্কায় দিন শুরু হয় তাদের। সেই যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের জনগণের জন্যই সোনালি ট্রফি জিতলেন ফুটবল মাঠের যোদ্ধারা। শুক্রবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে টাইব্রেকারে তাজিকিস্তানকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জেতে ফিলিস্তিন। খেলা শেষে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের হাতে ট্রফি তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী বীরেন শিকদার এমপি, উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় এমপি, বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী এমপি, সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ এমপি, কে স্পোর্টসের কর্ণধার ফাহাদ করিম, বাদল রায়, মহিউদ্দিন আহমেদ মহিসহ অন্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
ফাইনালের মতোই এক ম্যাচ। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে গোলের দেখা নেই। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও নয়। ১২০ মিনিটের খেলা গোলশূন্য থাকায় ম্যাচের ভাগ্য গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেই নতুন চ্যাম্পিয়ন ফিলিস্তিনকে খুঁজে পায় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট। শেষ বাঁশি বাজতেই উল্লাসে মেতে ওঠেন ফিলিস্তিনের ফুটবলাররা। দেশের পতাকা নিয়ে মাঠময় ল্যাপ অব অনার দেন। টাইব্রেকারে ফিলিস্তিনের জোনাথন জরিলা, মোহাম্মদ আলী ভিসাত, মুসা বাতাত ও আবদুল লতিফ গোলের দেখা পেয়েছেন। অন্যদিকে তাজিকিস্তানের হয়ে আবদু গাফারভ, এরগাসেভ জাহাঙ্গীর ও আসরভ গোলের দেখা পেলেও ব্যর্থ হয়েছেন তুরসনভ কমরন ও তাবরেজা। গ্রুপপর্বে দু’দলই দুর্দান্ত খেলে ফাইনালে উঠে এসেছে। তাই শিরোপা নির্ধারণী লড়াই হাড্ডাহাড্ডি হবে, তাতে কোনো সন্দেহ ছিল না। হলও তাই। তবে জেতার আগে হতাশা বেশি ছিল ফিলিস্তিনের। র্যাংকিংয়ে ১০০ নম্বরে থাকা দলটি নির্ধারিত ৯০ এবং অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও গোল করতে পারেনি ১২০ নম্বরে থাকা দশজনের তাজিকিস্তানের বিপক্ষেও।
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ফাইনালে ছিল না বাংলাদেশ। কিন্তু তারপরও যেন মাঠে ছিল লাল-সবুজের দল। কারণ তাজিকিস্তান নেমেছিল সবুজ এবং ফিলিস্তিন খেলে লাল জার্সি পরে। শুধু ছিল না লাল-সবুজ জার্সিধারী বাংলাদেশ। গ্যালারিতে উপস্থিত প্রায় ১৫ হাজার দর্শক ফাইনাল ম্যাচ উপভোগ করলেও স্বাগতিক বাংলাদেশকে না পেয়ে দু’দলকেই সমান তালে সমর্থন দিয়েছেন।
ম্যাচের শুরু থেকেই সমানতালে খেলেছে দু’দল। সাত মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে তাজিকিস্তানের ফরোয়ার্ড জাহাঙ্গীরের শট বারের উপর দিয়ে চলে যায়। তবে এরপর থেকে বেশ কিছুটা সময় আক্রমণ করে তাজিক শিবিরে কাঁপন ধরায় ফিলিস্তিনের খেলোয়াড়রা। ম্যাচের ২৩ মিনিটে ফিলিস্তিনের বিএ রশিদের পাসে বল পেয়ে আবারও বক্সে ঢুকে জোড়ালো শট নেন মুসা। তাজিকিস্তানের গোলকিপার রুস্তম ঝাঁপিয়ে পড়ে কর্নারের বিনিময়ে এ যাত্রায় দলকে রক্ষা করেন। মিনিটদুয়েক পর বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন খালিদ সালেম।
একনজরে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ২০১৮ : চ্যাম্পিয়ন- ফিলিস্তিন (ট্রফি ও ৫০ হাজার ডলার), রানার্সআপ- তাজিকিস্তান (ট্রফি ও ২৫ হাজার ডলার), সেরা খেলোয়াড়- (গোল্ডেন বল) আবদাল লতিফ (ফিলিস্তিন), ম্যান অব দ্য ফাইনাল- রামি হামাদা (ফিলিস্তিন), সর্বোচ্চ গোলদাতা- (গোল্ডেন বুট) তুরসোনভ, কমরুন-২ (তাজিকিস্তান), সেরা গোলকিপার- (গোল্ডেন গ্লাভস) রামি হামাদা (ফিলিস্তিন)